ভিতরে

বাংলাদেশে বিনিয়োগে যুক্তরাষ্ট্র আগামীতেও এক নম্বর থাকবে : পিটার হাস

বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এক নম্বরে আছে এবং ভবিষ্যতেও এই স্থান ধরে রাখবে। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগে এক নম্বর । আগামীতেও আমাদের বিনিয়োগের এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’ বুধবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেডের (ইউএমপিএল) ৫৮৪ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন গ্যাসভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেলের বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শনকালে মার্কিন রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন। তিনি বলেন, মার্কিন কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে আগ্রহী, তাই নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে আরও যুক্তিযুক্ত হতে হবে।
ইউএমপিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক চৌধুরী নাফিজ সরাফাত রাষ্ট্রদূতকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান।
ইউএমপিএল-এর চেয়ারম্যান মো. নূর আলী, মার্কিন দূতাবাসের অর্থনৈতিক ইউনিটের প্রধান জোসেফ গিবলিন, কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জহির উদ্দিন মোল্ল¬া এবং জেনারেল ইলেকট্রনিক্স (জিই) গ্যাস পাওয়ার, দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দীপেশ নন্দাসহ অন্যান্যরা সফরকালে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে উপস্থিত ছিলেন। বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জিই গ্যাস পাওয়ারের সাইট ম্যানেজার কালুম ডেভিড কর্নফর্থ রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে  প্রকল্পের সর্বশেষ অবস্থার বর্ণনা দেন।
নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে ৫৮৪ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্স লিমিটেড, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড ও জিই-এর কনসোর্টিয়াম ২০১৮ সালের ২৫ জুন জিইকে এ প্রকল্পের ঠিকাদার বা ইপিসি নিযুক্ত করে। পরে নেব্রাস পাওয়ার কিউ.পি.এস.সির প্রতিষ্ঠান  নেব্রাস পাওয়ার ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট বি.ভি. ২৪ শতাংশ ইক্যুইটি অংশীদারত্ব নিয়ে প্রকল্পে যুক্ত হয়।
প্রকল্পের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে সরকার ও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) বাস্তবায়ন চুক্তি (আইএ), বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডি) সঙ্গে পিপিএ (পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট) এবং ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে গ্যাস সরবরাহ চুক্তি (জিএসএ) হয়। উদ্যোক্তা কোম্পানির সঙ্গে ২০১৯ সালের ৩০ আগস্ট টার্ন-কি ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল ইলেকট্রিকের (জিই) ঠিকাদারি চুক্তি হয়। জিই এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান।
প্রকল্প উদ্যোক্তাদের ২৫ শতাংশ ইক্যুইটি বিনিয়োগ রয়েছে। প্রকল্প ব্যয়ের বাকি ৭৫ শতাংশ স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক (সুইস ইসিই-এসইআরভি কভার লেন্ডার), এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি), জার্মান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (ডিইজি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ওএফআইডি) দিয়েছে।
ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৯২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে প্রকল্পটি বাণিজ্যিকভাবে বাস্তবায়িত হওয়ার কথা রয়েছে।
ইউএমপিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার ব্যবসায়িক এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রণী ভূমিকার জন্য পিটার হাসের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির গ্যাস টারবাইন প্রদানে জিইসহ মার্কিন কোম্পানিগুলোর অবদানেরও প্রশংসা করেন। চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র বাংলাদেশের জনগণকে পরিবেশসম্মত, নির্ভরযোগ্য এবং সাশ্রয়ী মূল্যের বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। তিনি জানান, এটি একটি পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ প্রকল্প। কেন্দ্রটি অন্যান্য বিদ্যমান কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্টের তুলনায় কম গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গত করবে। বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী, কার্বন নিঃসরণ কমাতে বাংলাদেশ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এই কেন্দ্রটি কার্বন নিঃসরণ কমাতে বড় ভূমিকা রাখবে। এই কেন্দ্রে জিই-এর সর্বশেষ ৯এইচএ.০১ গ্যাস টারবাইন ব্যবহার করা হয়েছে, যা ৬২ শতাংশের বেশি দক্ষতায় কাজ করে। অন্যদিকে প্রচলিত গ্যাস টারবাইনের দক্ষতা প্রায় গড়ে ৩০-৪০ শতাংশ। জিই-এর ৯এইচএ.০১  হেভি-ডিউটি গ্যাস টারবাইন জ্বালানিকে বিদ্যুতে পরিণত করতে সবচেয়ে সাশ্রয়ী হিসেবে ইতোমধ্যে দুনিয়াজুড়ে খ্যাতি অর্জন করেছে। এই ধরনের উচ্চ শক্তি দক্ষ প্রযুক্তি অন্যান্য প্রচলিত প্রযুক্তির তুলনায় প্রাকৃতিক গ্যাসের মাধ্যমে অধিক মাত্রায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। গ্যাসের সর্বোত্তম ব্যবহার হবে এই কেন্দ্রে।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

সুপ্রিমকোর্ট বার নির্বাচনের প্রথম দিনের ভোটগ্রহণ শেষ

এক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে মিলবে কৃষির ৪৫টি সেবা