ভিতরে

ইউরো ২০২০ : ইউক্রেনকে উড়িয়ে দিয়ে সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড

টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট হিসেবে ইউরো চ্যাম্পিয়নশীপ শুরু করা ইংল্যান্ড এখন শিরোপার অন্যতম দাবীদার। শনিবার রোমার এস্তাদিও অলিম্পিকোতে ইউক্রেনকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করার মাধ্যমে আরো একবার তার প্রমানই যেন দিল গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা। 
টুর্নামেন্টে বাজে পারফরমেন্স দিয়ে শুরু করে সমালোচকদের তোপের মুখে পড়া ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেন নিজেই দিয়েছেন দুই গোল। এর আগে জার্মানীর বিপক্ষে শেষ ১৬‘র হাই ভোল্টেজ লড়াইয়ে ২-০ গোলের জয়ের ম্যাচটিতেও গোল পেয়েছিলেন কেন, যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গোলখরাও কাটিয়েছিলেন টটেনহ্যামের এই তারকা স্ট্রাইকার। কেনের গোলেই ইতালিয়ান রাজধানীতে চার মিনিটেই এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড। বিরতির পর পাঁচ মিনিটের মধ্যে হ্যারি ম্যাগুয়েরে ও কেনের আরো দুই গোলে ৩-০ ব্যবধানের লিড পায় সাউথগেট শিষ্যরা। বদলী খেলোয়াড় জর্ডার হেন্ডারসন দলের হয়ে চতুর্থ গোলটি করেছেন। 
মঙ্গলবার ওয়েম্বলির সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ উড়তে থাকা ডেনমার্ক। দিনের শুরুতে আরেক কোয়ার্টার ফাইনালে চেক প্রজাতন্ত্রকে ২-১ গোলে পরাজিত করে শেষ চার নিশ্চিত করেছে ড্যানিশরা। জার্মানদের হারানোর আত্মবিশ্বাস থেকেই ইংল্যান্ডরা এখন ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনালে প্রথমবারের মত এমনকি ১৯৬৬ সালের পর প্রথম বড় কোন টুর্ণামেন্টের শিরোপা জয়ের স্বপ্নে বিভোর হয়ে উঠেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশীপের নক আউট পর্ব থেকে বেশ কয়েকবারই একটু আগে ভাগেই বিদায় নিতে হয়েছে ইংল্যান্ডকে। বিশেষ কওে কোয়ার্টার ফাইনালে ইতালি ও পর্তুগালের কাছে পরাজিত হয়ে বিদায় নেয়া ইংল্যান্ডের সামনে এবার অপেক্ষাকৃত সহজ প্রতিপক্ষ হওয়ায় ইউক্রেনের বিপক্ষে তাদের জয়টা প্রায় নিশ্চিতই ছিল। তার উপর এবারের টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত খেলা পাঁচটি ম্যাচের একটিতেও কোন গোল হজম না করায় ইংল্যান্ডের রক্ষনভাগ ও গোলরক্ষকের ভূমিকাও প্রশংসা কুড়িয়েছে। তাদের সাথে সমন্বয় করে মধ্যমাঠ ও আক্রমনভাগ যেভাবে কাল ধারাবাহিকতা দেখিয়েছে তা ইউক্রেনের পক্ষে সামলানো একটু কষ্টই ছিল। কাল প্রথমবারের মত টুর্ণামেন্টে একসাথে মূল একাদশে খেলতে নেমেছিলেন রাহিম স্টার্লিং ও জেডন সানচো। জার্মানীর বিপক্ষে ম্যাচ শেষের চার মিনিট আগে গোল করা কেন কাল ম্যাচ শুরুর চার মিনিটের মধ্যে গোল করে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে দেন। কালবের এই পারফরমেন্স ঘরের মাঠে সেমিফাইনালে ড্যানিশদের বিপক্ষে ইংল্যান্ডকে ফেবারিট হিসেবেই প্রমান করেছে। 
শুধুমাত্র এই ম্যাচটিই ইংল্যান্ড ঘরের বাইরে খেলেছে। যদিও জার্মানদের বিপক্ষে ওয়েম্বলিতে ৪০ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে যে ইংল্যান্ডকে দেখা গিয়েছিল তার থেকেও কাল তারা ছিল আরো বেশী অপ্রতিরোধ্য। সম্প্রতি ইংল্যান্ড থেকে আসা যাত্রীদের জন্য ইতালি পাঁচদিনের কোয়ারেন্টাইনের বাধ্যবাধকতা জারী করায় কাল রোমে ইংলিশ সমর্থকদের ততটা আধিক্য ছিলনা। যারা আগে থেকেই সেখানে অবস্থান করছিল তারাই ম্যাচটি উপভোগ করতে এসেছিল।
আন্দ্রি শেভচেঙ্কোর ইউক্রেন এবারই প্রথমবারের মত বড় কোন টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমেছিল। শেষ ১৬‘র লড়াইয়ে সুইডেনকে অতিরিক্ত সময়ের গোলে পরাজিত করে কোয়ার্টার ফাইনালেও তারা প্রথমবারের মত খেলতে এসেছিল। কিন্তু শুরুতেই হোঁচট খায় শেভচেঙ্কোর শিষ্যরা। বাম দিক থেকে স্টার্লিংয়ের ক্রসে কেন সহজেই ইউক্রেনিয়ান গোলরক্ষক গিওর্গিও বুশচানকে পরাস্ত করেন। কিছুক্ষন পরেই ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডকে পরীক্ষায় ফেলেন রোমান ইয়ারেমচুক। ৩৬ মিনিটে ডিনামো কিয়েভের উইঙ্গার ভিক্টর সাইগানকোভ ইনজুরির কারনে বাইরে চলে গেলে ডিফেন্ডার শেরি ক্রিভস্টোভ মাঠে নামলে ইউক্রেনের খেলার ধরন পাল্টে যায়। 
বিরতির পর মিনিটখানেকের মধ্যে লুক শর ফ্রি-কিক থেকে ম্যাগুয়েরে হেডের সাহায্যে ব্যবধান দ্বিগুন করেন। চার মিনিটর পর শর আরো একটি ক্রসে এবার হেড সফল করেন কেন। দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝিতে কেন প্রায় হ্যাটট্রিক করেই ফেলেছিলেন। কিন্তু বুশচানের দুর্দান্ত সেভে তা সম্ভব হয়নি। ৬৩ মিনিটে ম্যাসন মাউন্টের কর্ণার থেকে এবার হেডের সাহায্যে দলের হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন হেন্ডারসন।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

সিরিয়ার বিদ্রোহ কবলিত এলাকায় বিদ্যুতের বিকল্প উৎস এখন সৌর প্যানেল

ইউরো ২০২০ : চেক প্রজাতন্ত্রকে ২-১ গোলে পরাজিত করে সেমিফাইনালে ডেনমার্ক