ভিতরে

আগামী মাস থেকে এত কষ্ট থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী

আগামী মাস থেকে বিদ্যুৎ-জ্বালানি নিয়ে এতটা কষ্ট করতে হবে না বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।শনিবার (১৯ নভেম্বর) গণভবনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় তিনি এ কথা বলেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কথা ছিল সব ঘরে ঘরে আলো জ্বালবো। আমরা প্রত্যেক ঘরে বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হয়েছি। এখন এই ইউক্রেনের যুদ্ধের পর যেহেতু তেল কিনতে অসুবিধা হচ্ছে, গ্যাস আনতে অসুবিধা হচ্ছে আর শুধু আমাদের দেশ না, ইংল্যান্ড, আমেরিকা, জার্মানি সব জায়গায়; তারাই তো জ্বালানি সাশ্রয়ের দিকে নজর দিচ্ছে। তারা নিজেরাই তো হিমশিম খাচ্ছে। সেকারণেও কিছু দিনের জন্য আমাদের কষ্ট পেতে হয়েছে। ইনশাল্লাহ হয়তো আগামী মাস থেকে এত কষ্ট আর থাকবে না।সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারপরও আমি বলবো, তেল-পানি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে। মিতব্যয়ী হতে হবে। কারণ সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। তার প্রভাব থেকে আমরা মুক্ত না।সবাইকে উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আহ্বান করেছি, আমাদের যেহেতু জমি আছে, ১ ইঞ্চি জমি যাতে খালি না থাকে। যে যা পারেন উৎপাদন করেন। ছাদ বাগান করেন, জমিতে ফসল ফলান। কারণ সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক অবস্থা কিন্তু খুবই খারাপ। খুবই ভয়ানক অবস্থা। সেখানে আমরা যে এখনো চলছি, আমাদের নিজেদের উৎপাদন নিজেরা বাড়াতে পারলে আমাদের কোনোদিন দুর্ভিক্ষের আঁচ বাংলাদেশে লাগবে না। এটা হলো বাস্তবতা। আমাদেরটা আমাদেরই করে নিতে হবে। ’

দেশে প্রয়োজনের চেয়ে উৎপাদন বেশি জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা যেমন উপায় করছি, খরচা করছি। আমরা খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়েছি। যেটা আমাদের প্রয়োজন তার থেকে বেশি উৎপাদন করছি। তারপরও আমরা আরও খাদ্য সব সময় মজুদ রাখি আপৎকালের জন্য। যেন আমার দেশের মানুষের কোনো রকম কষ্ট না হয়।মানুষকে বিনামূল্যে এবং কমমূল্যে খাদ্য সরবরাহ করার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বেশি দাম দিয়ে সব জিনিস কিনে নিয়ে এসে কম দামে দিচ্ছি, যাতে কোনো মানুষ খাদ্যে কষ্ট না পায়। টিসিবির কার্ডের মাধ্যমে চাল, ডাল, তেল, চিনি ভর্তুকিতে দিচ্ছি। ১ কোটি মানুষ এটা পাচ্ছে। প্রায় ৫০ লাখ মানুষকে আমরা ১৫ টাকায় দিচ্ছি আর ৫০ লাখ পরিবার পাচ্ছে বিনা পয়সায়। এখানে যারা বয়োবৃদ্ধ তাদের দিচ্ছি।শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘যারা গৃহহীন-ভূমিহীন তাদের ঘর করে দিচ্ছি। আমরা একটি হিসাব নিয়েছি বাংলাদেশে কত গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষ আছে। জাতির পিতা এই প্রকল্পটা হাতে নিয়েছিলেন। এখন খুব কম লোক আছে। আগামীতে আরও ঘর আমরা দেবো। যাদের ঠিকানা ছিল না, এ ধরনের যত মানুষ পাচ্ছি আমরা খুঁজে খুঁজে বের করে আমরা বিনা পয়সায় ঘর দিচ্ছি।তিনি বলেন, ‘কিছু দিন আগে বন্যা হয়ে গেল। নদী ভাঙনে যারা ভূমিহীন আমরা তাদেরও ঘর করে দেবো।আওয়ামী লীগ মানুষের কল্যাণে কাজ করে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাজ তো সব মানুষের কল্যাণে। আওয়ামী লীগ জনগণের কল্যাণে কাজ করে। এখানে আমরা নিজেদের ভাগ্য গড়তে তো আসিনি। গড়ছি বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য। আজকে বিনা পয়সায় বই দিচ্ছি। আমরা বৃত্তি-উপবৃত্তি, মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি পুষ্টি নিরাপত্তা দিচ্ছি। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ৩০ প্রকার ওষুধ বিনা পয়সায় দিয়ে দিচ্ছি। প্রাথমিক চিকিৎসা সেখানে পাচ্ছে। কবে কে করেছে বাংলাদেশের মানুষের জন্য এত কাজ? এতবার তো ক্ষমতায় ছিল সবাই। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া ছিল, মানুষের কল্যাণে তারা তো কখনো করেনি! করেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগই করে।

বিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সারা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত, খালি চোখে দেখে না আমাদের দেশের কিছু মানুষ। তাদের কিছুই ভালো লাগে না। এই গণতান্ত্রিক সরকার তাদের ভালো লাগবে না। অগণতান্ত্রিক কিছু হলে তাদের মূল্যটা বাড়ে। এটাই তারা ভাবে। বাংলাদেশে সেই খেলাই খেলতে চায় তারা। বারবার তো সেই খেলা চলেছে দীর্ঘ দিন।তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনের পরে একটানা গণতান্ত্রিক ধারা আছে বলেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্বে আবার সেই মর্যাদা পেয়েছে। এর আগে বাংলাদেশের নাম শুনলে মনে করতে দুর্ভিক্ষ-ঝড়-দারিদ্র্য। এভাবেই ছোট চোখে দেখতো। এখন তো আর সেই ছোট চোখে আর বাংলাদেশকে দেখতে পারে না! কারণ আমরা বিজয়ী জাতি। জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করেই চলবো আমরা। সেটাই করছি।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি বিভাগের শতবর্ষ উদযাপন

কবি সুফিয়া কামালের জীবনাদর্শ ও সাহিত্যকর্ম তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করবে : রাষ্ট্রপতি