ভিতরে

চট্টগ্রামে লকডাউনের প্রথমদিনে রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা

সপ্তাহব্যাপী লকডাউনের প্রথমদিনে আজ বৃহস্পতিবার বন্দরনগরী চট্টগ্রাম মহানগরীর রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। রাস্তায় অল্প কিছু রিক্শা, কাভার্ডভ্যানের পাশাপাশি জরুরি পরিষেবার মোটরযান রয়েছে।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কর্ণফুলী ব্রিজ, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর ২ নং গেট, জিইসি মোড়, ওয়াসা মোড়, লালখান বাজার, কাজীর দেউড়ি ও জামালখান ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। তবে রাস্তায় বিক্ষিপ্তভাবে মানুষের চলাফেরা লক্ষ্য করা যায়। মোটরযানগুলোকে পুলিশি চেকপোস্টে চলাচলের যথাযথ কারণ ব্যাখ্যা করতে হচ্ছে। প্রয়োজন ছাড়া বের হলে মামলা দেয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট গাড়ির বিরুদ্ধে। রাস্তায় চলাচলকারী মানুষের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া না হলেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সবাইকে সরিয়ে দিচ্ছে এবং সতর্ক করে দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে মুখে মাস্কবিহীন লোকজনকে বেশি নজরে রাখা হচ্ছে। 
ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন দুপুরে বাসসকে বলেন, ‘বাদামতলী মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে আমরা লকডাউনের বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি। এখানে সকাল ৯ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত অপ্রয়োজনে রাস্তায় চলাচলরত ১০ টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, আরো পাঁচটি আটক করেছি। এ সময়ে রাস্তায় অহেতুক ঘুরে বেড়ানো ২১ জনকে আটক করি। তাদের দুই ঘন্টা চেকপোস্টে বসিয়ে রেখে মাস্ক পরিয়ে ও চূড়ান্ত সতর্ক করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া পুরো থানা এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।’
কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন বাসসকে বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৬ টা থেকে সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত গার্মেন্টস কর্মীদের তাদের কর্মস্থলে পৌঁছে দিতে সহায়তা করা হয়েছে কোতোয়ালী থানার পক্ষ থেকে। এক্ষেত্রে কয়েকটি গার্মেন্টস গাড়ি না দেয়ায় তাদেরকে আমরা নিজেদের উদ্যোগে গাড়ির ব্যবস্থা করে কর্মস্থলে পৌঁছে দিয়েছি। আমার থানার সকল অফিসার ও কনস্টেবল রাস্তায় থেকে অপ্রয়োজনীয় গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে। উপযুক্ত কারণ ব্যাখ্যায় ব্যর্থ গাড়ির চালকদের কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়া, অপ্রয়োজনে রাস্তায় আসা মানুষকে এক ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রেখে বিধিনিষেধ ও এর কার্যকারিতা সম্পর্কে বুঝিয়েছি। তারা ওয়াদা করেছেন, তারা অহেতুক আর বাইরে আসবেন না এবং অন্যদেরও সচেতন করার চেষ্টা করবেন।’   
বাকলিয়া থানার ওসি মো. রুহুল আমিন বাসসকে বলেন, ‘কর্ণফুলী থানাধীন মইজ্যারটেকে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের কোনো গাড়ি শহরে প্রবেশ করতে পারছে না। এছাড়া, আমার থানা এলাকায় গাড়িতে টহল পুলিশ দল রাস্তায় অপ্রয়োজনীয় বের হওয়া লোকজন ও গাড়িকে চূড়ান্ত সতর্ক করে ঘরে পাঠিয়ে দিচ্ছে। যাদের মাস্ক নেই তাদের মাস্ক পরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ।’
পুলিশ প্রশাসন জানায়, ‘নগরীর প্রতিটি প্রবেশ পথে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এখানে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। প্রথম দিন কড়া সতর্ক বার্তা দিয়ে অনেককে ছাড় দেয়া হলেও পরবর্তীতে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে।’ 
এদিকে, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান অহেতুক লোকজনকে ঘর থেকে বের না হতে অনুরোধ জানিয়েছেন। আজ সকালে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হার প্রতিদিন বাড়ছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মানা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। যেহেতু জনস্বার্থে দেয়া লকডাউনে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে প্রত্যেককে এসব মেনে চলতে হবে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকাল ৮ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। শিল্পকারখানা চালু থাকায় শুধুমাত্র তাদের যানবাহন ছাড়া সব যন্ত্রচালিত যানবাহন বন্ধ থাকবে।’ 
জেলা প্রশাসক জানান, ‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী লকডাউন কার্যকরে সক্রিয় রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ১০০ ভলান্টিয়ার কাজ করছেন। কাঁচাবাজারসহ  নিত্যপ্রয়োনীয় পণ্যের দোকান ছাড়া কোনো দোকানপাট আগামী এক সপ্তাহ খোলা যাবে না। কাঁচাবাজারে স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ মানানোর ব্যাপারে বাজার কমিটি, আনসার ও ভলান্টিয়াররা দায়িত্ব পালন করছেন।’

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

সিলেট বিভাগে করোনায় একদিনে ৭ জনের মৃত্যু

ফেনীতে মুহুরী বাঁধ ভাঙ্গনে লোকালয় প্লাবিত