ভিতরে

অতিরিক্ত সময়ের গোলে সুইডেনকে পরাজিত করে শেষ আটে ইউক্রেন

অতিরিক্ত সময়ের ইনজুরি টাইমের গোলে সুইডেনকে ২-১ গোলে পরাজিত করে ইউরো চ্যাম্পিয়নশীপের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ইউক্রেন। গ্লাসগোর হ্যাম্পডেন পার্কে গতকাল অনুষ্ঠিত শেষ ১৬‘র ম্যাচের ১২১ মিনিটে আরটেম ডোভিয়াকের হেডে ইউক্রেনের জয় নিশ্চিত হয়। এর আগে নির্ধারিত সময়ের ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র ছিল। 
গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচে মাত্র ৩ পয়েন্ট নিয়ে সি-গ্রুপ থেকে নেদারল্যান্ডকে ও অস্ট্রিয়ার পর সেরা তৃতীয় দল হিসেবে নক আউট পর্বে উঠে ইউক্রেন। কিন্তু আন্দ্রি শেভচেঙ্কোর দল নক আউট পর্বে নিজেদের প্রমানে বদ্ধপরিকর ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় কাল তারা সুইডিশদেও বিপক্ষে ছিল অপ্রতিরোধ্য। গতিময় ফুটবল খেলে ২৭ মিনিটে ওলেক্সান্দার জিনচনকোর হাত ধরে এগিয়ে যায় ইউক্রেন। বিরতির ঠিক আগে এমিল ফোর্সবার্গের ডিফ্লেকটেড শটে সমতায় ফিরে সুইডেন। দ্বিতীয়ার্ধে আরবি লিপজিগের এই মিডফিল্ডার দুইবার বল পোস্টে লাগালে হতাশ হতে হয়েছে সুইডেনকে। 
অতিরিক্ত সময়ের ৯ মিনিটে ডিফেন্ডার মার্কোস ড্যানিয়েলসন লাল কার্ড দেখে মাঠে বাইরে চলে গেলে সুইডেনের জন্য ম্যাচে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। এই সুযোগে জিনচেনকোর ক্রস থেকে ডেভিয়াকের হেড ইউক্রেনকে আবারো এগিয়ে দিলে হ্যাম্পডেন পার্কে আগত অল্প কিছু সংখ্যক ইউক্রেনিয়ার সমর্থক উল্লাসে ফেটে পড়ে। 
ম্যাচের আগে শেভচেঙ্কো বলেছিলেন  গ্রুপ পর্বের বাঁধা পেরুনোর সাথে সাথে তার দল ইউরোর লক্ষ্যপূরণ করে ফেলেছি। এখন শুধু নিজেদের প্রমানের অপেক্ষা। কিন্তু সাবেক এই এসি মিলান স্ট্রাইকার একইসাথে আরো বলেছেন নিজেদের দিনে ইউক্রেনের বড় কিছু করে দেখানোর সামর্থ্যও রয়েছে। 
ম্যাচের শুরুতেই রোমান ইয়ারেমচুকের শট দারুনভাবে রুখে দেন সুইডিশ গোলরক্ষক রবিন ওলসেন। এর আগে আন্দ্রি ইয়ারমোলেনকোও একটি সুযোগ হাতছাড়া করেছেন। ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডের এই উইঙ্গার পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই দারুন খেলে ছন্দে রযেছেন। এ পর্যন্ত ইউক্রেনের দেয়া ছয় গোলেই হয় তিনি এসিস্ট করেছেন অথবা নিজেই গোল করেছেন। ২৭ মিনিটে তার ক্রসেই ম্যানচেস্টার সিটির জিনচেনকো লো শটে ওলসেনকে পরাস্ত করেন। পুরো টুর্নামেন্টে এই প্রথমবারের মত প্রথম গোল হজম করে পিছিয়ে পড়লো সুইডেন। গ্রুপ পর্বে দলের রক্ষনভাগের পারদর্শীতা সকলেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সুইডেনের হয়ে ফোর্সবার্গ একাই পুরো ম্যাচে দাপট দেখিয়ে গেছেন। বিরতির দুই মিনিট আগে তার গোলেই সমতায় ফিওে সুইডিশরা। টুর্নামেন্টে এটি তার চতুর্থ গোল। 
দ্বিতীয়ার্ধে উভয় দলই বেশ উজ্জীবিত ফুটবল উপহার দেয়। আক্রমন প্রতি আক্রমনে ম্যাচটি দারুন উপভোগ্য হয়ে ওঠে। ইয়ারমোলেনকোর শট পোস্টে লেগে ফেরত আসে। ফোর্সবার্গের দুটি শট পোস্টে লাগলে হতাশ হতে হয় সুইডেনকে। তার একটি কার্লিং শট পোস্টের একেবারে নীচে লেগে ফেরত আসে, এরপর বক্সের ঠিক বাইরে থেকে শক্তিশালী শটটি ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। এই দুই শটের মাঝে ডেয়ান কুলুসেভিস্কির শট দারুনভাবে রুখে ইউক্রেনিয়ান গোলরক্ষক গিওর্গিও বুশান। 
ইনজুরি টাইমের নবম মিনিটে ডায়নামো কিয়েভের স্ট্রাইকার আরটেম বেসেডিনকে বিপদজনকভাবে চ্যালেঞ্জের কারনে লাল কার্ড দেখে মাঠ ত্যাগে বাধ্য হন ড্যানিয়েলসন। সুইডেন ১০ জনের দলে পরিণত হলে দ্বিতীয়বারের মত স্বাধীন কোন দেশ হিসেবে বড় টুর্নামেন্টে শেষ আটে খেলার সুবর্ন সুযোগ পায় ইউক্রেন। আর সেই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে ১০৫ মিনিটে ইয়ারমোলেনকোর স্থানে বদলী হিসেবে খেলতে নামা ডোভিয়াক ১২১ মিনিটে দলের স্মরনীয় জয় নিশ্চিত করেন। ক্যারিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক গোলটি উদযাপনের এর থেকে বড় মঞ্চ হয়ত আর হতে পারেনা।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

জার্মানীকে হতাশ করে শেষ আটে ইংল্যান্ড

নেদারল্যান্ডের কোচের পদ থেকে ছাড়লেন ডি বোয়ার