ভিতরে

করোনায় চট্টগ্রামে একদিনে ৮শ’ আক্রান্ত

বন্দর নগরী চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে একদিনে আক্রান্ত রোগী এবার আটশ’ ছাড়িয়ে গেল। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার রিপোর্টে নতুন ৮শ’ ২১ জনের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়ে। সংক্রমণের হার ৩৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এ সময়ে করোনায় আক্রান্ত ৯ রোগীর মৃত্যু হয়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, এন্টিজেন টেস্ট, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজসহ ১১টি ল্যাবে গতকাল রোববার চট্টগ্রামের ২ হাজার ১৭৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৮শ’ ২১ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। এর মধ্যে শহরের  ৫২৭ জন ও চৌদ্দ উপজেলায় ২৯৪ জন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৬৫ হাজার ৮২৯ জন। এর মধ্যে শহরের ৫০ হাজার ৬৬১ জন ও গ্রামের ১৫ হাজার ১৬৮ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারীতে সর্বোচ্চ ৫৭, মিরসরাইয়ে ৩৮, রাউজানে ৩৫, রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালীতে ২৭ জন করে, আনোয়ারায় ২৩, পটিয়ায় ১৭, সন্দ্বীপে ১৬, সীতাকু-ে ১৪, চন্দনাইশে ১২, বাঁশখালীতে ১১, সাতকানিয়ায় ৮, ফটিকছড়িতে ৬, এবং লোহাগাড়ায় ৩ জন রয়েছেন।
গতকাল করোনায় শহরের ৩ জন ও গ্রামের ৬ জন মারা যান। মৃতের সংখ্যা এখন ৭৮০ জন। এতে শহরের ৫শ’ ও গ্রামের ২৮০ জন। 
উল্লেখ্য, গতকাল শনাক্ত রোগীর সংখ্যা চট্টগ্রামে একদিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২০ সালের ৩ এপ্রিল চট্টগ্রামে প্রথম ভাইরাসবাহক শনাক্তের পর এ প্রথম একদিনে সংক্রমিতের সংখ্যা ৮শ’ অতিক্রম করে। এর আগে গত ৮ জুলাই সর্বোচ্চ আক্রান্ত ছিল ৭শ’ ৮৩ জন। ওইদিন ১০ জনের মৃত্যু হয়। সংক্রমণে হার ছিল ৩৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। গতকালের সংক্রমণ হারও করোনাকালের সবচেয়ে বেশি। এর আগে গত ৬ জুলাই সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ হার নির্ণিত হয় ৩৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এ সময়ে ৬১১ জনের নমুনায় ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয় ও ৪ রোগী মৃত্যুবরণ করে। করোনার প্রথম প্রকোপের সময় গত বছর ৩০ জুন আক্রান্তের সংখ্যা একদিনে সর্বোচ্চ ৪৪৫ জন পর্যন্ত ওঠেছিল।
এদিকে, গতকাল ১০ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে চলতি মাসের প্রথম এগারো দিনে ৭৩ করোনা রোগীর মৃত্যু হলো। দেশে করোনার প্রকোপ শুরুর পর চট্টগ্রামে একদিনে সর্বোচ্চ ১৪ জন মারা যান গত ১০ জুলাই। এর আগ পর্যন্ত ২৪ এপ্রিল ১১ জনের মৃত্যুই ছিল সবচেয়ে বেশি।  
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে দেখা যায়, এন্টিজেন টেস্টে গতকাল ৬৬৩ জনকে পরীক্ষা করা হলে শহরের ৬৮ ও গ্রামের ১৬০ জন পজিটিভ পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৩২৪ জনের নমুনার মধ্যে শহরের ৯৬ ও গ্রামের ২৭ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে ২৯১ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ৪৫ ও গ্রামের ১২ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২২৯টি নমুনায় শহরের ২৫ ও গ্রামের ৪১টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৭০ জনের নমুনায় শহরের ৮৬ জন ও গ্রামের ২৯ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। নগরীর বিশেষায়িত কভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ ৩৭টি নমুনায় গ্রামের ৫টিসহ ২২টিতে পজিটিভ আসে।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ২১৭টির নমুনায় গ্রামের ৫টিসহ ১০১টি, মা ও শিশু হাসপাতালে ৫৩টি নমুনায় গ্রামের ৩টিসহ ২৩টি, মেডিকেল সেন্টারে ২২টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ৩টিসহ ১২টি এবং এপিক হেলথ কেয়ারে ১৪১ নমুনায় গ্রামের ৫টিসহ ৭২টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। অপর বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব শেভরনে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।  
এদিন চট্টগ্রামের ২৭টি নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় চারটিতে ভাইরাস শনাক্ত হয়। 
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে এন্টিজেন টেস্টে ৩৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ, চমেকে ৩৭ দশমিক ৯৬, বিআইটিআইডি’তে ১৯ দশমিক ৫৮, সিভাসু’তে ২৮ দশমিক ৮২, চবি’তে ৬৭ দশমিক ৬৪, আরটিআরএল-এ ৫৯ দশমিক ৪৬, ইম্পেরিয়ালে ৪৬ দশমিক ৫৫, মা ও শিশু হাসপাতালে ৪৩ দশমিক ৩৯, মেডিকেল সেন্টারে ৫৪ দশমিক ৫৪, এপিক হেলথ কেয়ারে ৪৯ দশমিক ৬৪ এবং কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ১৪ দশমিক ৮১ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

সিলেটে আরও ৬৪ হাজার ভ্যাকসিন পৌঁছেছে, প্রস্তুত টিকাদান কেন্দ্র

বিএসএমএমইউয়ে মুমূর্ষ করোনা রোগীর ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশনা