ভিতরে

কোরবানির পশু সরবরাহে প্রস্তুত ফেনীর খামারিরা

॥ আরিফুল আমীন রিজভী ॥
ফেনী, ৫ জুলাই ২০২১ : আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে ফেনীতে কোরবানির পশুর শতভাগ চাহিদা মেটাতে পারবে বলছেন ফেনীর গো খামারিরা। দেশের বাইরে হতে পশু আনা হলে এবার আশানুরূপ দাম পাবেন বলেও ধারণা করছেন তারা। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আনিসুর রহমান জানান, চলতি বছর জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ৭২ হাজার। ফেনীর খামারগুলোতে লালন পালন করা হচ্ছে ৮০ হাজার ৮৬৫টি গবাদি পশু। ফলে ফেনীতে এবার কোরবানির পশু সংকট হবার কোনো আশংকা নেই। এছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে অনেকে এক বা একাধিক কোরবানির পশু লালন পালন করছেন। এর সংখ্যাও প্রায় ২০ হাজারের বেশি।
জেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের তথ্যমতে, ফেনী সদর উপজেলায় ২১ হাজার ৩২২, দাগনভূঞা ৮ হাজার ৮৩০, ছাগলনাইয়া ১৮ হাজার ৭২৫, সোনাগাজী ১৭ হাজার ৫০৫, ফুলগাজী ৬ হাজার ২০৬ এবং পরশুরাম ৮ হাজার ২২৭টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
পশুর যোগান বেশি থাকায় এবার ঈদ বাজার খামারি ও ক্রেতা উভয়ের অনুকূলে থাকবে বলে ধারণা করছেন জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা। তিনি জানান, সরকারি নির্দেশ মোতাবেক  দেশের বাহির থেকে বৈধ বা অবৈধ উপায়ে গরু আমদানি বন্ধ রাখতে হবে। যদি আমদানি বন্ধ করা যায় তবে দেশীয় খামারিরা লাভবান হবেন।
ফেনী সদরের কাজীরবাগের গিল্লাবাড়িয়ায় সিরাজ-মনি ডেইরি ফার্মে কোরবানির জন্য ১৪টি পশু লালন করছেন খামারি শরীফুল ইসলাম মাসুম। তিনি জানান, বর্তমানে গরু লালন পালনে যে খরচ হচ্ছে, ঈদ বাজারে বাহিরের গরু প্রবেশ করলে স্থানীয় খামারিরা বিপাকে পড়বে। যদি বাজারে বাইরে থেকে গরু না আসে তাহলে লাভের মুখ দেখবে স্থানীয়রা।
রাসেল পাটোয়ারী নামে এক খামারি জানান, আসন্ন কোরবানির জন্য ৩০টি গরু পস্তুত করছি। প্রতিটি গরু ১ লাখ বা তারও বেশি বিক্রি করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
রাশেদ নামে এক ছাগল খামারের মালিক বলেন, কোরবানিতে ছাগলের চাহিদাও অনেক৷ এবার কোরবানির বাজার বিক্রির জন্য ১৫টি ছাগল পস্তুত  করছি। প্রতিটি ছাগল ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বিক্রি করা যাবে।
সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতীয় গরু প্রবেশ বন্ধে নজরদারি বাড়িয়েছে বিজিবি’র ফেনী ব্যাটালিয়ন (৪ বিজিবি)। ফেনী ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল আবদুর রহিম জানান, কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে সীমান্তে  গরু চোরাচালান রোধে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বিজিবি সদস্যরা, বাড়ানো হয়েছে নজরদারি ।
কোরবানি পশু লালন-পালনে নিয়মিত খামারিদের সহযোগিতা করছে প্রাণি সম্পদ অফিস। ফেনী সদর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মোঃ নাজমুল হক জানান, কুরবানির পশুর চাহিদা মেটাতে প্রাণি সম্পদ দপ্তর থেকে নিয়মিত খামার পরিদর্শন, খামারিদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও যাবতীয় সহযোগিতা করা হয়ে থাকে। এছাড়া বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে ৪/৫ মাসের মধ্যে কোরবানি পশু মোটাতাজা করার বিষয়ে খামারি ও কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
কোরবানিতে গরু-ছাগলের পাশাপাশি ফেনীতে মহিষেরও উল্লে ­খযোগ্য চাহিদা রয়েছে। জেলার সবচেয়ে বেশি মহিষের খামার রয়েছে সোনাগাজী উপজেলায়। সোনাগাজী উপজেলার মহিষ খামারী আনোয়ার হোসেন টিপু জানান, এবার ঈদে বিক্রির জন্য ২০টি মহিষ পস্তুত  করছি।
প্রতিটি মহিষের গড়ে ৭০ থেকে ৮০ হাজার বিক্রি করতে পারবেন বলে ধারনা করছেন তিনি।
সোনাগাজী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কল্লোল বড়ুয়া জানান, এ উপজেলায় গবাদিপশু চারণ ভূমির পরিমাণ বেশি হওয়ায় গরু-ছাগল ছাড়াও বাণিজ্যিকভাবে মহিষের লালন-পালন হয়ে থাকে।
গরুর দৈহিক ওজন মেপে ফেনীতে পশু বিক্রির প্রচলন করতে যাচ্ছে ফুলগাজীতে সূচনা এগ্রো। খামারের মালিক পক্ষের ফয়সল জাহিদ জানান, ৩৫টি গরু কোরবানির জন্য বিক্রিযোগ্য রয়েছে। ক্রেতা লাইভ ওয়েট দেখে দাম দিতে পারবেন।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

দেবীদ্বারে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ৮টি করোনা প্রতিরোধক বুথ স্থাপন

সিলেট বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৮ জনের মৃত্যু