এ বছরেই বাস রুটের প্রথম পাইলটিং শেষ করার বিষয়ে আশাবাদী ডিএসসিসি মেয়র

এ বছরের মধ্যে বাস রুট রেশনালাইজেশনের প্রস্তাবিত ঘাটারচর হতে কাঁচপুর পর্যন্ত বাস রুটের প্রথম পাইলটিং শেষ করার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
আজ নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরানো এবং যানজট নিরসনে গঠিত বাস রুট রেশনালাইজেশন বিষয়ক কমিটির ১৬তম সভা শেষে সাংবাদিকদেরকে এ তথ্য জানান ডিএসসিসি মেয়র ও বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
মেয়র বলেন, ‘আমরা আশাবাদী, বর্তমান গতিতে যদি আগাতে পারি, তবে এ বছরের মধ্যেই পাইলটিংটা শেষ করতে পারব। এই পাইলটিংটা শেষ করার মাধ্যমে প্রথম ধাপটা এগিয়ে গেলেই বাকী রুটগুলো আমরা এই রুটের সাথে সন্নিবেশ করতে পারব বলে আশাবাদী। সুতরাং আমরা মনে করছি যে, আমরা সঠিক পথেই রয়েছি। যাত্রাপথ আমাদের মসৃণ না। যাত্রাপথ অনেক সংকীর্ণ, অনেক সমস্যা রয়েছে। তবে ধীরে ধীরে আমাদের যাত্রা পথে এগিয়ে চলেছি।’
ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত পাইলটের বাস ভাড়া নির্ধারণের বিষয়টি বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) ওপর অর্পিত ছিল এবং তারা সেটা সম্পন্ন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিআরটিএ এরইমাঝে প্রস্তাবিত রুটের ভাড়া প্রতি কিলোমিটার ২টাকা ২০ পয়সা হারে নির্ধারণ করে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এখন এতে মন্ত্রণালয়ের সম্মতি লাগবে, অনুমোদন লাগবে। আশা করছি, যেহেতু বিআরটিএ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে মন্ত্রণালয়ও এটা নির্ধারণ করে দেবে।’
ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘আমরা ১ এপ্রিল থেকে শুরু করতে পারব বলে আশা করছি। বাসগুলো মেরামত করতে হবে। প্রক্রিয়াগত কাজগুলো আশা করছি সম্পন্ন করতে পারব। এরই মাঝে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সহজ শর্তে এবং সূদে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছি। যেগুলো বাস মালিকদের দেয়া হবে, যাতে তারা এই কার্যক্রম করতে পারে। এরই মাঝে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর মৌখিকভাবে সম্মতি দিয়েছেন। সরকার যথাশিগগির সম্ভব সেটা করে দেবেন বলে আশাবাদী।’’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাস মেরামত কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয়তো একটু সময় লাগতে পারে। এটা বাস মালিকদের ওপর এবং বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা কত তাড়াতাড়ি পাওয়া যায়, সেটার ওপর নির্ভর করবে। তবে প্রক্রিয়াগতভাবে এখনো আশাবাদী যে, এপ্রিল নাগাদ এই বিষয়টা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।’
ডিএসসিসি মেয়র সাংবাদিকদের জানান, ‘এই রুটে যেসব জায়গায় বাস-বে হবে, যাত্রী ছাউনি হবে সেই জায়গাগুলো নির্ধারণ করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। যেসব জায়গায় বাস-বে এর জায়গা নির্ধারণ হয়েছে, আগামী এক মাসের মধ্যেই দরপত্র কার্যক্রম সম্পন্ন করে নির্মাণ কাজ শেষ করার দিকে এগিয়ে যাবো।’
ঘাটারচরে অস্থায়ী বাস রাখার স্থান নির্ধারণ প্রসঙ্গে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ইতোমধ্যে উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং অন্যান্য কর্তৃপক্ষ সমন্বয় করে দু’টি প্রস্তাবনা নির্ধারণ করেছে। তা পর্যালোচনা করা হবে এবং সেটা নির্দিষ্ট হলে সেই অস্থায়ী বাস রাখার জায়গা নির্মাণ কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে।
তিনি বলেন, যে রুট নির্ধারণ করা হয়েছে সেই রুটের জন্য একটি যৌথ মূলধনী চুক্তি তথা জয়েন্ট ভেনচার এগ্রিম্যান্টের জন্য আগামী সাত দিনের মধ্যে খসড়া প্রণয়ন করা হবে। খসড়া প্রণীত হলে এরপর সংশ্লিষ্ট বাস মালিকদের সাথে বসে কোনো শর্ত সংযোজন-বিয়োজন করতে হয় সে বিষয় পর্যালোচনা করে তা সমন্বয় করা হবে এবং আগামী সভায় তা প্রতিবেদন আকারে পেশ করা হবে। সেটার প্রেক্ষিতে এরপর আমরা ভবিষ্যৎ কার্যক্রম হাতে নেবো।
এ প্রসঙ্গে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, বর্তমানে এই রুটে দু’টি প্রতিষ্ঠানের বাস চলছে। সবমিলিয়ে ১৫৫টি বাস এই রুটে চলাচল করছে। যে যৌথ মূলধনী চুক্তি করা হবে, সেটা এই দু’টি প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে একটি প্রতিষ্ঠানের আওতায় এনে এই কার্যক্রম নেয়া হবে।
সভায় ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমানসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউর রহমান সভায় উপস্থিত ছিলেন।