ভিতরে

দেশ এখন শুধু মধ্যম আয়ের নয়, উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে : তোফায়েল আহমেদ

জাতীয় সংসদে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের প্রবীন সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন শুধু মধ্যম আয়ের নয়, উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ বাস্তব। এর সুফল এখন জনগণ ভোগ করে জীবনমানের উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছে।
গত ৩ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংসদে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন। গত ৭ জুন সংসদে চলতি অর্থ বছরের সম্পূরক বাজেট পাস করা হয়।
আজ বাজেটের ওপর অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন সরকারি দলের সিনিয়র সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, বেগম মতিয়া চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম শিমুল, এম এ মতিন, আনোয়ার হোসেন হেলাল, কাজিম উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা, রুস্তম আলী ফরাজী, বিএনপির জাহিদুর রহমান ও গণফোরামের মোকাব্বির খান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার ভয়াবহতা দক্ষতার সাথে মোকাবেলা করে দেশের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রা সচল রাখায় দেশে-বিদেশে শেখ হাসিনা প্রশংসিত হয়েছেন। তিনি প্রস্তাবিত বাজেটকে করোনাকালের সাহসী ও বাস্তবসম্মত বাজেট বলে উল্লেখ করেন।
তিনি আলোচনার সময় এ জুন মাসকে বাঙালির জাতীয় জীবনে একটা স্মরণীয় মাস উল্লেখ করে বলেন, এ মাসেই এ উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল। দীর্ঘ আন্দোলন আর আত্মত্যাগের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এ দলই বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে আসে। আর এ দলের নেতৃত্বে আজ দেশ উন্নত-সমৃদ্ধ হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি জুন মাসে তার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদানের কথাও বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এ দলে তিনি বিগত ৫০ বছর ধরে রয়েছেন।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম প্রধানমন্ত্রীর দক্ষতা, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বে সফলভাবে করোনা মোকাবেলা কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, করোনাকালে শেখ হাসিনা সব ক্ষেত্রে প্রণোদনা দিয়ে অর্থনীতির চাকা যেমন সচল রেখেছেন তেমনি মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বাজেটকে বাস্তবসম্মত এবং করোনা মোকাবেলা উপযোগি উল্লেখ করে বলেন, এ বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখার পরও করোনা মোকাবেলায় অতিরিক্ত ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়া দেশের ৮০ শতাশ মানুষকে করোনা টিকার আওতায় আনতে ১ লাখ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে।
বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১২ বছরে  দেশের সব খাতে বিষ্ময়কর অগ্রগতি হয়েছে। স্বাধীনতার আগে দেশে দরিদ্রের হার ছিল ৮০ শতাংশ। বর্তমানে তা ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ। দেশের প্রথম বাজেট ছিল মাত্র ৭১৯ কোটি টাকা।  আর সে বাজেট এখন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকায়। স্বাধীনতার পর বিশেষ করে ’৭৫ এর বাজেটগুলো ছিলো বিদেশী সাহায্য নির্ভর। আর এখন বাজেট হয় নিজেদের অর্থে।  তখন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল নাম মাত্র। আর এখন তা ৪৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে  গেছে।
তিনি বলেন, ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর এ দেশের উন্নয়ন থমকে গিয়েছিল। আইনের শাসন, জনগণের ভোটাধিকারসহ কোন মৌলিক অধিকারই ছিল না। দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল ৪০ লাখ মেট্রিক টন। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে দেশকে খাদ্যে উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত করেছেন। দেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। যোগাযোগ অবকাঠামোয় পদ্মা সেতুসহ অনেকগুলো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
সরকারি দলের অন্য সদস্যরা বলেন, করোনায় বিপর্যস্ত বিশ্ব অর্থনীতির কথা বিবেচনায় রেখে দেশের ক্ষতিগ্রস্ত আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য নিয়েই বাস্তবসম্মত, সময়োপযোগী এবং বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট দেয়া হয়েছে। এ বাজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে বর্তমান সরকার সূচিত গত এক যুগের উন্নয়নের  ধারাবাহিকতা বজায় রাখা সম্ভব হবে। 
তারা বলেন, বৈশ্বিক মহামারির সংক্রমণের সাথে সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োচিত পদক্ষেপের ফলে সফলভাবে করোনা মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে। তার বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী পদক্ষেপে দেশের আর্থ-সামাজিক কর্মকান্ড সচল রাখা সম্ভব হয়েছে। 
তারা বলেন, করোনাকালে বিশ্বের প্রায় সব দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক। আর বর্তমান সরকারের পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশে  জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫.২ শতাংশ অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। আগামী অর্থ বছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭.২ নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত আর্থ-সামাজিক অবস্থা পুনরুদ্ধারে ২৩টি খাতে প্রণোদনা প্রদান করার ফলে এটা সম্ভব হয়েছে। 

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

সংসদে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিল উত্থাপন

সংসদ অধিবেশন মুলতবি