ভিতরে

নড়াইলে ক্ষীরাই-শশা চাষিদের ভাগ্য বদলের গল্প

সদরের সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের চুনখোলা গ্রামের ভূমিহীন জাহান্দার বিশ্বাস (৪০) দীর্ঘ ১১ বছর অন্যের জমি বর্গা নিয়ে শশা ও ক্ষীরাই-এর চাষ করছেন। এ কাজে তার স্ত্রী রূপালী বেগমও সরাসরি সহায়তা করে থাকেন। এ ফসল বিক্রি করে তিনি  নিজ গ্রামে ১৫ শতক জমি কিনে একটি আধা পাকা ঘরও নির্মাণ করেছেন। বর্তমানে তিনি প্রায় ১ একর জমিতে শশার চাষ করছেন। প্রতি বছর এ চাষ থেকে প্রায় ১ লাখ টাকা ঘরে তোলেন।
পার্শ্ববর্তী বড়গাতি গ্রামের প্রান্তিক চাষি প্রদীপ বিশ্বাস (৩৬) ৮ বছর ধরে ৬০ শতক জমি লিজ নিয়ে শশা ও ক্ষীরাই-এর চাষ করছেন। বছরে তিনি খরচ বাদে  ৫০-৬০ হাজার টাকা ঘরে তোলেন।
একই গ্রামের প্রান্তিক চাষি ভূবন বিশ্বাস (৩২) ৬ বছর ধরে ৫০ শতক জমি বর্গা নিয়ে শশার চাষ করছেন। প্রতি বছর তিনি প্রায় ৪০-৪৫ হাজার টাকা লাভ করেন। নড়াইলে এভাবে অনেকেই ক্ষীরাই-শশার আবাদ করে এখন ভাগ্য বদল করছেন। অল্পদিনেই ফলন এবং ভালো দাম পাওয়ায় দিন দিন এর আবাদ বাড়ছে। প্রতিদিন দেড় থেকে দু’শ মন শশা ও ক্ষীরাই জেলার হাট-বাজারে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে জেলায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কৃষক এ চাষের সাথে যুক্ত। জেলার চাহিদা মিটিয়ে খুলনা, যশোর, রাজশাহী এবং ঢাকায় এ শশা ও ক্ষীরাই রফতানি হচ্ছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ১শ ৫০ হেক্টর জমিতে শশা ও ক্ষীরাই-এর চাষ হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ১০ হেক্টর বেশী। সদরের সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের শোভারঘোপ, বড়গাতি, চুনখোলা,তারাপুর বিছালী ইউনিয়নের বিছালী, চাকই, আড়পাড়া, মির্জাপুর, মধুরগাতি, কলোড়া ইউনিয়নের বিড়গ্রাম, মুশুরি, কলোড়া,আগদিয়া এবং ভদ্রবিলা ইউনিয়নের ভদ্রবিলা, মিরাপাড়া ও পাইকাড়া গ্রামেই প্রধানত বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এ শশা ও ক্ষীরাই চাষ হচ্ছে।
বিছালী গ্রামের শশা ও ক্ষীরাই ব্যাপারি মো. মিঠু মোল্যা (৫০) বলেন, বাজারে এখন ৫শ থেকে ৬শ টাকায় মণ বিক্রি হচ্ছে। এর আগে চাষিরা ৮শ-৯শ টাকাও বিক্রি করেছেন।  নড়াইলের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন নড়াইল থেকে ২০টি ছোট ট্রাক ১০ হাজার কেটি শশা ও ক্ষীরাই যশোর, খুলনা, রাজশাহী ও ঢাকায় রপ্তানি করা হয়।
সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমিন বলেন, সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নে প্রায় ৫শ চাষি এ শশা ও ক্ষীরাই-এর সাথে সমন্বিতভাবে মরিচ, ধুন্দল ও চাল কুমড়ার চাষ করছেন। ফলে এসব চাষিরা বেশ লাভবান হচ্ছেন।
নড়াইল কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, জেলার দক্ষিণাঞ্চলের মাটি এবং জমির শ্রেণী ও ক্ষীরাই চাষের জন্য উত্তম। আর কিছু দিন কৃষকেরা পর গ্রীষ্মকালীন শশা ও ক্ষীরাইয়ের জাত মারা যাবার পর শীতকালীন জাতের বীজ বপন করবেন। একজন কৃষক ৩৩ শতকের এক বিঘা জমিতে ৭৫-৮০ দিনের এ ফসল চাষ করে খরচ বাদে  ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা লাভ করেন।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড সংক্রান্ত নতুন বিধি-নিষেধ আরোপের ‘খুব সম্ভাবনা’ রয়েছে : বাইডেন

জয়পুরহাটে ২২ হাজার ৫১৩ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন