ভিতরে

গোপালগঞ্জে আউশ ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১১ হাজার ১৬ মেট্রিক টন

॥ মনোজ কুমার সাহা॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ১২ এপ্রিল, ২০২৪ : গোপালগঞ্জে আউশ ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১ হাজার ১৬ মেট্রিক টন।
এক ফসলী জমি অধ্যুষিত এই জেলায় ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৩ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এখানে ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১ হাজার ১৬ মেট্রিক টন।
জেলায় আউশ ধানের চাষাবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে  ৫ হাজার প্রন্তিক কৃষককে প্রণোদনার আউশ ধানের বীজ ও সার বিতরণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এ কর্মসূচীর আওতায় কৃষক ৫ কেজি করে উচ্চ ফলনশীল আউশ ধানের বীজ এবং ১০ কেজি করে ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার পেয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পরিচালক আ. কাদের সরদার বলেন, জেলার ৫ উপজেলার ৫ হাজার কৃষককে প্রণোদনার বীজ সার দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ১ হাজার, কোটালীপাড়া উপজেলায় ১১০০, টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৯০০, কাশিয়ানী উপজেলায় ১০০০  এবং মুকসুদপুরে ১০০০ হাজার কৃষক প্রণোদনার এই বীজ ও সার পেয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, গোপালগঞ্জ জেলায় আউশ আবাদের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৪শ’ হেক্টরে। এরমধ্যে  সবচেয়ে বেশি উফশী জাতের আউশ ধান ২ হাজার ৭২০  হেক্টরে,  স্থানীয় জাতের আউশ ৬২০ হেক্টওে এবং  মাত্র ৬০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড আউশ ধান আবাদেও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। আশাকরা হচ্ছে এখান থেকে কৃষক অন্তত ১১ হাজার ১৬ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন করতে পারেন। এতে  গোপালগঞ্জে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। কৃষক লাভবান হবেন।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের কৃষক জালাল শরীফ বলেন, আমাদের প্রধান ফসল বোরো ধান ও পাট। আমাদের এই জেলায় আউশের আবাদ নেই বললেই চলে । তারপরও কৃষি বিভাগের উৎসাহে প্রণোদনার বীজ ও সার পেয়ে ২ বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল আউশ ধানের আবাদ করছি। গত বছর আউশের বাম্পার ফলন পেয়েছিলাম। সেই আশায় এ বছরও আউশের আবাদ করতে যাচ্ছি।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার বলেন, আমরা কৃষকের এক ফসলী জমিকে দুই ফসলী জমি ও দুই ফসলীকে ৩ ফসলী জমিতে রূপান্তর করেছি। এই কারণে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় আউশের আবাদে কৃষকের নজর পড়েছে। আমরা কৃষকের আয় দ্বিগুন করে দিতে চাই। তাই তাদের দিয়ে আমরা কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করছি। এতে এক দিকে কৃষক অধিক ফসল পাচ্ছেন। অন্যদিকে বাড়তি ফসল বিক্রি করে তারা লাভবান হচ্ছেন। আউশ ধান তাদের বাড়তি আয়ের সুযোগ করে দিচ্ছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা গ্রামের কৃষক শফিক সুন্সি বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আমাদের দিয়ে একই জমিতে বছরে ৩ থেকে ৪টি ফসল করাচ্ছে।  এতে আমাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। পরিবার পরিজন নিয়ে বেশ ভাল আছি। আগে কখনো আউশ ধান আবাদ করিনি। এই সময় জমি পতিত পড়ে থাকত। এই বছর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উৎসাহ, সহযোগিতা ও পরামর্শে ক্ষেত থেকে বোরো ধান কেটে আউশ ধানের আবাদ  করব।
উপজেলার গোবরা ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পার্বতী বৈরাগী বলেন, আমরা ব্লকে বোরো ধান কাটার পর আউশের চাষাবাদ হবে। এ ব্যাপারে আমরা কৃষককে বীজতলা থেকে শুরু করে ধান রোপন পর্যন্ত সব ধরনের সহযোগিতা করব।  উৎসবের আমেজে গোবরা ইউনিয়নের ১২৫ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের আবাদ হবে। এখান থেকে কৃষক অন্তত ৪০৫ মেট্রিক টন আউশের ফলন পাবেন। যার বাজার দর প্রায় সাড়ে ৬ লাখ  টাকা। আউশ ধান গোপালগঞ্জের কৃষিকে আরো সমৃদ্ধ করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

উত্তর দিন

মন্তব্য করুন

পাকিস্তান সিরিজ থেকে ছিটকে গেলেন মিলনে-অ্যালেন

ইসরায়েলে মার্কিন কুটনীতিকদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা