ভিতরে

সর্বস্তরে বাংলাভাষার প্রচলনে সরকার কাজ করে যাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সর্বস্তরে বাংলাভাষার প্রচলনে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। মুক্তবুদ্ধির চর্চা, স্বাধীন মত প্রকাশ এবং শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার জন্য বর্তমানে দেশে অত্যন্ত সুন্দর ও আন্তরিক পরিবেশ বিরাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল ‘অমর একুশে বইমেলা’ উপলক্ষ্যে আজ এক বাণীতে বলেন, “মহান একুশের চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ধারণ করে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়ন বিস্ময়। সর্বস্তরে বাংলাভাষার প্রচলনে আমাদের সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার সবসময়ই মন ও মননের প্রকাশ এবং সুচিন্তন কর্মকে সাধুবাদ জানিয়ে সকল সহযোগিতা করে থাকে। মুক্তবুদ্ধির চর্চা, স্বাধীন মত প্রকাশ এবং শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার জন্য বর্তমানে দেশে অত্যন্ত সুন্দর ও আন্তরিক পরিবেশ বিরাজ করছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভাষা-আন্দোলনের হাত ধরেই আমাদের স্বাধিকার আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল। নানা লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ভাষার সংগ্রাম পরিণত হয়েছিল আমাদের স্বাধিকার ও স্বাধীনতার সংগ্রামে। এজন্য অমর একুশে আমাদের শেকড়ের সন্ধান দেয়। বাংলাভাষা আজ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী মানুষের প্রাণে অনুরণিত হয়।’
তিনি বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি এখন ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’। এই স্বীকৃতি আদায়ের জন্য কানাডা প্রবাসী সালাম ও রফিকসহ কয়েকজন বাঙালি উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ সরকার এ বিষয়ে জাতিসংঘে প্রস্তাব উত্থাপন করে। যার ফলশ্রুতিতে ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের অন্যতম সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতিদানের জন্য আমি ইতোমধ্যে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দাবি উত্থাপন করেছি। বিশ্বের সকল ভাষাগোষ্ঠীর মাতৃভাষা সংরক্ষণ, বিকাশ ও চর্চার লক্ষ্যে আমরা ঢাকায় ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠা করেছি।’
প্রতি বছরের মতো এবারও ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২১’ আয়োজিত হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত উল্লেখ করে এ উপলক্ষে আয়োজক সংস্থা- বাংলা একাডেমি, দেশি-বিদেশি প্রকাশক এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ‘অমর একুশে বইমেলা’ অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির কারণে তা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ১৮ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত।
এবারের বইমেলার মূল উপজীব্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মশতবার্ষিকী ও আমাদের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী জানিয়ে তিনি বলেন,‘ আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ উদ্যাপন করছি। আর এক সপ্তাহ পরে আমরা উদ্যাপন করবো বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ও লাখো শহিদের রক্তে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সংগ্রাম, সমৃদ্ধি ও অর্জনের ৫০ বছর পূর্তি। আমি আনন্দিত এ কারণে যে, বাংলা একাডেমি একুশে বইমেলায় মাসব্যাপী আলোচনা অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিষয়ভিত্তিক আলোচনার ব্যবস্থা করেছে।
’শেখ হাসিনা আজকের এই দিনে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিকসহ সকল ভাষা শহিদের স্মৃতির প্রতি এবং বাংলাভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্বদানকারী স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সকল ভাষা সৈনিকের প্রতি সন্মান জানান।
তিনি বলেন, জ্ঞানচর্চা ও পাঠচর্চা বিস্তারে বইমেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বইমেলা এমন একটি মাধ্যম, যা জাতির অগ্রগতির ও উন্নয়নের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বইমেলা আমাদের অস্তিত্ব, জীবনবোধ এবং চেতনাকে জাগ্রত করে। বইয়ের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও জাতির পিতার জীবন, আদর্শ ও কর্মকে যথাযথভাবে তুলে ধরবেন- লেখক ও প্রকাশকদের প্রতি এ আহ্বান জানান তিনি।
বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ সকল ভেদাভেদ ভুলে মহান একুশ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে একসঙ্গে কাজ করবো-এই হোক একুশে গ্রন্থমেলায় আমাদের অঙ্গীকার।’
প্রধানমন্ত্রী ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২১’-এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে টি-টুয়েন্টি আয়োজনে আশাবাদী বিসিবি

বাসা-বাড়িতে ছাদ বাগান করলে ১০ শতাংশ হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ : স্থানীয় সরকার মন্ত্রী