শক্তিশালী ভারতকে রুখে দিল ১০ জনের বাংলাদেশ

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবলে শক্তিশালী ভারতকে রুখে দিল ১০ জনের বাংলাদেশ দল। আজ মালদ্বীপের রাজধানী মালের আন্তর্জাতিক ফুটবল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত লিগ পর্বে নিজেদের  দ্বিতীয় ম্যাচে ইয়াসিন আরাফাতের অসাধারণ হেডে ভারতের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছে পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ।
ফিফা র‌্যাংকিং ও ফর্মের দিক থেকে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক দূর এগিয়ে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তারপরও তাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আত্মবিশ্বাসী ছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। আর বেঙ্গল টাইগারদের এই আত্মবিশ্বাস আরো বেড়ে গিয়েছিল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়।   
প্রথমার্ধে ভারতের তারকা ফুটবলার সুনীল ছেত্রির গোলে পিছিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধে ১০ জনে পরিণত হওয়ার পরও পাল্লা দিয়ে লড়াই করে গেছে এবং সফলও হয়েছে। ব্লু টাইগারদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে মুল্যবান একটি পয়েন্ট।
এই জয়ে লিগ পর্বের দুই ম্যাচ থেকে চার পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। আর একটি মাত্র ম্যাচ খেলে ভারতের সংগ্রহ এক পয়েন্ট।
মালদ্বীপের জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়ামে আজ প্রথমার্ধে আধিপত্য বজায় রেখেছিল ভারত। বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল তারা। ৬৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রন করেছে উপমহাদেশের বৃহত্তম দেশটি। ওই সময় তারা চারবার গোলপোস্টে শট নিয়েছে। বিপরীতে বাংলাদেশ একবার গোলপোস্টে শট নিতে সক্ষম হয়েছে।
তবে ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে প্রথম গোলের সুযোগটি সৃস্টি করে বাংলাদেশ। জামাল ভুঁইয়ার পাস থেকে বল পেয়ে ইয়াসিন আরাফাতের নেয়া দূরপাল্লার শটটি পোস্টের বাইরে চলে যায়। ২১ মিনিটে কর্নার থেকে পাওয়া গোলের সুযোগও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় লাল সুবজ জার্সির খেলোয়াড়রা। ২৫ মিনিটে গোলের আরো একটি দারুন সুযোগ হাতছাড়া করে তারা। অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়ার কাছ থেকে ডি বক্সে বল পেয়ে বিপলু আহমেদের শট লক্ষ্যভ্রস্ট হয়।
পরের মিনিটেই গোলের দেখা পেয়ে যায় ভারত। ২৬ মিনিটে উদান্তা সিং এর ডান প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে দ্রুততার সঙ্গে বাংলাদেশ সিমানায় ঢুকে গিয়ে অধিনায়ক ছেত্রিকে পাস দিলে চলন্ত বল শটের সাহায্যে জালে জড়িয়ে দেন তিনি।
বিরতিতে যাবার আগ মুহুর্তে গোল পরিশোধের সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সাদ উদ্দিনের যোগান থেকে পাওয়া বলের সদ্ব্যবহার করতে ব্যর্থ হন বিপলু।
বিরতি থেকে ফিরেই সমতায় ফেরার লক্ষ্যে পরপর কয়েকটি আক্রমন রচনা করে বাংলাদেশ। কিন্তু দক্ষ ফিনিশারের অভাবে বার বার ব্যর্থ হতে হয় অস্কার ব্রুজনের শিষ্যদের। ম্যাচের ৫৩ মিনিটে দায়িত্বরত রেফারি বিতর্কিত লাল কার্ড দেখিয়ে ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষকে মাঠছাড়া করলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় বাংলাদেশ।
তারপরও দমে না গিয়ে দ্বিগুন উৎমাহে ভারতীয়দের উপর ঝাপিয়ে পড়ে ১০ জনের দলটি। এর সুফল আসে ৭৩ মিনিটে।  কর্নার থেকে জামাল ভুঁইয়ার ক্রসের বল জটলায় থাকা ভারতীয় ডিফেন্ডারদের মাথায় লেগে ভেসে আসে পেছনে ওত পেতে থাকা ইয়াসিন আরাফাতের কাছে। চলন্ত বলটি ডাইভিং হেডে জালে জড়িয়ে দেন তিনি। ফলে ১-১ গোলের সমতা ফিরে আসে ম্যাচে।
এরপর ১০ জনের দলের বিপক্ষে গোল করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে ব্লু টাইগাররা। কিন্তু লাল সবুজের রক্ষনভাগের দৃঢ়তায় সফল হতে পারেনি তারা। ফলে পয়েন্ট ভাগাভাগিতেই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ ও ভারত।          
অসাধারণ পারফর্মেন্সের কারণে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন ইয়াসিন আরাফাত।   
বাংলাদেশ দল: ইয়াসিন আরাফাত, তপু বর্মন, জামাল ভুঁইয়া, বিপলু আহমেদ, মতিন মিয়া, বিশ্বনাথ ঘোষ, আনিসুর রহমান, তারিক রায়হান কাজী, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, রাকিব হোসেন ও সাদ উদ্দিন।
ভারত – গুরপ্রীত সিংহ সাধু, রাহুল ভেকে, সুভাষীশ বসু, কোনশাম (Konsham),  অনিরুদ্ধ থাপা, গ্লান মার্টিনস, মনভীর সিং, সুনীল ছেত্রি, উদান্তা সিং, লিস্টন কোলাকো ও প্রীতম কোটাল।