ভিতরে

ডোলবার্গের দুই গোলে ওয়েলসকে উড়িয়ে দিয়ে শেষ আটে ডেনমার্ক

কাসপার ডোলবার্গের জোড়া গোলে ওয়েলসকে ৪-০ ব্যবধানে  বিধ্বস্ত করে ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশীপের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ডেনমার্ক। আমাস্টারডামের ইয়োহান ক্রুইফ এরিনায় ম্যাচের প্রথমার্ধেই দুই গোল করেছেন লিগ ওয়ানের ক্লাব নিসের স্ট্রাইকার ডোলবার্গ।  
এই শহরেই নিজেকে জনপ্রিয় করে গেছে ড্যানিশ তারকা ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন। আয়াক্সেরই আরেক সাবেক খেলোয়াড় ডোলবার্গের দারুন এক স্ট্রাইকে ২৭ মিনিটে গোলের খাতা খুলে ড্যানিশরা। অথচ ম্যাচের শুরুটা দারুন করেছিল ওয়েলস। এক গোলে এগিয়ে যাবার পর ডেনমার্ককে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বিরতির পর আবারো ডোলবার্গ গোল করলে ব্যবধান দ্বিগুন হয়। ম্যাচের একেবারে শেষভাগে জোয়াকিম মায়েলে ও মার্টিন ব্রেথওয়েটের গোলে ব্যবধান আরো বেড়েছে। এর মাধ্যমে কিছুটা হলেও এরিকসেনকে দল থেকে হারানোর দু:সহ স্মৃতি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে ডেনমার্ক। ফিনল্যান্ডের বিপক্ষে কোপেনহেগেনে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাঠত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন দলের মূল তারকা এরিকসেন। ঐ ম্যাচে ফিনল্যান্ডের কাছে ১-০ গোলে পরাজিত হয়ে ইউরো আসর থেকে ছিটকে যাবার শঙ্কায় পড়েছির ফ্র্যাংক ডি বোয়ারের দল।
বাকুর কোয়ার্টার ফাইনালে ডেনমার্কের প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ড বনাম চেক প্রজাতন্ত্রের মধ্যকার শেষ ১৬‘র বিজয়ী দল। 
অসুস্থ হবার পর কিছুদিন হাসপাতালে থাকার পর এরিকসেন এখন বাসায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আয়াক্সের হোম গ্রাউন্ডে কাল নক আউট পর্বে পুরো ম্যাচ জুড়ে ড্যানিশদের মনের ভিতরে ছিলেন এরিকসেন। স্টেডিয়ামে আগত প্রায় এক তৃতীয়াংশ ড্যানিশ সমর্থকদেও কারনে ম্যাচটি হয়ে উঠেছিল ডেনমার্কের জন্য হোম ম্যাচ। 
১৯৯২ সালে জার্মানীকে ফাইনালে পরাজিত করে ইউরো চ্যাম্পিয়নশীপের একমাত্র শিরোপাটি জিতেছিল ডেনমার্ক। এরপর থেকে আর কোন আসরেই নক আউট পর্বের প্রথম ম্যাচে জিততে পারেনি ড্যানিশরা। অবশেষে দাপটের সাথে সেই বাঁধা অন্তত পার করেছে ডি বোয়ারের শিষ্যরা। আর সেই ধারাবাহিকতায় এবারো যদি ৯২‘র সাফল্য ঘরে আনতে পারে তবে সেটা ডেনমার্কের জন্য হবে সত্যিকারের রূপকথার শেষের ঘটনা। 
এদিকে ইউরো ২০১৬’র সেমিফাইনালিস্ট ওয়েলসকে ১০ জন নিয়ে ম্যাচটি শেষ করতে হয়েছে। ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে হ্যারি উইলসন সরাসরি লাল কার্ড পেলে ওয়েলসের ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ হয়। পুরো ম্যাচে অধিনায়ক গ্যারেথ বেল কিংবা এ্যারন রামসের কাছ থেকে কোন যাদুকর মুহূর্ত উপহার পায়নি ওয়েলস। ডেনমার্কের কঠিন রক্ষনভাগের বিপক্ষে তারা পুরোপুরি ব্যর্থতারই পরিচয় দিয়েছে। যুক্তরাজ্য থেকে নেদারল্যান্ডে প্রবেশে কোভিড বিধিনিষেধ থাকায় গতকাল স্টেডিয়ামে গুটিকয়েক ওয়েলস সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। বিপরীতে ডেনসরা একের পর এক আক্রমনে ওয়েলসকে ব্যস্ত করে তুলে। কোপেনহেগেনের পারকেন স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে যেভাবে তারা খেলেছে কালও তার ব্যতিক্রম ছিলনা। ডেনমার্ককে দেখে মনেই হয়নি তারা ঘরের বাইরে খেলছে। রাশিয়াকে জারিয়ে শেষ ১৬‘ নিশ্চিত করার ম্যাচটিতে যেভাবে পুরো ডেনমার্ক দলকে উজ্জীবিত দেখা দিয়েছিল কালও তারই পুনরাবৃত্তি দেখা গেছে। 
ম্যাচের শুরুতে অবশ্য পজিশনের দিক থেকে ওয়েলসই এগিয়ে ছিল। ১০ মিনিটে বেলের শট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। এরপর ডেনমার্কের তৃতীয় সেন্টার-ব্যাক হিসেবে খেলতে নামা চেলসির আন্দ্রেস ক্রিস্টেনসেনকে মধ্যমাঠে উঠিয়ে আনলে ম্যাচের চেহারা পাল্টে যায়। তার ফলও পায় ২৭ মিনিটে। ইউসুফ পোলসেনের স্থানে আক্রমনভাগে খেলতে নামা ডোলবার্গ বক্সের বাইরে থেকে বল সংগ্রহ করে দুর্দান্ত স্ট্রাইকে ডেনমার্ককে এগিয়ে দেন। ৪০ মিনিটে কুঁচকির ইনজুরিতে পড়ে রাইট-ব্যাক কনর রবার্ট মাঠ ছাড়লেও আরো হতাশায় পড়ে ওয়েলস। এরপর ড্যানিশ অধিনায়ক সাইমন কায়েরকে ফাউলের অপরাধে স্ট্রাইকার কিয়েফার মুর হলুদ কার্ড পেলে ওয়েলস শিবিরে হতাশা নেমে আসে। শেষ আট নিশ্চিত হলে ওয়েলসের হয়ে নিষেধাজ্ঞার কারনে পরের ম্যাচে নামা হবেনা মুরের।
বিরিতর তিন মিনিটের মধ্যে ব্যবধান দ্বিগুন করেন ডেনমার্ক। আর এতেই রবার্ট পেজের দলের সব আশা শেষ হয়ে যায়। রবার্টসের স্থানে খেলতে নামা লিভারপুলের ফুল-ব্যাক নিকো উইলিয়ামস ব্রেথওয়েইটের ক্রস ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে বলটি সরাসরি যায় ডোলবার্গের কাছে। সেই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে ব্যবধান দ্বিগুন করেন ডোলবার্গ। এই গোলের আগে বেল ও তার সতীর্থরা মনে করেছিল মুরের ফাউল হয়েছে। কিন্তু জার্মান রেফারি ম্যাচ চালিয়ে যাবার নির্দেশ দেন। ৮৮ মিনিটে মাথিয়াস জেনসেনের সহযোগিতায় একেবারে ফাঁকায় দাঁড়ানো মায়েলে। এরপর শেষ মিনিটে ব্রেথওয়েইটের গোলে বড় ব্যবধানের জয় নিয়ে শেষ আট নিশ্চিত করে ডেনমার্ক। ভিএআর প্রযুক্তির দীর্ঘ রিভিউর পর ব্রেথওয়েইটের গোলটি উপহার পায় ড্যানিশরা।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

অতিরিক্ত সময়ের দুই গোলে অস্ট্রিয়াকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ইতালি

জন্মদিনে লিওনেল মেসিকে উপহার দিয়ে বিস্মিত করলেন সতীর্থরা