ভিতরে

লক্ষ্মীপুর-২ আসনে উপনির্বাচন সংক্রান্ত হাইকোর্ট আদেশ আপিলেও বহাল : নির্বাচনে বাধা নেই

লক্ষ্মীপুর-২ আসনে মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম পাপুলের সংসদ সদস্য পদ শূন্য ঘোষনা করে জারি করা গেজেট ও উপ-নির্বাচনের তফসিলের বৈধতা নিয়ে আনা আবেদন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ আজ খারিজ করে দিয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ভার্চ্যুয়াল আপিল বিভাগ বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।
ফলে লক্ষ্মীপুর-২ আসনে ২১ জুন নির্বাচন হতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছে আইনজীবীরা। পাপুলের এমপি পদ বাতিল বিষয়ে আনা রিট হাইকোর্ট সরাসরি খারিজ করে দেয়। পরে, আপিল বিভাগে আবেদন করেন পাপুলের বোন নুরুন্নাহার বেগম ও নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের প্রস্তাবক শাহাদাত হোসেন। আপিল বিভাগ তাদের আবেদন শুনানি নিয়ে আজ খারিজ করে আদেশ দেয়।
এছাড়াও ২১ জুন অনুষ্ঠিতব্য ওই আসনের উপনির্বাচনের তফসিল স্থগিত চেয়ে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা আবুল খায়ের ভূঁইয়ার আনা রিট আবেদনও সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। সেই আদেশের বিরুদ্ধে আবুল খায়ের ভুইঁয়ার আবেদনের ওপর আজ ‘নো-অর্ডার’ আদেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ। আদালতে পাপুলের বোন ও প্রস্তাবক শাহাদাত হোসেনের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। ওই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়ার আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
লক্ষ্মীপুর-২ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত চেয়ে আবুল খায়ের ভূঁইয়ার দায়ের করা রিট সরাসরি খারিজ করে গত ১৪ জুন আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিলে আবেদন করা হয়। এরআগে লক্ষ্মীপুর-২ আসন শূন্য ঘোষণা ও আসনটিতে উপনির্বাচনের তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আনা রিটও সরাসরি খারিজ করে গত ৮ জুন আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। আসনটির সংসদ সদস্য ছিলেন শহিদ ইসলাম পাপুল। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হন তিনি। ঘুষ লেনদেনের দায়ে কুয়েতের আদালতে তিনি দন্ডিত হলে আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। এবং উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।
আসনটি শূন্য ঘোষণা ও আসনটিতে উপনির্বাচনের তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন পাপুলের বোন নুরুন্নাহার বেগম এবং ওই আসনের বাসিন্দা পাপুলের মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবকারী শাহাদাত হোসেন।
ঘুষ লেনদেনের মামলায় লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুলকে গত ২৮ জানুয়ারি সাজা দেয় কুয়েতের ফৌজদারি আদালত। বিচারক রায়ে তাকে ৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ডের পাশাপাশি ১৯ লাখ কুয়েতি দিনার বা ৫৩ কোটি ১৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা জরিমানা করে। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো সংসদ সদস্য বিদেশের মাটিতে ফৌজদারি অপরাধে দন্ডিত হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম। গত বছরের ৬ জুন রাতে কুয়েতের বাসা থেকে আটক করা হয় তাকে। কুয়েতে মানব পাচার ও ভিসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল টাকার মালিক হন পাপুল। পাপুল নিজেসহ স্ত্রী সেলিনা ইসলামও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হন চলতি সংসদে।
কুয়েতে গ্রেফতার হওয়ার পর দেশেও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের পৃথক দুই মামলায় পাপুলসহ ৬ জনের ৬৭০টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত। মানব পাচার ও অর্থ পাচারের অভিযোগে পাপুলসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর মামলা করে সিআইডি। আসামিদের মধ্যে তার মেয়ে, ভাই ও শ্যালিকাও রয়েছে। এরআগে ১১ নভেম্বর মানব পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে পাপুল ও তার স্ত্রী সেলিনার বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
পাপুলের আসন শূন্য ঘোষণার গেজেটে বলা হয়, কুয়েতের ফৌজদারি আদালতে গত ২৮ জানুয়ারি ঘোষিত রায়ে নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে চার বছর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হওয়ায় লক্ষ্মীপুর-২ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্য থাকার যোগ্য নন। সেই কারণে সংবিধানের ৬৭(১) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রায় ঘোষণার তারিখ ২৮ জানুয়ারি থেকে তার আসন শূন্য হয়েছে।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

করোনায় চট্টগ্রামে আক্রান্ত ১৬৯ জন

নতুন ১৮ ওয়ার্ডের উন্নয়নে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে : মেয়র তাপস