ভিতরে

গোপালগঞ্জে আগাম আমনে কৃষকের আয় বৃদ্ধি

॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ২৬ নভেম্বর, ২০২২ : আগাম আমন কৃষকের আয় বাড়িয়েছে। তাই এ ধান নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। প্রচলিত আমন ধানের তুলনায় এ জাতের ধান দেড় মাস আগে পাকে। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন উচ্চ ফলনশীল আগাম আমনের জাত বিনাধান-১৬ ধানের বাম্পার ফলন পেযেছে। কৃষক উচ্চমূল্যে খড় বিক্রি করছেন। এতে তাদের বছরে ৩ থেকে ৪ টি ফসল আবাদের সুযোগ সৃস্টি হয়েছে। আগামীতে লাভজনক এ জাতের ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে  গোপালগঞ্জের কৃষক।
বিনা গোপালগঞ্জ উপকেন্দ্র সূত্রে জানাগেছে, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর, সুকতাইল, জালাবাদ ও কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর, বেথুড়ি, ফুকরা ইউনিয়নের অন্তত ৫ বছর ধরে এ ধানের আবাদ হয়ে আসছে। এ বছর জেলার ৩ শ’ কৃষক ১৫০ হেক্টর জমিতে বিনাধান-১৬ আবাদ করেছেন। প্রতি হেক্টরে এ জাতের ধান ৬ টন ফলেছে। প্রচলিত আমনের তুলনায় এ  ধান দেড় মাস আগে পেকেছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পাইকেরডাঙ্গা গ্রামের কৃষক সুমন খান বলেন, প্রচলিত আমন ধান চাষ করে সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ টন ফলন পাওয়া যায়। এ ধান পাকে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে। সেখানে বিনাধান-১৬ জুল্ইা মাসে রোপণ করেছি। চলতি মাসের প্রথমেই এ ধান পেকেছে। আমরা এধান কাটছি। প্রতি হেক্টরে এ জাতের ধান ৬ টন ফলন দিয়েছে। বাম্পার ফলনের পাশাপাশি আমরা বেশি দামে খড় বিক্রি করতে পারছি। স্বল্প জীনকাল সম্পন্ন এ ধানের আবাদ করে আমরা একই জমিতে বছরে ৩ থেকে ৪টি ফসল ফলিয়ে লাভবান হচ্ছি।
একই গ্রামের কৃষক  মাহাতাব উদ্দিন বলেন, এ ধানের ফলন ভালো। ধান উৎপাদনে সময় কম লাগে। চাল সরু। বাজারে এ ধান একটু বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তাই আগামীতে আমরা লাভজনক এ ধানের চাষ করবো।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেবদাস মল্লিক বলেন,বিনাধান-১৬ স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন ও উচ্চ ফলনশীল। এ জাত গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্র থেকে নিয়ে কৃষক ৫ বছর আগে আবাদ শুরু করে। তারা এ ধানের বীজ সংরক্ষণ করে  প্রতিবছর ধানের আবাদ বৃদ্ধি করছে। এতে তাদের আয় বাড়ছে। তাই কৃষকের কাছে এ ধানের জাত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
বিনা গোপালগঞ্জ উপকেন্দ্রের ইনচার্জ ড. মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, কৃষক ও কৃষির উন্নয়নে আমরা মাঠ গবেষণার কাজ করে যাচ্ছি। কৃষিকে বাণিজ্যিকি করণে আমাদের চেষ্টা আব্যাহত রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমরা কৃষকেরও ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। তাই কৃষক আমাদের বীজ,প্রযুক্তি, পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ নিয়ে আয় বৃদ্ধি করছেন।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের ডিডি ড. অরবিন্দু কুমার রায় বলেন, বিনাধান-১৬ এর বদৌলতে কৃষক এক জমিতে বছরে ৩ থেকে ৪টি ফসল করতে পারছেন। ফলে তারা অর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। বিনার শস্য বিন্যাস প্রদর্শনীর মাধ্যমে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এ প্রযুক্তি গ্রহণ করে কৃষক অধিক সফল ফলিয়ে লাভবান হচ্ছেন।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ফসলের নিবিড়তা বাড়িয়ে কৃষকের আয় আমরা দ্বিগুণ করে দিতে চাই। কৃষকরা যাতে বছরব্যাপী ফসল আবাদের মাধ্যমে আয় বৃদ্ধি করে আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারে সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। তাই কৃষককে বিনাধান-১৬ আবাদে উদ্বুদ্ধ করণের মাধ্যমে মাটির উর্বরতা ঠিক রেখে ২ ফসলের জমিতে ৩ ফসল ও ৩ ফসলের জমিতে ৪ ফসল ফলানোর কালকৌশল ও প্রযুক্তি প্রদান করছি।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

বগুড়ায় ১২ লক্ষাধিক মেট্রিকটন আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ

নওগাঁয় জংলী বেগুনের সাথে হাইব্রিড জাতের টমেটোর চারা গ্র্যাফটিং করে সফলতা