ভিতরে

জেলহত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা আজও পলাতক

জেলহত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা আজও পলাতক
জেলহত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা আজও পলাতক

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী ও জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়৷ ঘটনার পর ৪৭ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও পলাতক সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা।১৯৭৫ সালের ৪ নভেম্বর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় লালবাগ থানায় মামলা করেন তৎকালীন ডিআইজি (প্রিজনস) কাজী আবদুল আউয়াল৷ কিন্তু মামলার বিচার প্রক্রিয়া ১ বছর বন্ধ রাখা হয়েছিল৷ পরে ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে জেলহত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়া চালু করে আওয়ামী লীগ৷ইতোমধ্যে অবশ্য মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ার তিনটি ধাপই সম্পন্ন হয়েছে। বিচারে মামলার ১১ আসামির মধ্যে ৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে আজও পলাতক ১০ আসামি। পাঁচ আসামির অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— বহিষ্কৃত সেনাসদস্য রিসালদার মোসলেহ উদ্দীন, দফাদার মারফত আলী শাহ ও দফাদার আবুল হাশেম মৃধা।যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— ক্যাপ্টেন (অব.) কিসমত হাশেম, ক্যাপ্টেন (অব.) নাজমূল হোসেন আনসার, কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশীদ, লে. কর্নেল (অব.) শরিফুল হক ডালিম, ক্যাপ্টেন (অব.) এমবি নূর চৌধুরী, ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদ, লে. কর্নেল (অব.) এএম রাশেদ চৌধুরী ও মেজর (অব.) আহম্মদ শরিফুল হোসেন।

সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের মধ্যে মাত্র দুজনের অবস্থানের ব্যাপারে সরকারের কাছে তথ্য আছে। তাদের মধ্যে কর্নেল (অব.) এম বি নূর চৌধুরী কানাডা এবং লে. কর্নেল (অব.) এ এম রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকর করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে।এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা এবং জাতীর চার নেতা হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। রায় কার্যকরও হচ্ছে। তবে বিদেশে পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকরের চেষ্টা চলছে।জেলহত্যা মামলার বিচারকাজ ছয় বছরের বেশি সময় ধরে চলে৷ ১৯৯৮ সালের ২০ অক্টোবর ২০ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি৷ এরপর ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর হত্যাকাণ্ডের ২৯ বছর পর রায় দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত।

২০০৮ সালে বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে সৈয়দ ফারুক রহমান, শাহরিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদা ও এ কেএম মহিউদ্দিনকে খালাস দেন এবং আট আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট৷ কিন্তু ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় এই চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়৷ এ ছাড়া ২০২০ সালের ১১ এপ্রিল রাতে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আবদুল মাজেদেরও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, যিনি জেল হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত।এদিকে, ২০০৮ সালের ২৮ আগস্ট অবশ্য শুধু রিসালদার মোসলেম উদ্দিনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুইজনকে খালাস দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। কিন্তু ২০০৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুইজনের খালাসে হাইকোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ৷২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল হাইকোর্টে দেওয়া খালাসের রায় বাতিল করে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির সাজা বহাল রাখেন সাবেক প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। ২০১৫ সালের ১ ডিসেম্বর এ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

দিল্লিতে বায়ুদূষণ, স্কুল বন্ধের আবেদন

দিল্লিতে বায়ুদূষণ, স্কুল বন্ধের আবেদন

শিগগিরই সমন্বয় হবে সয়াবিন তেলের দাম : বাণিজ্যমন্ত্রী

শিগগিরই সমন্বয় হবে সয়াবিন তেলের দাম : বাণিজ্যমন্ত্রী