ভিতরে

বাংলাদেশ সম্পর্কে যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার প্রতিবেদনটি গ্রহণযোগ্য নয় : মোমেন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আজ বলেছেন, ঢাকা যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ ও ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) থেকে প্রকাশিত মানবাধিকার প্রতিবেদনে উল্লেখিত বাংলাদেশ সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি ইস্যু নিয়ে যা বলা হয়েছে তা ‘গ্রহণ’ করেনি, কারণ ওগুলো ‘তথ্য ভিত্তিক’ নয়। 
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অপব্যাখ্যা করে তিনি ‘গৃহবন্দি’ রয়েছেন এমন উল্লেখ করে প্রকাশিত প্রতিবেদন সম্পর্কে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যদি ওই প্রতিবেদনটি তথ্য ভিত্তিক হতো, তবে তা আমাদের জন্য সহায়ক হতো। কিন্তু, যেহেতু এটি ভুয়া, তখন এটি উদ্দেশ্যমূলক বলে মনে হতে পারে, এটি ভাল নয়।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) প্রকাশিত হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসি রিপোর্ট-২০২০ এর বাংলাদেশ অধ্যায়ে উল্লেখিত ইস্যুগুলো সম্পর্কে অসন্তোষ ব্যক্ত করতে ঢাকাস্থ ব্রিটিশ ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার জাভেদ প্যাটেলকে এখানে পররাষ্ট্র দফতরে তলব করার একদিন পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ মন্তব্য করলেন।
ব্রিটিশ দূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, (খালেদা জিয়া) তার বাড়িতে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন এবং বিদেশে ভ্রমণ করতে পারবেন না, এই শর্তে সরকার ২০২০ সালের মার্চ মাসে তার সাজা স্থগিত করে তাকে ‘মুক্তি’ দেয়।
ড. মোমেন বলেন, খালেদা জিয়া ‘গৃহবন্দি’ নন। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে যে, প্রাথমিকভাবে খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়া হয়েছিল এবং পরবর্তীতে দুইবার তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। 
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এ ধরনের আইনি বিষয়ে যে কোন ধরনের বিভ্রান্তি এড়াতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার জন্য ব্রিটিশ দূতের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে। 
মোমেন আরো বলেন, যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশ সম্পর্কে  আরো কিছু বিষয়ের উল্লেখ করা হয়েছে যা তথ্য ভিত্তিক নয়। তিনি বিশেষ করে বাংলাদেশে ধর্ষণের ঘটনার সংখ্যা সম্পর্কে যুক্তরাজ্যের রিপোর্টের উদ্বেগের বিষয়টি উল্লেখ করেন।  
এ প্রসঙ্গে দু’দেশের তুলনামূলক উপাত্ত তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে গত বছর প্রায় ৯ হাজার ধর্ষণের ঘটনার কথা জানা গেছে। অথচ, ব্রিটেনে ২০২০ সালে প্রায় ৭ লাখ ৩৩ হাজার ধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। 
যুক্তরাজ্যের জনসংখ্যা বাংলাদেশের অর্ধেক উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকাকে এ ব্যাপারে পরামর্শ দেয়ার আগে বৃটেনকে নিজেদের পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানোর পরামর্শ দেন।
ড. মোমেন বলেন, ব্রিটিশ ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার আশ্বাস দিয়েছেন যে, তিনি ঢাকার এই অসন্তোষের কথা তার সরকারকে জানাবেন। তিনি এ ব্যাপারেও সম্মত হয়েছেন, যে কোন মানবাধিকার প্রতিবেদন তথ্য ভিত্তিক হওয়া উচিৎ।  
গত রোববার বৃটিশ দূতকে মন্ত্রণালয়ে তলব করার পর পররাষ্ট্র দফতরের পশ্চিম ইউরোপ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন শাখার মহাপরিচালক ফাইয়াজ মুর্শিদ কাজী তার সঙ্গে কথা বলেছেন।
প্যাটেলকে তলব করার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, যুক্তরাজ্য সরকারের যে কোন দাপ্তরিক তথ্যে বাংলাদেশ সরকার অথবা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সম্পর্কে কোন ধরনের ইঙ্গিতপূর্ণ বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকা উচিৎ। 
ঢাকা এই বিবৃতিতে ব্রিটিশ প্রতিবেদনে উল্লেখিত বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংখ্যার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা সরকারি নথি বা প্রতিবেদনে উল্লেখ করার ক্ষেত্রে তথ্যের প্রামাণ্য সূত্রের ব্যবহারের গুরুত্বের ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন। 
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্রিটিশ ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মানবাধিকার ও গভর্ন্যান্সের ব্যাপারে প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতির মাধ্যমে একটি গঠনমূলক আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন।
তিনি বাংলাদেশকে একটি ‘পরিপক্কতামুখী গণতন্ত্র’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে বলেন, ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান নেয়নি।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত শিথিল : ২৩ জুলাই থেকে ফের কঠোর বিধি-নিষেধ

দেশের ১ কোটি ৪ লাখ ১৩ হাজার ৭০৬ জন মানুষ টিকার আওতায় এসেছে