ভিতরে

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মেধাসম্পদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু : শিল্পমন্ত্রী

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু একে অপরের পরিপূরক। এ দু’টির একটা থেকে আরেকটা আলাদা করা যায় না।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মেধাসম্পদ ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের ডিজাইন করেছেন, দিয়েছেন পেটেন্ট। তাঁর (বঙ্গবন্ধু) চেয়ে বড় ডিজাইনার আর কেউ নাই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন, ডিজাইন ও নির্দেশনা দিয়েই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। তাঁর কারণেই আমরা স্বাধীন – সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি, স্বাতন্ত্র্য জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি এবং পেয়েছি নিজস্ব স্বদেশ ভূমির একটি মানচিএ।’
শিল্পমন্ত্রী বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস-২০২১ উপলক্ষে রাজধানীর বেইলী রোডের অফিসার্স ক্লাবে ‘জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে মেধাসম্পদ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস্ অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) এ সেমিনারের আয়োজন করে। শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি এ সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন।
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরাধিকার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে আমরা আজকের জায়গায় এসে পৌঁছেছি। করোনাকালিন প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে জীবন ও জীবিকা নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, করোনা মহামারির মধ্যেও আমাদের কোনো কিছু বন্ধ হয়ে যায়নি, সংকুচিত হয়নি এমনকি থেমেও যায়নি। আমাদের শিল্প প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ী উদ্যোক্তারা যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতেও আমরা সক্ষম হয়েছি।’
শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিপিডিটির ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. ওবায়দুর রহমান।
মূল প্রবন্ধ নিয়ে আলোচনা করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব লুৎফুন নাহার বেগম এবং মো. সানোয়ার হোসেন। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিপিডিটির রেজিস্ট্রার মো. আবদুস সাত্তার।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব সৃজনশীলতার প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যেতে হলে দেশের সফল গবেষক, প্রযুক্তিবিদ, শিল্পপতি, ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে মেধাসম্পদ সংরক্ষণের পাশাপাশি এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু অনেক আগেই উপলব্ধি করেছিলেন দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতির উন্নয়নের জন্য মেধাসম্পদকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে। আর মেধাসম্পদ সংরক্ষণ ও কাজে লাগাতে হলে এর গুরুত্ব শিক্ষা কারিকুলামের সিলেবাসে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে, গবেষণা বাড়াতে হবে, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে ও তা বাড়াতে হবে এবং সবাইকে সচেতন হতে হবে।’
শিল্প সচিব বলেন, সীমিত সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমেই কেবল একটি দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব। এজন্য মেধাসম্পদের যথাযথ ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই।
ডিপিডিটির রেজিস্ট্রার বলেন, পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস্ অধিদপ্তর মেধাসম্পদ সংরক্ষণ ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে।
তিনি জানান, ‘স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে আমরা ৬ হাজার ২১টি পেটেন্ট সনদ, ১৮ হাজার ৪৯৮টি ডিজাইন সনদ এবং ৬২ হাজার ৬০৯টি ট্রেডমার্কস্ নিবন্ধন সনদ প্রদান করেছি। আমরা বাংলাদেশের ইলিশ, জামদানি, ঢাকাই মসলিম, খিরসাপাত আম, চিনিগুড়া ও কাটারীভোগ চাল, শতরঞ্জি, রাজশাহী সিল্ক’র ভৌগোলিক পণ্যের নিবন্ধন সনদ প্রদান করেছি। এছাড়াও আমরা অনলাইন সেবা চালু করেছি, যার মাধ্যমে সেবাগ্রহীতা এখন ঘরে বসে নিবন্ধন সেবা নিতে পারছে।
পরে মন্ত্রী পেটেন্ট, ডিজাইন, ট্রেডমার্কস্ এবং ভৌগোরিক নির্দেশক পণ্যের (জিআই) সনদ প্রদান করেন।
অুষ্ঠানে, ‘পেটেন্টে’ বিজয় ডিজিটালের মোস্তাফা জব্বার ও হিসাব লিমিটেডকে এবং ‘ডিজাইনে’ বিডি ফুড লিমিটেড, জিহান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ ও আমান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজকে এবং ‘ট্রেডমার্কস’-এ মোহনা টেলিভিশন লিমিটেড, এক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড, গোল্ডেন ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল বিডি, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ লিমিটেড এবং ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডকে সনদ প্রদান করা হয়।
এছাড়াও, ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (জিআই) হিসেবে ঢাকাই মসলিনের জন্য বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম, রংপুরের শতরঞ্জি’র জন্য বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) চেয়ারম্যান মো. মোশতাক হাসান, রাজশাহী সিল্ক’র জন্য বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মু. আবদুল হাকিম, বিজয়পুরের সাদা মাটির জন্য নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান, দিনাজপুরের কাটারীভোগ ও কালিজিরার জন্য বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউশনের (বিআরআরআই) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরকে সনদ প্রদান করা হয়।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

ঢাকাকে বাসযোগ্য একটি আধুনিক নগরীতে রূপান্তরিত করতে হবে : মেয়র আতিক

আগামী জুলাই থেকে পুনরায় কোভিড-১৯ গণটিকা প্রদান কর্মসূচি শুরু হবে : মুখ্য সচিব