ভিতরে

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য উজ্জীবিত বাংলাদেশ

অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডসহ টানা তিনটি সিরিজ জয়ের মধ্য দিয়ে আত্মবিশ্বাসকে  সঙ্গী করেই   সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ওমানে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মাঠে নামবে  বাংলাদেশ।
যদিও উইকেটের সুবিধা নিয়ে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয় করেছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু দুই প্রতিবেশী দেশের  বিপক্ষে ১০টি ম্যাচের মধ্যে সাতটিতে জয় দলের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে বলে আশা করছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে  এটা  সেরা প্লাটফর্ম মনে করছে  টিম ম্যানেজমেন্ট।
টাইগাররা এখন পর্যন্ত ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত সংস্করণের বিশ্বকাপে ২৫ টি ম্যাচ খেলেছে এবং মাত্র পাঁচটিতে জিতেছে। এর মধ্যে বাছাই পর্ব থেকেই চারটি জয় এসেছে। বাছাই পর্বের বাইরে  ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছে তারা।
বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রথম পোস্টার বয় মোহাম্মদ আশরাফুলের ব্যাটিং নৈপুন্যে জিতেছিলো টাইগাররা। ২৭ বলে ৬১ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। মেরেছেন  ৭টি চার ও ৩টি ছক্কা । ঐ ম্যাচে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেছিলেন আফতাব আহমেদও। ৪৯ বলে ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় অপরাজিত ৬২ রান করেছিলেন তিনি।
ঐ ঐতিহাসিক জয়ের পর ধারাবাহিকতা ছিলো না বাংলাদেশের। ২০০৯, ২০১০, ২০১২, ২০১৪ ও ২০১৬র আসরে জয়হীন ছিলো টাইগাররা।
এবার দলের দায়িত্ব মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের হাতে। সাথে থাকছে এক ঝাঁক তরুণ ক্রিকেটার এবং সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকার, মুস্তাফিজুর রহমান এবং লিটন দাসের অভিজ্ঞদের মিশ্রন। যে কোন পরিস্থিতিতে যেকোন দলকে হারানো লক্ষ্য বাংলাদেশের। কিন্তু তারপরও এটি একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে স্পোর্টিং উইকেটে তাদের ভালো খেলার সামর্থ্য একেবারেই প্রশ্নবিদ্ধ।
তাই চ্যালেঞ্জ নিয়েই আজ রাতে বিশ্বকাপের জন্য ওমান যাচ্ছে বাংলাদেশ। সংযুক্ত আরব আমিরাতে শ্রীলংকা ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার আগে ওমানে অনুশীলন শিবির করবে টাইগাররা। আইপিএল খেলতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকা সাকিব ও মুস্তাফিজ ৯ অক্টোবর দলের সাথে যোগ দিবেন।
কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিয়ে বিশ্বকাপের দু’সপ্তাহ আগে ওমান যাচ্ছে মাহমুদুল্লাহ এন্ড কোং।
টি-টোয়েন্টি পারফরমেন্সে ধারাবাহিক ব্যর্থতা এবং সমালোচনার পরও এবারের বিশ্বকাপে ভালো কিছু করার আশা মাহমুদুল্লাহরও।
দলে বেশ কিছু অলরাউন্ডার ও বোলিং শক্তির জন্য আত্মবিশ্বাসী অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘আমাদের শক্তির দিক হলো অলরাউন্ডার ও বোলিং বিভাগ।’
মাহমুদুল্লাহ আরও বলেন, ‘এছাড়া আমাদের ব্যাটিংও ভালো এবং দলের ভারসাম্যও দারুণ। আমাদের পাঁচ বা ছয় জন অলরাউন্ডার আছে যারা ব্যাট এবং বল উভয় ক্ষেত্রেই অবদান রাখতে পারে। আমাদের ফাস্ট বোলাররা এই মুহূর্তে ভালো পারফর্ম করছে। স্পিন সব সময়ই আমাদের শক্তি। যদি তারা তাদের স্বাভাবিক পারফরমেন্স করতে পারে, আশা করি আমরা ভাল ফলাফল পাবো।’
সম্প্রতি বাংলাদেশ দলের  পারফরমেন্স খুবই ভালো। ১৩ ম্যাচের মধ্যে ৯টিতেই জিতেছে তারা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের  স্মৃতি আছে তাদের। বিশ্বের দুই পরাশক্তিকে হারানোর আগে বিদেশের মাটিতে জিম্বাবুয়েকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছিলো টাইগাররা।
দলের সেরা তারকা সাকিব আল হাসান বিশ্বকাপে ভালো করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমরা এই বিশ্বকাপে একটি ভালো সুযোগের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আমাদের প্রস্তুতি খুব ভালো হয়েছে। এর বড় কারণ হলো আমরা শেষ তিনটি সিরিজ জিতেছি। জয়ের কোন বিকল্প নেই। যখন একটি দল জিতে, তখন জয়ের মানসিকতা থাকে, এটি অন্য মাত্রার আত্মবিশ্বাস দেয়। আপনি যদি খুব ভালো খেলেন এবং একটি ম্যাচ হারেন, তাহলে আপনার এই আত্মবিশ্বাস থাকবে না। আমরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিশ্বকাপে যেতে চাই।’
আগের ছয় আসরেই খেলেছেন সাকিব, মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ। এবার এই তিনজনের দায়িত্ব অন্য সবার চেয়ে বেশি। আবার দলে এমন দু’জন খেলোয়াড় আছেন যাদের বিশ্বকাপ জয়ের অভিজ্ঞতা আছে, তারা হলেন- শামীম পাটোয়ারী এবং শরিফুল ইসলাম। যদিও সেটি ছিল অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। এই প্রথম বড় বিশ্বকাপে খেলবেন তারা।
লিটন দাস, মুস্তাফিজের মত প্রতিভা বাংলাদেশ দলে রয়েছে। কিন্তু তাদের কেউই ধারাবাহিক নন। তবে তারা তাদের নির্দিষ্ট দিনে জ্বলে উঠতে পারেন।
নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাকের  বিশ্বাস বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ভালো করবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের সেরা দল পেয়েছি যা বিশ্বকাপে যাচ্ছে। আশা করছি ভালো ফল পাওয়া যাবে। কিন্তু আমি বলবো না দলকে একটি নির্দিষ্ট অবস্থানে দেখতে চাই। ভালোর কোন শেষ নেই। তবে আমি বলবো, দল চ্যাম্পিয়ন হলে আমি খুশি হবো। আমি চাই বাংলাদেশ দল ভালো ক্রিকেট খেলুক।’
বাছাই পর্বে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে স্কটল্যান্ড-যৌথ আয়োজক ওমান ও পাপুয়া নিউ গিনির। ১৭ অক্টোবর স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে মাহমুদুল্লাহর দল।  এরপর ১৯ ও ২১ অক্টোবর ওমান ও পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে লড়বে তারা।
প্রথম রাউন্ডের বাঁধা টপকাতে পারলে সুপার ১২তে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে বাংলাদেশ।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের সকলের করোনা নেগেটিভ

ভারত পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ