ভিতরে

ব্রাজিল ফুটবলকে আলোকিত করা পাঁচ তরুণ খেলোয়াড় : পেলে থেকে এনড্রিক

ফুটবলে সাফল্য এবং উৎসাহের ক্ষেত্রে ব্রাজিল অতুলনীয়, এমনকি অনেকের কাছে খেলাটি নিজেই ব্রাজিলের জাতীয় দলের সমার্থক।
পাঁচবারের বিশ^কাপ বিজয়ী দলটি সারা বিশে^ ‘‘জোগো বোনিতো” বা সুন্দর খেলার আদর্শের জন্য পরিচিত। একইসাথে যুগে যুগে বিশে^র অন্যতম সেরা খেলোয়াড় জন্ম দেবার জন্যও ব্রাজিলের আলাদা সুনাম রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় ফুটবল বিশ^ শনিবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এমনই এক প্রতিভাকে আবিষ্কার করেছে, ১৭ বছর বয়সী তরুণ এনড্রিককে নিয়ে ব্রাজিল গর্ব করতেই পারে। 
জনপ্রিয় হলুদ জার্সিতে এ পর্যন্ত ব্রাজিলকে আলোকিত করা পাঁচ তরুণের কথা এখানে তুলে ধরা হলো, যে তালিকায় অতি সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে এনড্রিক।
এনড্রিক :
অসাধারণ প্রতিভাবান এ্যাটাকারের জন্মভূমি হিসেবে পরিচিত ব্রাজিল দলে একেবারে নতুন সংযোজন এই এনড্রিক। ওয়েম্বলিতে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়সূচক একমাত্র গোলটি করে তিনি নিজের জাত চিনিয়েছেন। আন্তর্জাতিক পরিসরে এটা এনড্রিকের তৃতীয় ম্যাচ। 
মাত্র ১৭ বছর ৮ মাস ২ দিন বয়সী এনড্রিক এই মাঠে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে কোন ক্লাব বা দেশের হয়ে গোলের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। বদলী বেঞ্চ থেকে উঠে আসার নয় মিনিটের মধ্যে তিনি সেলেসাওদের গোল উপহার দেন। 
আগামী জুলাইয়ে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিতে যাওয়া এনড্রিক ইতোমধ্যেই ক্যারিয়ারে দুটি ব্রাজিলিয়ান সিরি-এ শিরোপা জয় করেছেন। পালমেইরাসের হয়ে মাত্র ১৬ বছর বয়সে পেশাদার ফুটবলে অভিষিক্ত হবার পর থেকেই তাকে দেশের নতুন ‘ওয়ান্ডার বয়’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। 
ব্রাজিলের নতুন কোচ ডোরিভাল জুনিয়র বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে তার দেখানো কারিসমা  ভবিষ্যতেও  অব্যাহত  রাখতে পারলে  ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের পাশাপাশি বিশ^ ফুটবলেও সে একটি গুরুত্বপূর্ণ নামে পরিণত হবে।’
 
পেলে : 
প্রয়াত পেলে ফুটবলের চিরন্তন মাপকাঠি হিসেবে এখনো রয়ে গেছেন যার বিরুদ্ধে সব নতুন ব্রাজিলিয়ান তারকাদের অনিবার্যভাবে তুলনা করা হয়।
মাত্র ১৬ বছর ৮ মাস ১৪ দিন বয়সে আন্তর্জাতিক পরিসরে গোল করে এখনো ব্রাজিলের সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হিসেবে নিজেকে ধরে রেখেছেন। দেশের হয়ে করেছেন ৭৭টি গোল। সেলেসাও জার্সিতে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। 
তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার এখনো বিশ^ ফুটবলে অন্যতম এক কীর্তিতে লেখা আছে। ১৭ বছর বয়সে ১৯৫৮ সালে সুইডেনে প্রথম শি^কাপ জয়ের পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় জুলে রিমে ট্রফি জেতার কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন। 
 
রোনাল্ডো :
১৯৯৪ সালে ব্রাজিলের জার্সি গায়ে অভিষেক হয় রোনাল্ডোর। ১৭ বছর ৭ মাস ১২ দিন বয়সে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে গোল করে দেশের তৃতীয় সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে স্কোরশিটে নাম লেখান। 
১৯৯৮ সালের বিশ^কাপ ফাইনালে হতাশাজনক পরাজয়ের ম্যাচটিতে ম্যাচ শুরুর ঠিক আগে আকস্মিক অসুস্থতায় তিনি খেলতে পারেননি। চার বছর পর দক্ষিণ কোরিয়া/জাপান বিশ^কাপে জার্মানীর বিপক্ষে দ্বিতীয়ার্ধে রোনাল্ডোর দুই গোলে ব্রাজিলের ২-০ গোলের জয় নিশ্চিত হয়। সারা বিশ^জুড়ে তখন রোনাল্ডো বন্দনা ছড়িয়ে পড়ে। ১৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ব্রাজিলের হয় ৯৯ ম্যাচে ৬২ গোল করেছেন।
 
নেইমার :
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১২৮ ম্যাচে ৭৯ গোল করে ব্রাজিলের হয়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়েছেন নেইমার। এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন তিনি । যদিও এখনো বিশ^কাপ শিরোপা স্পর্শ করতে পারেননি  আধুনিক বিশে^র অন্যতম সেরা এই ফুটবল তারকার। ১৮ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অভিষিক্ত হবার পর থেকেই মাঠ ও মাঠের বাইরের নানা ঘটনায় আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন। 
২০১৪ সালে ঘরের মাঠের বিশ^কাপে নেইমারের উপর পুরো দেশের প্রত্যাশার বোঝা ছিল। পাঁচ ম্যাচে চার গোল করে নিজেকে দারুনভাবে প্রমানও করেছিলেন। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে গুরুতর ইনজুরিতে পড়ে মাঠ থেকে ছিটকে যান। এরপর সেমিফাইনালে জার্মানীর কাছে হতাশাজনক ৭-১ গোলের পরাজয় দেখেছেন স্ট্যান্ডে বসে। 
 
আলেক্সান্দ্রে পাতো :
বিশে^র সপ্তম বৃহত্তম দেশটির ফুটবলীয় প্রত্যাশার চাপ অনেক সময়ই তরুণদের জন্য বহন কঠিন হয়ে পড়ে। এর অন্যতম উদাহরন উদীয়মান আলেক্সান্দ্রে পাতো। ২০০৮ সালে সুইডেনের বিপক্ষে বদলী বেঞ্চ থেকে উঠে এসে ১৮ বছর বয়সী অভিষিক্ত পাতো যখন জয়সূচক গোলটি করেছিলেন তখন অনেকেই তাকে ৫০ বছর আগে বিশ^কাপ জয়ে ব্রাজিলকে নেতৃত্ব দেয়া টিনএজার পেলের সাথে তার তুলনা করার সাহস দেখিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই সেন্টার ফরোয়ার্ড আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি। দেশের হয়ে মাত্র ২৭ ম্যাচ খেলা পাতো ২৪ বছর বয়সে ২০১৩ সালে সর্বশেষ জাতীয় দলে খেলেছেন। এরপর ফর্মহীনতায় আর দলে আসতে পারেননি।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

উত্তর দিন

মন্তব্য করুন

মাগুরায় পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে

অবসর ভেঙ্গে ফিরছেন আমির