ভিতরে

সিলেটে সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে অক্সিজেন চাহিদা বেড়েছে

সিলেটে করোনা সংক্রমন বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে অক্সিজেনের চাহিদা কয়েকগুন বেড়েছে। হাসপাতালে চাহিদা অনুযায়ি অক্সিজেন মেলানো যাচ্ছে না। 
গত কয়েকদিন যাবত সিলেট অঞ্চলে প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিটি হাসপাতালে রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদের অধিকাংশই শ্বাস কষ্টের রোগী। বেশিরভাগ রোগীদের চিকিৎসার জন্য অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে গিয়ে এখন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে স্বাভাবিকের চেয়ে অক্সিজেন চাহিদা কয়েকগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে সিলেটে প্রতি সপ্তাহে যেখানে ৫ হাজার ঘনমিটার অক্সিজেনের চাহিদা ছিলো, এখন ১ থেকে ২দিনে সেই পরিমাণ অক্সিজেনের প্রয়োজন হচ্ছে। এতে অক্সিজেনের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সরবরাহকারীদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। আগে যেখানে প্রতিদিন ১৪০ থেকে ১৫০ টি সিলিন্ডার অক্সিজেনের চাহিদা ছিলো, এখন সেখানে ৮৫০ থেকে ৯০০ এর বেশি অক্সিজেন সিলিন্ডারের প্রয়োজন হচ্ছে। 
জানা যায়, স্পেক্ট্রা কোম্পানীসহ আরো দুটি প্রতিষ্ঠান সিলেটে অক্সিজেন সরবরাহ করে আসছে। আগে যেখানে এক গাড়ি অক্সিজেন হলেই সিলেটে চলতো। সেখানে এখন প্রতিদিন তাদের চার গাড়ি সিলিন্ডার অক্সিজেন পরিবহন করছে। বর্তমান সময়ে হাসপাতাল গুলোতে অক্সিজেনের চাহিদার পাশাপাশি ব্যাক্তিগত পর্যায়েও অক্সিজেনের চাহিদা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে,অনেকেই করোনাক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা না নিয়ে নিজের বাসা বাড়িতে চিকিৎসা গ্রহন করছেন, এতে অক্সিজেন সিলিন্ডার ক্রয়করে বাড়িতে নিয়ে প্রয়োজন মেঠাচ্ছেন বলে জানান স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টরা। 
তারা জানান, পূর্বে বেসরকারি যেসব হাসপাতালে যেখানে দিনে ৫-৬টি অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রয়োজন ছিল। এখন সেখানে কোন কোন দিন ৩০-৪০ টি অক্সিজেন সিলিন্ডারেরও প্রয়োজন দেখা দেয়। সিলেটে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা জানান, পূর্বে প্রতিদিন তাদের ৭০/৮০ সিলিন্ডার অক্সিজেন প্রয়োজন হতো, এখন সেখাানে ৫০০ থেকে ৬০০ সিলিন্ডার অক্সিজেন সরবরাহ করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, যে প্রতিষ্ঠান ১৫টি সিলিন্ডার নিতো, সেই প্রতিষ্ঠানকে এখন ২০০ সিলিন্ডারের চাহিদা রয়েছে, সে অনুযায়ী তাদেরকে সরবরাহ করতে হচ্ছে। সরবরাহ বাড়ানোর জন্য তারা ইতোমধ্যে ১টির স্থানে ৪-৫ টি গাড়িও ব্যবহার করছেন, সরবরাহ কাজে তারা জনবল বাড়িয়ে দিনরাত কাজ করছেন এবং সিলেটে অক্সিজেন সিলিন্ডারের স্টোরেজ ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। এদিকে, সিলেটে করোনা রোগীদের জন্য শহীদ ডাঃ শামছুদ্দিন আহমদ বিশেষায়িত হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ আবাসিক চিকিৎসক ডা. সুশান্ত কুমার মহাপাত্র জানান, ওই হাসতালে সেন্ট্রাল লিকুইড অক্সিজেনের পাশাপাশি সিলিন্ডার অক্সিজেনও তারা ব্যাবহার করছেন। তাদের হাসপতালে লিকুইড গ্যাস পুর্বে যেখানে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার লিটার প্রয়োজন হতো সেখানে এখন করোনা সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় প্রায় আড়াই হাজারের বেশি লিটার অক্সিজেনের ব্যাবহার হচ্ছে। পূর্বে ভর্তি রোগীদের মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ জনকে অক্সিজেন দিতে হতো। এখন ৭০ থেকে ৮০ জনকে দিতে হচ্ছে। রোগীদের মধ্যে অনেকের ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ লিটার অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় এ বিষয়ে বাসস’কে জানান, সিলেটে করোনার সংক্রমন অনেকগুন বেড়ে যাওয়ায় অক্সিজেন চাহিদাও অনেক বেড়েছে,তবে অক্সিজেন সংকট এখনো দেখা দেয়নি, তবে এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগ সহ সংশ্ল­ষ্ট সবাই সজাগ রয়েছেন। তিনি জানান, তারা ইতোমধ্যে সরবরাহকারী কোম্পানীগুলোর সাথে কথা বলেছেন। সিলেটে অক্সিজেন সরবরাহকারী স্পেক্ট্রার নতুন একটি প্ল্যান্ট আগামী কিছুদিনের মধ্যে চালু হবে। সিলেট ওসমানী ও সামছুদ্দিন হাসপাতালের নিজস্ব অক্সিজেন রিজার্ভ প্ল্যান্টসহ অক্সিজেনপূর্ণ প্রায় ৬শ’ সিলিন্ডার রয়েছে বলে তিনি জানান। সিলেটে উপ সহকারী সিভিল সার্জন ডাঃ জন্মেজয় দত্ত জানান, বর্তমান অবনতিশীল করোনা পরিস্থিতিতে সংক্রমিতদে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত রাখতে তারা সতর্ক রয়েছেন, তারা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছেন, প্রয়োজনীয় সকল বিষয় তারা যথযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে সমন্বিতভাবে তারা কাজ করছেন।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

অনলাইনে পশু বিক্রি এখন কুমিল্লা জেলা-উপজেলায়

ভার্জিন গ্যালাক্টিক প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর মহাকাশ ভ্রমণে যাচ্ছেন রিচার্ড ব্রানসন