ভিতরে

শরীয়তপুরে ৮০ শতাংশ বোরো ধান কৃষকের গোলায় উঠেছে

॥ এস এম মজিবুর রহমান ॥
শরীয়তপুর, ১৫ মে, ২০২৩ : জেলার ২৫ হাজার ১শ’ ৯০ হেক্টর বোরোর আশি শতাংশ ধান নিরাপদে কৃষকের গোলায় উঠেছে। বাকি ২০ শতাংশ ধানও আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কৃষকের গোলায় উঠে যাবে বলে ধারনা করছে কৃষি বিভাগ ও কৃষক। এবার বোরো মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আবাদও হয়েছে বেশ ভালো। বিঘায় সর্বোচ্চ ফলন হয়েছে ২৮ মণ পর্যন্ত। এবার ধান কাটার সময় বৃষ্টিপাতসহ কোন সসম্যা না হওয়ায় অনেক সহজেই কৃষক গোলায় ধান তুলতে পেরে বেশ খুশী। এবার জেলার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ২৫ হাজার ১শ’ ৯০ হেক্টরে বোরো আবাদ হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোপণ থেকে ফলন পর্যন্ত এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বোরোর ভালো ফলন হয়েছে। জাত ভেদে বিঘা প্রতি ২৩ থেকে ২৮ মণ পর্যন্ত ফলন হয়েছে। আবাদকৃত ধানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের মধ্যে রয়েছে ব্রি-ধান ২৯, ৫৮, ৬২, ৬৩ এবং ৭৪, বিনা-১০, ১৪, হাইব্রিড জাতের এস এলএইচ-৮ এবং স্থানীয় জাতের ধানের আবাদ করেছেন কৃষক। তবে জমির উপযোগিতা অনুযায়ী উফশী জাতের ব্রি ধান ২৯, ৫৮, ৬৭, ৭৪, ৮১, ৮৯, ৯২ জাতের ধান  ফলন বেশী হওয়ায় এ জাতের ধানের আবাদ হয়েছে বেশি। মোটা জাতের ধান বিঘায় ২৪-২৬ মণ, মাঝারি জাতের ধান ২০-২২ মণ, চিকন জাতের ধান ১৮-২০ মণ ও সুগন্ধি জাতের ধান ১৬-১৮ মণ পর্যন্ত ফলন পেয়েছে কৃষক। প্রতি বিঘায় কৃষকের আবাদে খরচ হয়েছে ১২-১৫ হাজার টাকা। জমি থেকে মাড়াই শেষে ধানের প্রকার ভেদে প্রতিমণ ধান ৮শ’ ৫০ থেকে ৯শ’ ৫০ টাকা দরে পাইকাররা কিনে নিচ্ছেন।
শরীয়তপুর সদর উপজেলার কাগদী গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম খান বলেন, আমি পাঁচ বিঘা জমিতে  হাইব্রিড জাতের এসএলএইচ-৮ জাতের ধানের আবাদ করে ১শ’ ৪০ মণ ফলন পেয়েছি। আামি এবার ধান আবাদ করে বেশ লাভবান হয়েছি।
নড়িয়া উপজেলার মোক্তারেরচর ইউনিয়নের আমির হোসেন ফকির বলেন, আমি এ মৌসুমে ৫বিঘা জমিতে বিনা ১৪ জাতের ও ১২ বিঘা জমিতে ব্রি ধান ২৯ আবাদ করেছি। প্রতি বিঘায় আমার খরচ হয়েছে ১৩ হাজার টাকা। জমি থেকে ধান কেটে মাড়াই করেই প্রতি মণ ধান সাড়ে ৮শ’ থেকে ৯শ’ টাকা মণ দরে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছি।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক ড. রবীআহ নূর আহমেদ বলেন, এ বছর জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২৪ হাজার ১শ’ ৫০ হেক্টর থাকলেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ২৫ হাজার ১শ’ ৯০ হেক্টরে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে শরীয়তপুর সদর উপজেলায় ৫ হাজার ৪শ’ ৭৪ হেক্টরে। আমরা আশা করছি জেলায় এবার ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ৭শ’ ৫০ মেট্টিক টন ধানের ফলন পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশ জমির ধান কৃষকের গোলায় উঠেছে। আশা করছি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাকি ধানও কৃষকের গোলায় উঠে যাবে।
জেলা প্রশাসক মো: পারভেজ হাসান বাসস’কে বলেন, ঘুর্ণিঝড় মোখা’র প্রভাবের কথা মাথায় রেখে আমরা কৃষি বিভাগের সাথে সমন্বয় করে নিরাপদে কৃষকের গোলায় বোরোর ফলন তুলে দিতে সতর্কবার্তা ব্যাপক প্রচারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। দ্রুত ধান কাটার জন্য কম্বাইন্ড হারভেস্টার ব্যবহারও করা হয়েছে। ফলশ্রুতিতে ঝঁকিমুক্তভাবেই শরীয়তপুরের বোরো চাষিরা এবার নিরাপদে তাদের ফলন ঘরে তুলতে পারছেন।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে কোন প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে না : আইসিটি প্রতিমন্ত্রী

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনার চরে ভুট্টার বাম্পার ফলন