ভিতরে

ফেনীতে অক্সিজেনের রিফিল বোতলের চাহিদা বেড়েছে তিনগুণ

জেলায় গতবছর করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরুতে মানুষ অতি উচ্চ মূল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনলেও রিফিল হয়েছে কম। কিন্তু চলতি বছর রিফিল বোতলের চাহিদা গতবছরের চেয়ে তিনগুণ বেড়েছে। এভাবে চাহিদা বাড়তে থাকলে অক্সিজেন সংকট দেখা দিতে পারে। আজ বুধবার এসব কথা জানালেন ফেনীতে অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবসায়ী রানা ট্রেডার্সের মালিক রানা।
রানা জানান, অক্সিজেন রিফিল করতে সিলিন্ডার ঢাকায় পাঠানো হলেও সময় মত পাওয়া যাচ্ছে না। সারাদেশ হতে সেখানে অক্সিজেন রিফিল করতে সিলিন্ডার যাচ্ছে। ফলে রিফিল করতেও সময় লাগছে। এতে ২শ’ খালি সিলিন্ডার পাঠালেও বিভিন্ন হাসপাতালের চাহিদা মেটাতে বারবার পরিবহন ব্যয় মেটাতে হচ্ছে। যে কারণে লাভের পরিবর্তে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
ফেনী শহরে তিনটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অক্সিজেন এর পরিবেশক হিসেবে কাজ করছে। অপর দুটি পরিবেশক হচ্ছে তুহিন এন্টারপ্রাইজ ও পপুলার ইঞ্জিনিয়ারিং। তাদের তথ্যমতে, ফেনীতে চলমান করোনা পরিস্থিতিতে প্রতিদিন আড়াইশো বেডসাইড অক্সিজেন সিলিন্ডার চাহিদা রয়েছে।
এর বাইরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে অক্সিজেন চাহিদা তাদের নিজস্ব পন্থায় সরবরাহ হয়ে থাকে। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া ইতোপূর্বে জানান, হাসপাতালে ৪শ’ বেডসাইড ও ১শ’ মেনিফোল্ড অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে।
হাসপাতালে নির্মিত অক্সিজেন ট্যাংক চালু হলে সেখানে অক্সিজেনের সংকট থাকবে না বলে জানান আরএমও।
ফেনীতে কোভিড-১৯ শনাক্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৯ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ফেনীর ১৯৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যার মধ্যে ৯৮টি পজিটিভ এসেছে। নমুনা অনুপাতে শনাক্তের হার ৫০ দশমিক ৫১ শতাংশ। এ সময়ের ব্যবধানে ফেনীতে করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৮০জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আজ বুধবার এসব তথ্য জানায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
একই সূত্র জানায়, আক্রান্তদের মধ্যে ৪ হাজার ৯ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। শনাক্তকৃত ব্যক্তির মধ্যে সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছে ফেনী সদরে ২ হাজার ৩৬৩ জন। যা মোট শনাক্তের ৪৭ দশমিক ১৭ শতাংশ। শনাক্তের দিকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দাগনভূঞা উপজেলা। আজ পর্যন্ত এ উপজেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৭৬৩ জন। এরপরে ছাগলনাইয়া উপজেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৭০৪ জন। সোনাগাজী উপজেলায় শনাক্ত হয়েছে ৫১৫ জন, পরশুরামে শনাক্ত হয়েছে ৩৪৩ জন। সর্বনি¤œ শনাক্ত হয়েছে ফুলগাজীতে ২৮০ জন। এছাড়া ফেনীর বাইরের রোগী রয়েছেন ৪১ জন।
শনাক্তের হার বৃদ্ধির পাশাপাশি ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ফেনী জেনারেল হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে তিন গুণের বেশি। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল খায়ের মিয়াজী জানান, হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৩০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছেন ১১১ রোগী, যাদের মধ্যে ৩৮ জন করোনা পজিটিভ। এদের মধ্যে ৮২ জনকে অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে। আর আইসিইউতে রয়েছেন ১০ জন।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭১ জন রোগী। এদের মধ্যে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ৩৮ জন, দাগনভূইয়ায় ১৬ জন, ছাগলনাইয়ায় ১০ জন, পরশুরামে ৪ জন, সোনাগাজী ২ এবং বেসরকারি হাসপাতালে রয়েছেন ২ জন রোগী।
একই সূত্র জানায়, আজ পর্যন্ত করোনা পরীক্ষার জন্য ফেনীতে ২৫ হাজার ৭৪২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, যার মধ্যে ২৫ হাজার ৬৪২টি নমুনার ফলাফল পাওয়া গেছে। মোট নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে গড় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত ফেনীতে টেলিমেডিসিন সেবা নিয়েছেন ৬৬ হাজার ৪১৭ জন।
সূত্রটি আরও জানায়, আজ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারী মোট ৮০ জনের মধ্যে ফেনী সদরে সর্বোচ্চ ৩৫ জন, সোনাগাজীতে ১৫ জন, দাগনভূইয়ায় ১৩ জন, ছাগলনাইয়ায় ১০ জন, পরশুরামে ৪ জন এবং ফুলগাজীতে ৩ জন রয়েছে।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

ফেনীতে ১শ শিক্ষার্থী পেল প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার

চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য পরিবহনে জাহাজ এবং খালি কন্টেইনারের সংকট নেই : নৌ পরিবহন সচিব