ভিতরে

কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করতে কাজ চলছে : ইআরএফ আলোচনায় বক্তারা

 দেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর লক্ষ্যে কাজ চলছে। কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু হলে সারা পৃথিবীর বাজার এবং নিজেদের বাজার পরিস্থিতি দেশের ভেতরে বসেই দেখা যাবে। এতে আন্ডার ইনভয়েসিং ও ওভার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ থাকবে না।
সোমবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল- ইসলাম একথা বলেন।
ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সেমিনারে প্যানেল আলোচক ছিলেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিক লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) সাবেক সভাপতি আজম যে চৌধুরী ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সহসভাপতি মো.মনিরুজ্জামান।
বিএসইসির চেয়ারমান বলেন, আমাদের দেশের প্রধান সমস্যা কর্মসংস্থান। ভালো লোককে ভালো বেতন দিয়ে ভালো কর্ম ঠিক করে দেয়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছিলাম। ঠিক সেই সময় এমন যুদ্ধ বেঁধে গেলো, সারাবিশ্বের অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়লো। যুদ্ধের কারণে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্যাস ও জ্বালানি তেল উৎপাদনকারি দেশের সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলো। যেখান থেকে মূল খাদ্যশস্য বিভিন্ন দেশে যায়, সেই দেশ যুদ্ধে জড়িয়ে গেলো। তার সঙ্গে ইউরোপের অন্যান্য দেশেও প্রভাব পড়তে শুরু করলো।
তিনি বলেন, জ্বালানির ওপর যখন প্রভাব পড়ে, তখন সারা পৃথিবীর অর্থনীতিতে প্রভাব পড়ে। যুদ্ধ শুরুর পর যে ধাক্কা আসলো তাতে আমাদের সবকিছু অন্যরকম পরিস্থিতি তৈরি হলো। যেখানে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন অতিরিক্ত, সেখানে লোডশেডিংয়ের ধাক্কা আসলো। যে দেশের মানুষ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, সেই দেশে আমাদেরকে সরকারিভাবে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
বিএসইসির চেয়ারম্যান আরও বলেন, এতো বড় ঘটনা পৃথিবীতে ঘটে গেছে, যা আমাদের কোনো রকমের বিচার-বিশ্লেষণ,ক্ষমতা বা আমাদের কোনো রকম কিছু করার বাইরে। এই ধাক্কায় যুক্তরাজ্যে তিনজন প্রধানমন্ত্রীর পরিবর্তন হয়েছে। চার-পাঁচটা দেশের নেতৃত্ব পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। সে রকম পরিস্থিতিতে আমরা পড়িনি।
তিনি বলেন, যে ধাক্কা আমাদের লাগার কথা ছিলো, তার থেকে কম লেগেছে। সারা পৃথিবীতে পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ৮০-৯০ শতাংশ। আমাদের দেশে ঠিক উল্টো। যেখানে ৮০ শতাংশ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী, সেখানে আমাদেরকে প্রটেকশনের ব্যবস্থা নিতেই হবে। সে কারণে আমরা ফ্লোর প্রাইস দিয়ে সাময়িক একাটা ব্যবস্থা নিয়েছি। এটা স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা না।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের নিজেদের যদি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ হয়ে যায়, তখন আপনারা এখানে বসেই দেখতে পারবেন ঘানায় আজকে চালের দাম কতো বা আমাদের গার্মেন্টস পণ্য কোন দেশ কতো দামে নিতে চায়। আমরা এখানে বসেই সারাপৃথিবীর বাজার এবং নিজেদের বাজার দেখতে পারবো। তখন আন্ডার ইনভয়েসিং এবং ওভার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ থাকবে না।
সেমিনারে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান। তিনি বলেন, আমাদের বাজারে জেনে-বুঝে বিনিয়োগ করা বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কম। আমরা মোটামুটিভাবে মানুষের কথা শুনে বিনিয়োগ করে। এটা আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়া এখানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং দক্ষ জনবলের সংখ্যা কম।
তিনি বলেন, আমাদের বাজারে অপর্যাপ্ত পলিসি সার্পোর্ট। ব্যাংকের ৬-৯  সুদের হার আছে। এর অর্থ হলো আমি ব্যাংক থেকে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবো। কিন্তু বড় কোম্পানিগুলো ব্যাংকের কাছে গেলে ৮ শতাংশ সুদেও ঋণ দেবে। তখন কি তারা পুঁজিবাজারে যাবে। পুঁজিবাজারে আসলে তাকে এর থেকে বেশি হার লভ্যাংশ দিতে হবে।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন, আমাদের দেশের অর্থনীতির আকার অনুযায়ী কমোডিটি এক্সচেঞ্জ নেই। খুব তাড়াতাড়ি আমরা ভারতের মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবো। আমরা ইতোমধ্যে রুলস করে বিএসইসির কাছে পাঠিয়েছি। বিএসইসি অনুমোদন দিলে আমরা আশা করছি শিগগিরই কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করতে পারবো।
সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে ইআরএফের সাবেক সভাপতি সুলতান মাহমুদ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বক্তব্য রাখেন।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

ফেনী মুক্ত দিবস  কাল : সবাই ছুটছিল ফেনী কলেজ বধ্যভূমিতে

বিশ্বকাপ-প্রিভিউ: শেষ ১৬’র শেষ ম্যাচে মুখোমুখি অল ইউরোপিয়ান পর্তুগাল-সুইজারল্যান্ড