ভিতরে

ইউরো ২০২০: সুইজারল্যান্ডকে কাঁদিয়ে সেমিফাইনালে স্পেন

সুইজারল্যান্ডের স্বপ্নকে আর বেশীদুর যেতে দিলনা স্পেন। ফেবারিট হিসেবেই কাল সেন্ট পিটার্সবার্গে পেনাল্টি শ্যুটআউটে সুইসদের ৩-১ গোলে ব্যবধানে পরাজিত করে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। নির্ধারিত সময়ের ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র ছিল। 
৭৭ মিনিটে জেরার্ড মোরোনোকে রেমো ফ্রেলারের ট্যাকলটি মোটেই পছন্দ হয়নি  ইংলিশ রেফারী মাইকেল অলিভারের। শেষ পর্যন্ত ফ্রেলারকে লাল কার্ড দেখানো হলে তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। এর আগে ম্যাচের ৮ মিনিটে সুইস মিডফিল্ডার ডেনিস জাকারিয়ার আত্মঘাতি গোলে এগিয়ে গিয়েছিল স্পেন। কিন্তু তারপর থেকে অনেকটা সময় দাপটের সাথে খেলা সুইজারল্যান্ড অধিনায়ক জিহার্দান শাকিরির গোলে ৬৮ মিনিটে ঠিকই ম্যাচে সমতা ফেরায়। ফ্রেলারের লাল কার্ড সুইসদের  অনেকটাই পিছিয়ে দিলেও অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে শেষ ৪৩  মিনিট সুইসদের ১০জন নিয়েই খেলতে হয়েছে। টাইব্রেকারে স্প্যাানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমন দুটি সেভ করেছে, এর মাধ্যমে রেকর্ড চতুর্থ ইউরোপীয়ান শিরোপার স্বপ্ন টিকে থাকলো স্পেনের। অন্যদিকে প্রথমবারের মত বৈশ্বিক কোন টুর্ণামেন্টের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্নভঙ্গ হলো সুইসদের। 
শেষ ১৬‘তে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের বিপক্ষে পেনাল্টি শ্যুট আউটের নায়ক সুইজারল্যান্ডের গোলরক্ষক ইয়ান সোমান অতিরিক্ত সময়ে বেশ কয়েকটি দারুন সেভ করে দলকে রক্ষা করেছিলেন। কিন্তু ফাবিয়ান শায়ের ও ম্যানুয়েল আকাঞ্জির শট রুখে দিয়ে কাল সোমারকে ছাপিয়ে নায়কে পরিনত হয়েছিলেন সিমন। অধিনায়ক সার্জিও বাসকুয়েটসের শট আটকে দিয়ে সোমার টাই ব্রেক শুরু করেছিলেন। সুইসদের হয়ে গাভরানোভিচ গোল করলে স্পেনের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। ড্যানিয়েল ওলমো গোল করার পর শায়ের ও আকাঞ্জির শট রুখে দেন সিমন। মাঝে রড্রির স্পেনের হয়ে গোল মিস করেন। এরপর চতুর্থ শট নিতে এসে রুবেন ভারগাস বারের উপর দিয়ে বল বাইওে পাঠিয়ে দিলে অনেকটাই ফ্রন্টফুটে চলে যায় স্পেন। শেষ শটে মিকেল ওয়ারসাবাল কোন ভুল করেননি। 
এঙ্গলবার ওয়েম্বলিতে হাই ভোল্টেজ সেমিফাইনালে লুইস এনরিকের দলের প্রতিপক্ষ ইতালি। 
আগের দুই ম্যাচে ১০ গোল করা স্পেন আবারো হতাশাজনক পারফরমেন্সে ম্যাচ থেকে প্রায় বেরিয়ে যেতে বসেছিল। সুইডেন ও পোল্যান্ডের সাথে গ্রুপের প্রথম দুই ম্যাচে ড্র করা স্পেনকে যেন কাল আবারো মাঠে দেখা গেছে। যদিও ২০০৮ ও ২০১২ বিজয়ী দলটির শুরুটা দারুন হয়েছিল। অনেকটাই সৌভাগ্যেই জেড়েই ৮ মিনিটে এগিয়ে যায় এনরিকের শিষ্যরা। কর্ণার থেকে সুইসররা বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তা জমা পড়ে জোর্দি আলবার পায়ে। সেই বল থেকে আলবার বাম পায়ের ভলি সুইস মিডফিল্ডার জাকারিয়ার পায়ে ডিফ্লেকটেড হলে সোমারের আর কিছুই করার ছিলনা। এনিয়ে এবারের ইউরো আসরে ১০ম আত্মঘাতি গোলের ঘটনা ঘটলো যা ১৫ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। অনেকটাই ফাঁকায় দাঁড়ানো আলভারো মোরাতা খুব কাছে থেকে সোমারকে হেডের সাহায্যে পরাস্ত করতে পারেননি। স্পেনের ব্যর্থতার সুযোগে ধীরে ধীরে সুইজারল্যান্ড ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নিজেদের করে নেয়। কর্ণার থেকে সিলভান উইডমারের হেড জালের ঠিকানা খুঁজে পায়নি। স্টিভেন জুবেন পেনাল্টির আবেদন করেও অফসাইডের কারনে সফল হতে পারেননি। 
বিরতির পর স্প্যানিশ কোচ পাবলো সারাবিয়ার স্থানে ডানি ওলমোকে মাঠে নামান। আরবি লিপজিগের এই মিডফিল্ডার ৬০ সেকেন্ডের মধ্যে সোমারকে বিপদে ফেলেছিলেন। ৬৪ মিনিটে কাউন্টার এ্যাটাক থেকে শাকিরি বাড়ানো বলে জুবের খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। চার মিনিটর পর আন্ডারডগরা সমতায় ফিরে। স্প্যানিশ রক্ষনভাগের ভুলের সুবাদে ফ্রেলার বল বাড়িয়ে দেন শাকিরির কাছে। কোনাকুনি শটে শাকিরি ম্যাচে সমতা ফেরান। টুর্নামেন্টে এটি তার তৃতীয় গোল। ৭৭ মিনিটে ম্যাচের গতি একেবারেই পাল্টে যায়। স্প্যানিশ বদলী খেলোয়াড় মোরেনোকে স্লাইড চ্যালেঞ্জের কারনে ফ্রেলারকে লাল কার্ড দেখে মাঠ ত্যাগ করতে হলে সুইসরা হতাশা প্রকাশ করে। নির্ধারিত সময়ের শেষ পর্যন্ত একজন কম নিয়ে খেলেও স্পেনকে আটকাতে সমর্থ হয় সুইজারল্যান্ড। ওলমোকে ফাউলের অপরাধে উইডমার দ্বিতীয় হলুদ কার্ড থেকে রক্ষা পেলে কার্যত বেঁচে যায় সুইজারল্যান্ড। অতিরিক্ত সময়ে সোমার একাই আটটি সেভ করেছেন। কিন্তু শুধুমাত্র রড্রির শটটি রুখে দিয়ে তিনি সুইসদের রক্ষা করতে পারেননি।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

ইউরো ২০২০: বেলজিয়ামকে হতাশ করে সেমিফাইনালে ইতালি

আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নিলেন ক্রুস