ভিতরে

নবনির্মিত ব্রিজের মাধ্যমে রাঙ্গামাটি শহরের সাথে সংযুক্ত ৩টি গ্রামের মানুষ

 সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের আওতায় নব নির্মিত ব্রিজের মাধ্যমে দীর্ঘ ৫০ বছর পর রাঙ্গামাটি শহর থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা রিজার্ভবাজার পুরানবস্তী ও ঝুলুইক্ক্যাপাহাড় পাহাড়ের ৩টি গ্রামের হাজার মানুষ সংযুক্ত হয়েছে রাঙ্গামাটির মূল শহরের সাথে। 
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে নব নির্মিত দৃষ্টিনন্দন ওয়াই আকৃতির ব্রিজের মাধ্যমে শহরের সাথে সংযুক্ত হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে এলাকাবাসীর।  
অনেক বছর নৌকা, সাম্পানসহ বোট যোগে যাতায়াত করতে হতো এ অঞ্চলের ৩টি গ্রামের হাজার মানুষকে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে নির্মিত এ সংযোগ সেতুর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ সংযোগ সেতু নির্মাণের ফলে এ অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিসহ শিক্ষা,চিকিৎসাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা বেড়েছে। যে কোন সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক এ সংযোগ সেত দুটি উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন বাস্তবায়নকারী সংস্থা পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়নবোর্ড। 
১৯৬০ কর্ণফুলী নদীতে কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য কাপ্তাই বাঁধ দেয়ার ফলে তৎকালীন সময়ে চাকমা রাজার বাড়িসহ রাঙ্গামাটি শহরের মূুল অংশ পানিতে ডুবে শহর সংলগ্ন কিছু কিছু এলাকায় সৃষ্টি হয় ছোট বড় দ্বীপ। সেরকমই রাঙ্গামাটি শহরের কাছাকাছি থাকলেও রিজার্ভ বাজার ঝুলুইক্ক্যাপাহাড়, পুরানবস্তি ছিলো অনেকটা বিচ্ছিন্ন। 
দীর্ঘ সময় নৌকা বা বোটে করে তাদের মূল শহরে আসতে হতো। এসব এলাকায় বসবাসরত ৩-৪টি গ্রামের হাজার মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ওয়াই এঙ্গেলের এ সেতু দুটির নিমার্ণ কাজ শুরু করে। বর্তমানে সেতুটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। 
দীর্ঘ প্রায় ৫০বছর পর মূল শহরের সাথে সংযুক্ত হতে পারায় খুশি এলাকাবাসী। সংযোগ সেতু পেয়ে উচ্ছ্বসিত এ এলাকার ৩টি গ্রামের হাজার মানুষ। 
রিজার্ভবাজার পুরানবস্তী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ আব্দুল মান্নান বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে(বাসস) জানান, ব্রিজ না থাকার কারণে দীর্ঘসময় ধরে এখানকার ৩টি গ্রামে বসবাসকারী জনসাধারনকে বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে পড়তে হতো।
বর্তমানে ব্রিজ নির্মাণ হওয়ায় এ অঞ্চলের  যোগাযোগ, শিক্ষা,চিকিৎসাসেবাসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পেতে অনেক সহজ হবে। দীর্ঘ বছর পর এ ব্রিজ নির্মিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে(বাসস) জানান,  ২০১৩ সারের ২৩  ফেব্রুয়ারি রাঙ্গামাটি সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদুটি  সংযোগ সেতুসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। তার নিরলস পরিশ্রমের বদৌলতেই রাঙ্গামাটির মূল অংশের সঙ্গে যুক্ত হতে যাচ্ছে বিচ্ছিন্ন রিজার্ভ বাজার ঝুলুইক্ক্যাপাহাড় ও পুরাতনবস্তী। 
বর্তমানে এ সংযোগ সেতুর কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। তিনি জানান, এ সেতুটি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার নামেই নামকরণ করাসহ প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক এ ব্রিজ দুটি উদ্বোধনের  বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
সব কিছু ঠিক থাকলে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর এ ব্রিজ দুটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে নির্মিত এ ‘ওয়াই’ আকৃতির সেতুটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৪২০ মিটার এবং প্রস্থ প্রায় ৪.৫মিটার। সেতুটির নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। 
এ সংযোগ সেতু ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়নবোর্ডের অর্থায়নে রাঙ্গামাটির আর্জেন্টিনা ব্রিজসহ আরো কয়েকটি ব্রিজ ও উন্নয়নমূলক কাজ প্রধানমন্ত্রী একই সাথে উদ্বোধনের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়নবোর্ড। 
দেখতে অনেকটা ওয়াই আকৃতির একটি মাত্র ব্রিজটি দেখতে প্রতিদিনই ছুটে যাচ্ছে পর্যটকসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ। দুই দ্বীপের সেতুবন্ধনের কারণে পর্যটকদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করছে ব্রিজ দুটি।
প্রত্যন্ত পাহাড়ী এলাকায় নির্মিত এসব ব্রিজ সাধারণ জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নসহ শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা স্থানীয়দের।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

মেঘনা উপজেলায় ’এসো মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনি’

জয়পুরহাটে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ উপলক্ষে কর্মসূচি গ্রহণ