ভিতরে

জহিরুলের ড্রাগনের বাগান হাতছানি দিচ্ছে জাজিরার কৃষি অর্থনীতির অপার সম্ভাবনার

॥ এস এম মজিবুর রহমান ॥
শরীয়তপুর, ৭ অক্টোবর, ২০২২ (বাসস) : জেলার জাজিরার বড় গোপলপুর ইউনিয়নের জহিরুলের ড্রাগনের বাগান হাতছানি দিচ্ছে উপজেলার সম্ভাবনাময় কৃষি অর্থনীতির। এখানকার মাটি বেলে-দোআঁশ হওয়ায় ড্রাগন ফল চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী হওয়ায় তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোক্তা। উচ্চমূল্যের এ ফসল চাষের মাধ্যমে জাজিরাসহ এ অঞ্চলের বাণিজ্যিক কৃষি পাবে নতুন মাত্রা পাবে বলে বলছেন কৃষকসহ স্থানীয় কৃষি বিভাগ। জহিরুলের তিনটি বাগানের ৬ হাজার গাছ থেকে আগামী মৌসুমে ৩৬ হাজার কুশি থেকে ৫’শ থেকে ৬’শ মণ ফলন পাওয়ার আশা করছেন এ উদ্যোক্তা।
জাজিরা উপজেলার বড় গোপালপুর ইউনিয়নের জহিরুল ইসলাম মাদবর বাসস’কে বলেন, নব্বই দশকের মাঝামাঝি সৌদি আরবে গ্রীন হাউজে সবজি চাষের সাথে সম্পৃক্ত থাকা অবস্থায় স্বপ্ন দেখেছিলাম বাংলাদেশে ফিরে সম্ভাবনাময় কৃষি উদ্যোক্ত হওয়ার। দীর্ঘদিন পরে হলেও কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় ২০২১ সালের নভেম্বরে ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চারা সংগ্রহ করে ৮০ শতক জমির উপরে গড়ে তুলি তিনটি ড্রাগনের বাগান। বর্তমানে আমার বাগানে ৬ হাজার ড্রাগন গাছ রয়েছে। চারা রোপণের আট মাসের মাথায় গত আগস্ট মাসের শেষের দিকে যখন ড্রাগন গাছে ফুল আসতে শুরু করে, তখন এ ফুল যেন আমাকে সফলতার হাতছানি দিতে থাকে আমার স্বপ্ন পূরণের। গত দুই সপ্তাহ থেকে কিছু কিছু ফল পাকতে থাকায় আমি আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে পড়ি। আমাদের অজো পাড়াগাঁয়ের মানুষ যে ফল শুধু টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছে চোখের সামেন সেই ফল দেখতে পেয়ে এবং হাতে ধরে ছিড়ে খেতে পেরে এলাকার মানুষও আনন্দিত। যা আমাকে পৌছে দিয়েছে গৌরবময় তৃপ্তির ঠিকানায়। এলাকার মানুষকে সহজে এ ফলের স্বাদ গ্রহণ করার সহজ সুযোগ হিসেবে আকার ভেদে প্রতি কেজি ২’শ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি করছি। প্রথম বছর হিসেবে এ বছর ফলন খুব বেশি না হলেও আগামী বছর এ ৬ হাজার গাছ থেকে যখন কুশি ৬গুণ  বেড়ে ৩৬ হাজার হবে, যদি কোন বড় প্রাকৃতিক সমস্যা না হয় তখন ৫’শ থেকে ৬’শ মণ ফলন পাব ইনশাআল্লাহ্। আর আমি তখনই হব   চ’ড়ান্ত সফল।
একই এলাকার নতুন কৃষি উদ্যোক্ত মো: হাবিবুর রহমান মাদবর বলেন, জহিরুল কাকা’র সফল ড্রাগনের বাগান দেখে এখন আমিও বাগান করার উদ্যোগ নিয়েছি। প্রথমে কাকা যখন বাগান শুরু করে তখন এটা আমার কাছে পাগলামি মনে হয়েছিল। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে যখন ড্রাগন ফল দেখতে ও খেতে পারছি তখন আমার মতো এলাকার অনেক শিক্ষিত বেকার যুবকের মধ্যেও স্বপ্ন বুনছে এ ড্রাগন। 
জাজিরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: জামাল হোসেন বলেন, জাজিরার বেলে-দোআঁশ মাটি উচ্চমূল্যের এ ড্রাগন ফল চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে জাজিরা অঞ্চলে সম্ভাবনাময় এ ড্রাগন চাষ বদলে দিতে পারে কৃষি অর্থনীতির চিত্র। নতুন উদ্যোক্তাদের আমরা কৃষি বিভাগ কারিগরিসহ সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে সফলতার ঠিকানায় পৌছে দিতে সর্বদা প্রস্তুত রয়েছি। ড্রাগন বাগান বৃদ্ধির ফলে শুধু জাজিরা অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিরই উন্নয়ন হবে না, সৃষ্টি হবে নতুন কর্মসংস্থানের খাত।   

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

বাংলাদেশের অর্থনীতি বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

কুমিল্লায় হলুদ চাষে আগ্রহ বাড়ছে