ভিতরে

পেরুকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিল

লুকাস পাকুয়েটার একমাত্র গোলে পেরুকে ১-০ ব্যবধানে পরাজিত করে কোপা আমেরিকার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ব্রাজিল। তারকা ফরোয়ার্ড নেইমারের এসিস্টে সেমিফাইনালে ব্রাজিলকে জয়সূচক গোল উপহার দেন পাকুয়েটা। 
দুই বছর আগে ঘরের মাঠে এই পেরুকে ফাইনালে ৩-১ গোলে পরাজিত করে কোপা আমেরিকার শিরোপা জয় করেছিল সেলেসাওরা। শনিবার রিও জি জেনিরোর ঐতিহ্যবাহী মারাকানা স্টেডিয়ামে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ার মধ্যকার ব্রাসিলিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য আরেক সেমিফাইনালের বিজয়ী দল।
কাল ম্যাচ শেষে নেইমার বলেছেন, ‘ফাইনালে আমি আর্জেন্টিনাকে দেখতে চাই। আমি সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনাকেই সমর্থন করবো, কারন সেখানে আমার কয়েকজন বন্ধু রয়েছে। কিন্তু ফাইনালে ব্রাজিলই জয়ী হবে। পাকুয়েটা একজন অসাধারণ খেলোযাড়। প্রতিটি ম্যাচেই সে নিজেকে আরো উন্নত করে তুলছে। জাতীয় দলের সাথেও সে ক্রমেই মানিয়ে নিয়েছে। ক্লাব ফুটবলেও সে দারুন এক মৌসুম কাটিয়েছে। আর এবার কোপা আমেরিকায় প্রমান করলো জাতীয় দলে সে একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়।’
ফ্রান্স লিগ ওয়ানে লিঁওর ২৩ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার নিজেকে দারুনভাবে প্রমান করেছে। চিলির বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের ১-০ গোলের জয়ের ম্যাচটিতেও একমাত্র গোলটি করেছিলেন পাকুয়েটা। 
গতকাল রিওর দর্শকশুন্য নিল্টন সান্তোস স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধে পুরোপুরি দাপট দেখিয়েছে স্বাগতিক ব্রাজিল। বিরতির পর অবশ্য ফাইনালের টিকিট পেতে ব্রাজিলকে কিছুটা চাপে পড়তে হয়েছিল। আট মিনিটে পাকুয়েটার পাসে রিচার্লিসন গোলরক্ষক পেড্রো গালেসেকে পরাস্ত করে নেইমারের দিকে বল বাড়িয়ে দেন। কিন্তু চাপের মুখে নেইমারের শট জালের ঠিকানা খুঁজে পায়নি। কাসেমিরোর একটি ফ্রি-কিক কোনমতে রক্ষা করেন গালেস। ফিরতি বল থেকে কোন সাফল্য আনতে পারেনি এভারটন। ডান দিক থেকে এভারটনের আরো একটি শট সরাসরি গালেসের হাতে ধরা পড়ে।
পেরুভিয়ান এই গোলরক্ষক কাল ম্যাচের প্রথম ২৫ মিনিট সবচেয়ে বেশী ব্যস্ত ছিলেন। কাসেমিরোর আরো একটি দুরপাল্লার শট আটকানোর পর নেইমার ও রিচার্লিসনের পরপর দুটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন। কিছুক্ষন পরে রিচার্লিসনের একটি জোড়ালো শটে মাথায় আঘাত পান গালেস। কিন্তু তারপরেও তাকে পরাস্ত করতে ব্যর্থ হয় স্বাগতিকরা। ব্রাজিলের আক্রমনগুলো একের পর এক প্রতিহত করলেও গালেসকে সহযোগিতা করতে পারেননি সতীর্থরা। রক্ষনভাগের ব্যর্থতার পর পেরুর আক্রমনভাগও ব্রাজিলিয়ান শিবিরে কোন আঘাত হানতে পারেনি। ম্যাচের ৩০ মিনিটে তারা প্রথম কর্ণার পায়। কিন্তু তার থেকেও ভাল কোন সুযোগ তৈরী হয়নি। বিরতির ১০ মিনিট আগে শেষ পর্যন্ত ডেডলক ভাঙ্গে ব্রাজিল। রক্ষনভাগে তিনজন ডিফেন্ডরাকে কাটিয়ে নেইমার বল বাড়িয়ে দেন পাকুয়েটার দিকে। ১২ গজ দুর থেকে পাকুয়েটার শট আর আটকাতে পারেননি গালেস। 
বিরতির চার মিনিট পর অবশেষে পেরু কাউন্টার এ্যাটাক থেকে প্রথম কোন ভাল শট নিতে সমর্থ হয়। কিন্তু গিয়ানলুকা লাপাডুলার জোড়ালো শটটি সহজেই রুখে দেন গোলরক্ষক এডারসন। এরপরপরই বদলী খেলোয়াড় রাজিয়েল গার্সিয়ার দুটি শট জালের ঠিকানা খুঁজে পায়নি। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথমভাগটা মোটামুটি ভাবে পেরু বেশ আক্রমন করেই খেলেছে। বিশেষ করে গার্সিয়াকে মধ্যমাঠে পেয়ে অনেকটাই উজ্জীবিত হয়ে ওঠে পেরুভিয়ানরা। যদিও ব্রাজিলও থেমে থাকেনি। এভারটনের একটি শট সরাসরি গালেসের হাতে ধরা পড়ার পর নেইমারের শট ক্রসবারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। ম্যাচ শেষের ৯ মিনিট আগে ইওশিমার ইউতুনের ফ্রি-কিকের ব্যর্থতা এবং আলেক্সান্দার কালেন্স এডারসনকে একা পেয়েও মাত্র ছয় গজ দুর থেকে হেডের সাহায্যে পরাস্ত করতে না পারা, এসবই ম্যাচ শেষে পেরুকে হতাশ করেছে। 
ম্যাচ শেষে পেরুর কোচ রিকার্ডো গারেকা বলেছেন, ‘ম্যাচের গতি বুঝতে আমাদের অনেক দেরী হয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা ভাল খেলেছি। কিন্তু তখন আর গোল পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি।‘
টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বে এই পেরুকেই ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল ব্রাজিল। এর আগে অক্টোবরে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ঘরের মাঠে ব্রাজিলের কাছে ৪-২ গোলের পরাজিত হয়েছিল পেরু। এসবই কালকের ম্যাচে প্রভাব ফেলেছে বলে স্বীকার করেছেন গারেকা।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে জয় চায় বাংলাদেশ

জার্মানীর অলিম্পিক স্কোয়াডে ডাক পেলেন ম্যাক্স ক্রুস