ভিতরে

দিনাজপুরে তাপদাহের কারণে লিচু বাগানের গুটি রক্ষায় সেচ দেওয়া হচ্ছে

জেলায় প্রচন্ড তাপদাহের কারণে মৌসুমের লিচু গাছের ফলের গুটি রক্ষায় বাগান গুলোতো সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে পানি দেওয়া হচ্ছে। দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান মিয়া জানান, তিনি জেলার লিচু বাগান গুলোর বর্তমান অবস্থা পরিদর্শন করেছেন। প্রচন্ড তাপদাহের কারণে লিচু গাছের গুটিগুলো কিছুটা ঝরে পড়তে শুরু করেছে। লিচুর গুটি রক্ষায় লিচু বাগান মালিকদের প্রত্যেকটি বাগানে সেচ যন্ত্র স্থাপনের পরামর্শ  দেওয়া হয়েছে। বাগান মালিকেরা গতকাল সোমবার থেকেই লিচু গাছের গুটি রক্ষায় বাগানের গাছে সেচ দেওয়া শুরু করেছে। তিনি জানান, দিনাজপুর জেলা লিচু চাষের জন্য প্রসিদ্ধ জেলা হিসেবে সারাদেশে পরিচিতি রয়েছে। গত দু’বছর থেকে এ জেলার সুস্বাদু লিচু দেশের বাইরে রপ্তানি করা হচ্ছে। সে কারণে লিচুর বাগানের ফলের  সুরক্ষায় এবার ভয়াবহ তাপদাহে প্রাকৃতিক দুর্যোগে লিচু গাছের গুটি ঝরে পড়া রক্ষায় বাগান মালিকদের কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। কৃষি বিভাগের ফল নিয়ে কাজ করে এ দায়িত্বে নিয়োজিত মাঠ কর্মীরা সার্বক্ষণিক লিচুবাগানের মালিকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে তাদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন।লিচু গাছের পানির শূন্যতা দূর করতে প্রতিদিন সেচ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বাগান মালিকদের। এজন্য গ্রামে এখন সব স্থানে বিদ্যুৎ চালিত মটর  রয়েছে। ফলে সহজেই লিচু বাগান গুলোতে সেচ কাজে সুবিধা পাচ্ছি বাগান মালিকেরা।
দিনাজপুর বিরল উপজেলার মাধববাটী গ্রামের লিচু বাগানের মালিক মতিউর রহমান জানান, মৌসুমের শুরুতে প্রচুর মুকুল আসে  লিচু গাছে। প্রতিটি গাছে মুকুলে পরিপূর্ণ ছিল। কিন্তু গুটি আসার সময় থেকে অব্যাহত তাপদাহে গাছের মকুল ও গুটি শুকিয়ে তামাটে রং ধারণ করেছে। ফলে ঝরে পড়ছে গুটি গুলো। অর্ধেকে নেমে এসেছে লিচুর গুটি। ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন লিচু চাষিরা।  
তিনি সহ বেশ কিছু লিচু বাগানের মালিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী, নিয়মিত সেচ দিয়ে লিচুর গুটি  রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।  তারা বলেন, সেচ দেওয়ার মাধ্যমিক গুটি রক্ষা করার আশা করছেন।
কৃষি বিভাগের সূত্রটি জানায়, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় লিচু  বাগান গুলোতে এবার মাদ্রাজি,বোম্বাই, কাঁঠালি,চায়না, চায়না থ্রী,আর বেদানার প্রচুর মুকুল এসেছিল।বৈশাখে তীব্র তাপদাহ আর অনাবৃষ্টির কারণে পুড়ে যাচ্ছে গাছের মুকুল।  কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী, নিয়মিত সেচ দিয়েও রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বকুল আসার পর থেকে বাগানে স্প্রে সহ অন্যান্য পরিচর্যা চলমান রয়েছে। কিছুটা ক্ষতি হলেও সেচ দেওয়ার পর স্বাভাবিক অবস্থায় লিচুর গুটি রক্ষা করা যাবে বলে কৃষি বিভাগ মনে করছে।
দিনাজপুর আঞ্চলিক কৃষি অধিদপ্তরের-অতিরিক্ত পরিচালক আনিসুজ্জামান জানান, এবারে এটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ  মোকাবিলায় কৃষি বিভাগ তৎপর  রয়েছে। যেটুকু লিচু গুটি পড়ে গেছে বাকিটা রক্ষায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বাগান মালিকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে কৃষির ভাগ সব ধরনের দায়িত্ব চালিয়ে যাচ্ছে।
সূত্রটি জানায়, চলতি বছর দিনাজপুর জেলার ১৩ উপজেলায় ৫ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। উংপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ৪৫ হাজার মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে । গুরুত্ব সহকারে লিচুর ফলন সুরক্ষায় বাগান মালিকদের সাথে কৃষি বিভাগ সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

উত্তর দিন

মন্তব্য করুন

ভোলায় অসহায় মানুষকে কোস্টগার্ডের স্বাস্থ্য সেবা

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ধানে সমৃদ্ধির হাতছানি