ভিতরে

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য শিক্ষা সুবিধা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সারাদেশে এ সংক্রান্ত শিক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারণ করছে সরকার। এ জন্য সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের শিক্ষা প্রদানের জন্য বিশেষজ্ঞ তৈরি করা হচ্ছে।
বাসস’র সাথে আলাপকালে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ হামিদুল হক বলেন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য উপযুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সরকার নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, এ জন্য সরকার ৭৪টি প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভূক্ত করেছে এবং ৫০টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্ত হওয়ার অপেক্ষায় আছে। আরও প্রায় ১ হাজার ৫শ’ প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্ত হওয়ার আবেদন করেছে ।
বিশেষ শিক্ষা প্রদানের জন্য প্রতিষ্ঠিত ‘প্রয়াস’ ইনিষ্টিটিউট-এর অধ্যক্ষ কর্ণেল মাহবুব আলম সিকদার বলেন, প্রয়াস একটি বিশেষায়িত সংস্থা যা বহুমাত্রিক কর্মসূচির মাধ্যমে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সামগ্রিক বিকাশে সাহায্য করে।
বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের সেবা দেয়ার জন্য প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি তার অবকাঠামো, লোকের আওতা এবং সেবার ক্ষেত্রের জন্য দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অন্যতম বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। প্রয়াস যশোর, বগুড়া, চট্টগ্রাম, রংপুর, সাভার, কুমিল্লা, সিলেট ও টাঙ্গাইলের ঘাটাইল এলাকায় এই ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
প্রয়াস বহুমাত্রিক কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন প্রতিটি শিশুর পূর্ণ সম্ভাব্য বিকাশের জন্য পরিষেবা সরবরাহ করার সুযোগ তৈরি করেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইতিবাচক উদ্যোগটি সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে এবং শিক্ষা সম্প্রসারণে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে।
মাহবুব আলম শিকদার বলেন, প্রয়াস ইনস্টিটিউট অব স্পেশাল এডুকেশন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের স্বাধীন জীবন যাপনে সক্ষম করার জন্য একটি উপযুক্ত পরিবেশ ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে।
তিনি বলেন, “প্রয়াস এই শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় বহুমাত্রিক পরিষেবা সরবরাহ করে। এর পাঁচটি মূল কর্মসূচি রয়েছে যেখানে বিশেষ শিক্ষা কার্যক্রমে একটি প্রধান এবং বাকি চারটি সহায়ক।”
সুত্র জানায়, দেশজুড়ে প্রয়াসের মোট ১১টি শাখা অন্তর্ভূক্তিমূলক ও শিশুবান্ধব পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে ১১৮০ জন শিক্ষার্থীর জন্য বিশেষ শিক্ষা প্রদান করছে। প্রয়াসের কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করে এই শাখাগুলি প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এই শাখাগুলোতে সর্বমোট ২৫৬ জন শিক্ষক, ৪৫ জন থেরাপিস্ট এবং ২২৭ জন কর্মচারী শিক্ষা সেবা প্রদান করে যাচ্ছে।
প্রয়াস’ই প্রথম সংস্থা যেটি বাংলাদেশে বিশেষ শিক্ষামূলক কাঠামো প্রবর্তন করেছিল। এটি প্রতিদিনের দক্ষতা বিকাশের জন্য বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। মূলধারার শিক্ষায় তাদের নিয়ে আসার জন্য এই সংস্থা চেষ্টা চালাচ্ছে। মূলধারার পাঠ্যক্রমের বিদ্যমান শিক্ষার সাথে সামঞ্জস্য রাখার জন্য একটি বিস্তৃত পাঠ্যক্রমও তৈরি করা হয়েছে। এখন প্রয়াস বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য শিক্ষা, থেরাপি এবং অন্যান্য সহায়তা পরিষেবা সম্পর্কিত আটটি কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।
অস্ট্রিয়ান উন্নয়ন সংস্থা (এডিএ) এবং অস্ট্রিয়ান হিয়ারিং ইমপ্লেন্ট কোম্পানি ‘মেডেল’ বাংলাদেশে শ্রবণ প্রতিবন্ধকতা শনাক্তকরণ ও পূনর্বাসনে অবদান রাখছে। অবকাঠামো এবং বিশেষজ্ঞ তৈরির মাধ্যমে সামাজিক অর্ন্তভূক্তি ও জীবনমান উন্নয়ন করছে। এডিএ ও মেডেল নতুন বিএসসি প্রোগাম চালুর মাধ্যমে প্রয়াসকে স্থানীয় বিশেষজ্ঞ তৈরিতে সহায়তা করছে।
মাহবুব আলম সিকদার বলেন, “আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তায় এই শিক্ষা প্রোগ্রাম চালু আমাদের জন্য সাফল্য বয়ে আনবে এবং আমি নিশ্চিত এর মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেক উপকৃত হবে। প্রয়াসের পক্ষ থেকে মেডেল ও প্রকল্প অংশীদারদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
মাদ্রাজ ইএনটি রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্পিচ অ্যান্ড হিয়ারিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ রঞ্জিত রাজেসওয়ারান বলেছেন, মেডেল স্থানীয় তিনটি অংশীদারের সাথে কাজ করছে। এগুলো হলো সিএমএইচ ঢাকা (সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল), ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইএনটি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)।
মাহবুব আলম বলেন, বিভিন্ন পর্যায়ে অডিওলজি এবং স্পিচ ল্যাংগুইজ-এর উপর সম্পৃক্ত স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম নেন এবং ওয়ার্ল্ড হিয়ারিং সেন্টার (পোলেন্ড) এবং মাদ্রাজ ইএনটি রিচার্স ফাউন্ডেশন এমইআরএফ (ইন্ডিয়া) থেকে সুপরিচিত আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা সহায়তা করেন।
এডিএ-প্রকল্পের ব্যবস্থাপক ক্রিশ্চিয়ান স্টেপ্পান বলেন, খুব বেশি দিন আগে নয় যে তারা কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করছিল।
টেপ্পান ভারত ও পোল্যান্ডের বিশেষজ্ঞদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তাদের এবং অস্ট্রিয়ান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির সহায়তায় আমরা অডিওলজি ও স্পিচ ল্যাংগুইজ থেরাপির উপর স্নাতক প্রোগাম শুরু করেছি। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমরা প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। এসব পদক্ষেপ বাংলাদেশের শ্রবণ-স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের যোগ্যতা ও দক্ষতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তুলবে।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

বিমান ভাড়া অর্ধেক করার প্রস্তাব অস্ট্রেলিয়া সরকারের

মাহমুদ-উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুতে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর শোক