ভিতরে

শিরোপা খরা দূর করলেন মেসি, ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা জিতে নিল আর্জেন্টিনা

অবশেষে জাতীয় দলের হয়ে শিরোপা খরা দূর করলেন আর্জেন্টাইন মহা-তারকা লিওনেল মেসি। আজ অনুষ্ঠিত কোপা আমেরিকার ফাইনালে এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ারএকমাত্র  গোলে ভর করে স্বাগতিক ব্রাজিলকে ১-০ ব্যবধানে  হারিয়েছে মেসির আর্জেন্টিনা। 
রিও ডি জেনেইরোর আকইকনিক মারাকানা স্টেডিয়ামে এই জয়ে দীর্ঘ ২৮ বছর পর বড় কোন শিরোপা  জয়ের অপেক্ষার অবসান হল আর্জেন্টাইনদের। একই  সঙ্গে নিজেদের মাঠে ২৫০০ দিনের অপরাজিত থাকার রেকর্ডটিরও অবসান ঘটল ব্রাজিলের। 
সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে বড় শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। ওই সময় ইকুয়েডরে অনুষ্ঠিত কোপার ফাইনালে দুর্দান্ত গাব্রিয়েল বাতিস্তুতার জোড়া গোলে মেক্সিকোর বিপক্ষে ২-১ গোলে জয়লাভ করেছিল আর্জেন্টিনা।
শুধু তাই নয়, নিজ মাটিতে অনুষ্ঠিত ছয় আসরের মধ্যে এই প্রথম  ট্রফি জয়ে ব্যর্থ হল ব্রাজিল। সেই সঙ্গে ৩৪ বছর বয়সি মেসির শিরোপা স্বপ্ন পুরণ হল। যদিও তার চেয়ে ৫ বছরের ছোট ব্রাজিলীয় তারকা নেইমারের শিরোপা ছুয়ে দেখার স্বাদ এখনো অপুর্নই রয়ে গেল। দুই বছর আগে তাদের মাটিতেই অনুষ্ঠিত কোপা শিরোপাটি সেলেকাওরা জয় করলেও ইনজুরির কারণে ফাইনালে খেলতে পারেননি নেইমার। যে কারণে শিরোপা উচিয়ে ধরার স্বপ্নও পুরণ হয়নি তার।
ম্যাচের ২২তম মিনিটে একটি আগ্রাসী ও ভয়াবহ আক্রমন থেকে গোল করে আর্জেন্টিনার জয় নিশ্চিত করেন  ডি মারিয়া। সতীর্থ রড্রিগো ডি পলের আড়াআড়ি ভাবে দেয়া ক্রসের বল বেশ ঠান্ডা মাথায় ব্রাজিলীয় গোল রক্ষক এডারসনের মাথার উপর দিয়ে দ্রুত গতিতে পোস্টে পাঠিয়ে দেন ৩৩ বছর বয়সি ডি মারিয়া। 
শেষ বাঁশি বাজার মাত্র দুই মিনিট আগে ব্যবধান দ্বিগুন করার সুযোগ পেয়েছিলেন মেসি। কিন্তু একেবারেই ফাকায় বল পেয়েও স্লিপ খেয়ে পড়ে যাওয়ায় গোল করা হয়নি রেকর্ড ছয় বারের ব্যালন ডি’অর খেতাব বিজয়ীর। এ সময় তার সামনে বাঁধা হিসেবে ছিলেন শুধুমাত্র ব্রাজিলয় গোল রক্ষক এডারসন। 
সেমি-ফাইনালে পেরুর বিপক্ষে জয় পাওয়া একাদশটিই অপরিবর্তিত রেখে আজ ফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মাঠে নামিয়েছিলেন ব্রাজিলীয় কোচ তিতে। অপরদিকে সেমি-ফাইনালের একাদশে ৫টি পরিবর্তন আনেন আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন ডি মারিয়া। যিনি সর্বশেষ কলম্বিয়ার বিপক্ষে বদলি হিসেবে মাঠে নেমে দলকে চাঙ্গা করে দিয়েছিলেন। 
এই ফাইনাল ম্যাচটিই কোপা আমেরিকার এবারের আসরের একমাত্র ম্যাচ, যেখানে মারাকানার মোট ধারণ ক্ষমতার ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৭ হাজার ৮০০ দর্শক প্রবেশের অনুমতি পেয়েছিল। করোনা মহামারির বর্তমান পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষের বেধে দেয়া নিয়ম রক্ষা করেই এই দর্শক প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রন করা হয়। 
এর আগে ম্যাচের ১৩তম মিনিটে প্রথম গোলের নিশ্চিত একটি সুযোগ এসেছিল ব্রাজিলের। মারকুইনহোসের দূরপাল্লার একটি পাসের বল হেডের সাহায্যে নেইমারের উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেন রিচার্লিসন। কিন্তু আর্জেন্টিনার দুই ডিফেন্ডারের বাঁধা টপেক সেটিকে গোলে পরিণত করা হয়নি পিএসজি তারকার। 
শুরুতে অবশ্য ¯œায়ুচাপে ঠাসা ম্যাচে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে কিছুটা পেশী শক্তি ব্যবহারেরও প্রবনতা দেখা যায়।
এ সময় আর্জেন্টিনাকে আগ্রাসী মেজাজে খেলতে দেখা গেলেও তাদের খেলার মধ্যে মানের কোন বালাই ছিল না। ব্রাজিলও ভাল কোন সুযোগ সৃস্টি করতে পারেনি। এমনকি ডি বক্সের বেশ কাছে থেকে ফ্রি কিক পেয়েও আর্জেন্টাইন দেয়াল ভাঙ্গতে ব্যর্থ হয়েছেন নেইমার। যদিও শেষ মুহুর্তে এসে স্বাগতিক দলকে প্রতিপক্ষের উপর কিছুটা চাপ প্রয়োগ করে খেলতে দেখা যায়। এ সময় এভারটনের ডিফ্লেক্টেড শটের বল ফিরিয়ে দেন আর্জেন্টাইন গোল রক্ষক এমিলানো মার্টিনেজ। 
ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই মাঠে শুয়ে পড়েন মেসি। পরে সতীর্থরা তার দিকে ছুটে এসে জড়িয়ে ধরেন এবং সঙ্গবদ্ধ হয়ে তাকে উপরের দিকে ছুড়ে মারতে মারতে বিজয় উৎসব পালন করেন।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

বাংলাদেশে ২০০ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ ইতালির : তাজুল

কোপা আমেরিকার শেষ ১০ শিরোপা জয়ী