ভিতরে

করোনাকালে বিদেশ গেছেন ২,৮৩,৭৮২ জন কর্মী

॥ মো. সাজ্জাদ হোসেন ॥
ঢাকা, ১৫ জুন, ২০২১ : করোনাকালে (২০২০ সালের মার্চ থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত) বাংলাদেশ থেকে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৭৮২ জন কর্মী কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশ গেছেন।
জনশক্তি রপ্তানী ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুর্ক এক কর্মকর্তা বাসস’কে বলেন, বৈশ্বিক অতিমারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে দেশের জনশক্তি রপ্তানি খাতে। বেশ কয়েক বছর ধরে গড়ে ৭ থেকে ৮ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থানের জন্য পাঠানো হলেও বিদায়ী ২০২০ সালের মার্চ মাসে দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর জনশক্তি রপ্তানিতে ধস নেমেছে। এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত লকডাউনের কারণে কোনো শ্রমিককে বিদেশে পাঠানো যায়নি।
বিএমইটি সূত্র জানায়, গত বছরের প্রথম তিন মাসে ১ লাখ ৮১ হাজার ২১৮ জন শ্রমিক বিদেশে গেছেন। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে ৬৯ হাজার ৯৮৮ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৫৯ হাজার ১৩৯ জন এবং মার্চ মাসে ৫২ হাজার ৯১ জন। এর পর লকডাউনের কারণে বিদেশে শ্রমিক পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়। করোনায় বন্ধ হওয়া শ্রম বাজার তিন মাস পর জুলাই থেকে সীমিত পরিসরে চালু হলেও এখনও তা পুরোপুরি চালু হয়নি।
গত বছরের জুলাই মাসে ১৬ জন, আগস্টে ৬৪, সেপ্টেম্বরে ১৯৫, অক্টোবরে ১ হাজার ২০৮, নভেম্বরে ৬ হাজার ৫৭০ এবং ডিসেম্বরে ২৮ হাজার ৩৮৯ জন শ্রমিক বিদেশ গেছেন। ওই বছর বিদেশ গেছেন মোট ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৬৯ জন। এরমধ্যে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত গেছেন ৩৬ হাজার ৪৫১ জন।
এদিকে চলতি বছর ৫ মাসে বিদেশ গেছেন ১ লাখ ৯৫ হাজার ২৪০ জন। এরমধ্যে জানুয়ারি মাসে গেছেন ৩৫ হাজার ৭৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৪৯ হাজার ৫১০, মার্চে ৬১ হাজার ৬৫৩, এপ্রিলে ৩৪ হাজার ১৪৫, মে মাসে ১৪ হাজার ২০০ জন শ্রমিক।
এ ছাড়া চলতি মাসের ১০ দিনে বিশে^র বিভিন্ন দেশে ১১ হাজার ৪৩১ জন শ্রমিক বিশে^র বিভিন্ন দেশে রপ্তানী হয়েছে বলে সূত্র জানায়।
অবশ্য করোনাকালে শ্রম বাজারে ধস নামলেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহের উল্লম্ফন অব্যাহত রয়েছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ আরও বেড়েছে জানিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়। সূত্রমতে, চলতি জুন মাসের ১০ দিনেই ১৮০ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আর সব মিলিয়ে ৩০ জুন শেষ হতে যাওয়া ২০২০-২০২১ অর্থবছরের ১১ মাস ১০ দিনে (২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ১০ জুন) ২ হাজার ৩৬৪ কোটি ৫২ লাখ (২৩ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স এসেছে দেশে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে ১ বছর বা অর্থবছরে এত বেশি রেমিটেন্স প্রবাসীরা পাঠাননি। অর্থবছর শেষ হতে আরো কয়েকদিন বাকি এই কয়দিনে যদি ১৩৬ কোটি ডলার রেমিটেন্স আসে, তাহলেই এবার অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক ২৫ মিলিয়ন (২ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করবে।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আগের চেয়ে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে হলেও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। তাই খুব স্বল্প পরিসরে হলেও বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর প্রক্রিয়া আবার শুরু করা হয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের গতি ফিরিয়ে আনাকে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখলেও তাতে আশাবাদী প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এজন্য আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ কর্মী তৈরিতে প্রাধান্য দেয়াসহ নানা পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চালাচ্ছে সরকার।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

অধঃস্তন আদালতে ভার্চুয়াল শুনানিতে ১২৯২৯৩ জামিন আবেদন নিষ্পত্তি

অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছেন দেশের ১ কোটি ৭৭ হাজার ৫১৪ জন