ভিতরে

বাংলাদেশের লক্ষ্য ২৯৯

সিরিজের শেষ ও তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে  জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ২৯৮ রান।   ম্যাচে রেগিস চাকাবা, সিকান্দার রাজা ও রায়ান বার্লের হাফ সেঞ্চুরিতে ২৯৮ রানের বড় সংগ্রহ পায় স্বাগতিক   জিম্বাবুয়ে।
মঙ্গলবার হারারে ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধন্ত নেন   টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল। পরপর দুই ম্যাচে টস হারের পর অবশেষে কয়েন ভাগ্য নিজের পক্ষে আনতে পেরেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। 
বাংলাদেশের আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা দারুণ করে জিম্বাবুয়ে। দুই ওপেনার রেগিস চাকাবা ও তাদিওয়ানাশে মারুমানি সাবধানী ব্যাটিংয়ে দলের রান বড় করেছেন । নিয়মিত বিরতিতে এসেছে  বাউন্ডারি। তাতে স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ হচ্ছে।
নবম ওভারে সাকিবের হাতে বল তুলে দেন তামিম। এর আগে তাসকিন ও সাইফ উদ্দিনকে দিয়ে বোলিং শুরু করেছিলেন। এরপর মেস্তাাফিজ ও মাহমুদউল্লাহকেও নিয়ে এসেছেন। কিন্তু কেউ ব্রেক থ্রু দিতে পারেননি। সাকিব প্রথম ওভারেই সেই কাজটা করলেন। তার বল সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন ৮ রান করা মারুমানি।  
এরপর নিজের ২০০তম ওয়ানডেতে দলকে সবচেয়ে কাঙ্খিত উইকেটটি এনে দেন মাহমুদউল্লাহ। ফেরান  জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেইলরকে।
পাওয়ার প্লের মধ্যে একটি ওভার করার পর মাহমুদউল্লাহ দ্বিতীয় বার বল হাতে নেন  ১৮তম ওভারে। ফিরেই পান সাফল্য। উইকেটে অবশ্য বোলারের কৃতিত্বের চেয়ে টেইলরের আয়েশি শটের ব্যর্থতাই বেশি। অফ স্টাম্পে থাকা একটি সাধারণ ডেলিভারিতে লফটেড ড্রাইভ খেলতে গিয়ে তিনি সহজ ক্যাচ তুলে দেন, মিড অফে বল হাতে জমান তামিম ইকবাল।
৩৯ বলে ২৮ রানে ফিরলেন টেইলর। রেজিস চাকাভার সঙ্গে তার দ্বিতীয় উইকেট জুটি থামে ৪২ রানে।
ব্রেন্ডন টেইলরের শিকার করে  আড়াই বছর পর ওয়ানডে উইকেটে স্বাদ পেলেন মাহমুদউল্লাহ।
সবশেষ ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কেন উইলিয়ামসনের উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। এরপর চোট আর নানা কারণ মিলিয়ে তার বোলিংই করা হয়েছে কম। মাঝের এই লম্বা সময়ে কেবল ৮ ইনিংসে বোলিং করেছেন তিনি, সেটিও কেবল এক-দুই ওভার। অবশেষে প্রায় ভুলে যাওয়া স্বাদ পেলেন আবার।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে এক ‘ভয়ঙ্কর’ জুটিই গড়েছিলেন জিম্বাবুইয়ান দুই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান রেগিস চাকাভা এবং ডিওন মায়ার্স। নিজের তৃতীয় স্পেলে বল করতে এসে সেই জুটি ভাঙেন রিয়াদ। ডিওন মায়ার্স করেন ৩৪ রান। পরের ওভারেই ওয়েসলে ম্যাধেভেরেকে ৩ রানে ফেরান মুস্তাফিজ।
প্রথম স্পেলে ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে মুস্তাফিজ ছিলেন উইকেটশূন্য। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে এসে দ্বিতীয় ওভারে পেলেন উইকেটের স্বাদ। তার স্লোয়ার বলে আগে ব্যাট চালিয়ে সাকিবের হাতে সহজ ক্যাচ দেন ওয়েসলি মাধভেরে। ১০ বলের ব্যবধানে বাংলাদেশ পেল জোড়া সাফল্য। মাহমুদউল্লাহ চাকাবা ও মায়ার্সের  ৭১ রানের জুটি ভাঙার পর মুস্তাফিজ ফেরান মাধভেরেকে।
ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ রান তুলে সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন রেগিস চাকাবা। কিন্তু মনোযোগ ধরে রাখতে পারলেন না। তাসকিনের গতিতে পরাস্ত হয়ে উইকেট হারান। তার ফুলার লেন্থ বল লেগ সাইডে ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাড়তি গতিতে টাইমিং মেলাতে পারেননি। পায়ের কাজও ছিল নড়বড়ে। বাজে এক শটে শেষ হয়  প্রতিশ্রুতিশীল ইনিংস। তাসকিন পেলেন ম্যাচের প্রথম উইকেট। ৯১ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৮৪ রান করে চাকাবা ফেরেন সাজঘরে।
এরপরই রায়ান বার্লকে জীবন দিলেন সাকিব আল হাসান। ডিপ ফাইন লেগে জিম্বাবুয়ান ব্যাটসম্যানের ক্যাচ ছেড়ে দিলেন। তাতে হলো চার এবং দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরিও পেয়ে গেলেন বার্ল, ৩৮ বল খেলে।  ৪৮ তম ওভারে সিকান্দারকে মোসাদ্দেক হোসেনের ক্যাচ বানান মুস্তকাফিজুর রহমান। ৫৪ বলে ৭ চার ও ১ ছয়ে ৫৭ রান করেন ৩৫ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। ষষ্ঠ উইকেটে ৮০ বলে ১১২ রানের জুটি গড়েন সিকান্দার ও বার্ল।
এরপর  ৪৯ তম ওভারে ৩ উইকেট নিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।  প্রথম বলে রায়ার্ন বার্ল তাকে ছক্কা হাঁকান। পরের বলে তাকে লিটন দাসের ক্যাচ বানান। ৫৯ রানে ফেরেন বার্ল। পরের বলে ডোনাল্ড তিরিপানোকে করেন বোল্ড। তেন্দাই চাতারা হ্যাটট্রিক হতে দেননি। তবে দুই বল পরই বোল্ড হন ১ রানে।
শেষ ওভারে ব্লেসিং মুজারাবানিকে শূন্য রানে বোল্ড করেন মুস্তাফিজুর রহমান। এতে তিন বল বাকি থাকতে গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ানরা।
সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে একাদশে জোড়া পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে টাইগাররা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ৪৯.৩ ওভারে ২৯৮ (চাকাভা ৮৪, মারুমানি ৮, টেইলর ২৮, মায়ার্স ৩৪, মাধেভেরে ৩, রাজা ৫৭, বার্ল ৫৯, জঙ্গুয়ে ৪* টিরিপানো ০, চাতারা ১, মুজারাবানি ০; তাসকিন ১০-১-৪৮-১, সাইফ ৮-০-৮৭-২, মুস্তাফিজ ৯.৩-০-৫৭-৩, মাহমুদুল্লাহ ১-০-৪৫-২, সাকিব ১০-০-৪৬-১, মোসাদ্দেক ২-০-১৩-০)।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

এগিয়ে আনা হলো বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টি-২০ সিরিজের সুচি

হাঁটুর ইনজুরিতে দুই মাস মাঠের বাইরে তামিম