ভিতরে

লিগ্যাল এইডের উদ্দেশ্য সফলে মূখ্য ভূমিকা আইনজীবীদের : বিচারপতি নাইমা হায়দার

 অসচ্ছল বিচারপ্রার্থী জনগণকে লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে আইনি সহায়তা নিশ্চিতে মূখ্য ভূমিকা পালন করতে হয় প্যানেল আইনজীবীদের ।
‘সরকারি আইনি সহায়তা কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়নে বিজ্ঞ প্যানেল আইনজীবীদের ভূমিকা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তৃতায় বিচারপতি নাইমা হায়দার এ কথা বলেন।
বিচারপতি নাইমা হায়দার সুপ্রিমকোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্যানেল আইনজীবীদের সাথে আজ এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন। সুপ্রিমকোর্ট  মূল ভবনের কনফারেন্স হলে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্টিত হয়।
বিচারপতি নাইমা হায়দার বলেন, অসচ্ছল বিচারপ্রার্থী মামলায় আইনি সহায়তার জন্য লিগ্যাল এইডের শরণাপন্ন হন। ওই বিচারপ্রার্থীর মামলায় সংশ্লিষ্ট প্যানেল আইনজীবীকে আইনি সহায়তা দেয়ার ক্ষেত্রে লিগ্যাল এইডের উদ্দেশ্য যেন ব্যাহত না হয় সেটির গুরুত্ব দিতে হবে। বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীর মাঝে যেন কোনরূপ ভুল বুঝাবুঝি না হয় এবং কোনো অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় তা খেয়াল রাখতে হবে।
সভায় প্যানেল আইনজীবীগণ তাদের অভিজ্ঞতা ও মতামত তুলে ধরেন।
সভায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কৌসুঁলি সিনিয়র এডভোকেট খুরশীদ আলম খান, ডেপুটি এটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সুপ্রিমকোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্য সচিব সহকারী এটর্নি জেনারেল এডভোকেট অবন্তী নূরুল, ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সহ-সভাপতি দিদারুল আলম দিদার ও যুগ্ম-সম্পাদক ফজলুল হক মৃধা, সুপ্রিমকোর্ট লিগ্যাল এইড প্যানেল আইনজীবীগণ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সুপ্রিমকোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমকে বিদায়ী সংবর্ধনা ও নব নিযুক্ত চেয়ারম্যান বিচারপতি নাইমা হায়দারকে গত ২২ জানুয়ারি বরণ করা হয়। হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নাইমা হায়দারকে সুপ্রিমকোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে গত ১২ জানুয়ারি নিযুক্ত করেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমকে রাষ্ট্রপতি গত ৮ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। ওইদিনই শপথগ্রহণের মধ্যদিয়ে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমের নিয়োগ কার্যকর হয়। 
সরকারি খরচায় অসচ্ছল বিচারপ্রার্থীদের বিনামূল্যে আইনি সেবা দিতে ২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিমকোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির অফিসটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি। এর আগেই জাতীয় আইনগত সহায়তা আইনের অধীনে  সুপ্রিমকোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন বিচারপতি মো. নিজামুল হক। ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন বিচারপতি নিজামুল হক। এ কারণে তার স্থলে ১৮ ফেব্রুয়ারি নতুন চেয়ারম্যান হন বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম। গত বছরের ৯ জানুয়ারি আপিল বিভাগে তিনি নিয়োগ পান। তখন এই পদে ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমকে মনোনীত করা হয়। গত বছর ৮ ডিসেম্বর আপিল বিভাগে নিয়োগ পান বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম। এরপরই বিচারপতি নাইমা হায়দারকে এই পদে মনোনীত করলেন প্রধান বিচারপতি। সুপ্রিমকোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির প্রথম নারী চেয়ারম্যান বিচারপতি নাইমা হায়দার।
সুপ্রিমকোর্ট লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে নভেম্বর ২০২২ পর্যন্ত আইনি সেবা পেয়েছেন ২২ হাজার ৫২১ জন বিচারপ্রার্থী। জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। 
সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ, দেশের সব নিম্ন আদালত, শ্রম আাদালতে সরকারি খরচায় অসচ্ছল জনগোষ্ঠীকে লিগ্যাল এইড দেয়া হয়।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বা ক্ষুদ্র জাতি সম্প্রদায়ের দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আইনি সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্যতা আইনগত সহায়তা প্রদান নীতিমালায় ইতোমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। 
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল, অসমর্থ বিচারপ্রার্থী জনগণকে সরকারি খরচে আইনি সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন-২০০০’ প্রণয়ন করে। 
২০০০ সালে তৎকালীন শাসন আমলে আইনটি প্রণয়ন করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। তারপরের সরকারগুলো আইনটি কার্যকরে উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ নেয়নি। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগ দরিদ্র ও অসচ্ছল জনগণের বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিতে আইনটি কার্যকরে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং তা অব্যাহত রয়েছে।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

প্রবাসী নারী শ্রমিকদের বিষয়ে হাইকোর্টে রিট

আ’লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এমদাদুল হকের মৃত্যুতে শোক প্রধানমন্ত্রীর