ভিতরে

প্রধানমন্ত্রী আজ জলবায়ু সম্মেলনে ভাষণ দেবেন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ু সম্মেলনে ভার্চুওয়ালি যুক্ত হয়ে ভাষণ দেবেন। এতে তিনি ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বার্ষিক বৈশ্বিক জলবায়ু তহবিল গঠনের আহ্বান জানাবেন এবং বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের সম্প্রসারণে সহায়তা চাইবেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আহ্বানে দু’দিনব্যাপী ‘লিডারস সামিট অন ক্লাইমেট’-এর প্রক্কালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. একে আবদুল মোমেন বাসসকে বলেন, ‘আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিল্পোন্নত দেশগুলোকে প্যারিস চুক্তির প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বৈশ্বিক জলবায়ু তহবিলের জন্য বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাবেন।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বিবৃতিতে এই তহবিলের জলবায়ু অভিযোজনে পঞ্চাশ শতাংশ এবং প্রশমনে পঞ্চাশ শতাংশ সমানভাবে কাজে লাগানোর দাবি জানাবেন।
প্যারিস চুক্তির অঙ্গীকারের অংশ হিসাবে জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে প্রশমন ও অভিযোজনের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সাহায্য করার জন্য ২০২০ সাল থেকে প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার তহবিল উত্তোলনের একটি বিধান রাখা হয়েছিল। তবে, এখনো এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবাযন হয়নি।
শেখ হাসিনা জো বাইডেনের আমন্ত্রণে এ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। জলবায়ু সম্পর্কিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত জন কেরি ঢাকায় গত ৯ এপ্রিল শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আয়োজনে আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬ টায় শুরু হতে যাওয়া দু’দিনব্যাপী ভার্চ্যুয়াল শীর্ষ সম্মেলনটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস উদ্বোধন করবেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিশ্বের ৩৯ রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্টকে দুই দিনের এ ভার্চ্যুয়াল শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনের পরে, ‘রেইজিং আওয়ার ক্লাইমেট এম্বিশন’ শীর্ষক অধিবেশন-১-এ বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার লক্ষ্য নাগালের মধ্যে রাখার তাগিদ তুলে ধরে অন্য বিশ্ব নেতাদের সাথে তার বক্তব্য উত্থাপন করবেন।
অধিবেশন-১ এ বক্তব্য দেবেন এমন বিশ্ব নেতাদের মধ্যে রয়েছেন- রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা, অস্ট্রেলিার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন প্রমুখ।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনি জে ব্লিংকেন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরিও এতে যোগ দেবেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মতে, অধিবেশনে সিওপি২৬-এর সময়ের মধ্যে বিশ্বের প্রধান অর্থনীতিগুলোর জলবায়ুু উচ্চাকাক্সক্ষা আরো জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা এবং জলবায়ুু উচ্চাকাক্সক্ষা জোরদারে বিশ্বনেতৃবৃন্দকে নতুন পদক্ষেপের ঘোষণার সুযোগ প্রদানের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।
পাররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে শতভাগ বিদ্যুৎ ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্য অর্জনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়নে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য শিল্পোন্নত দেশগুলোর সহায়তা চাইবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ফোরামের (সিভিএফ) সভাপতি হিসেবে জাতীয় নির্ধারিত অবদান (এনডিসি) ইস্যুর ওপর জোর দেবেন। কেননা, সকল দেশের তাদের এনডিসি পূরণে কঠোর পরিশ্রম অবশ্যক।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল গঠন, একটি সার্বিক জলবায়ু কর্মসূচি গ্রহণ, আশ্রয়কেন্দ্র ও বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও বিশাল বৃক্ষরোপণসহ জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রয়াাসে নিজস্ব উদ্যোগসমূহ তুলে ধরবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা অভিযোজনের আওতায় বছরে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করি। তবে, আমরা জোর দিয়ে বলব যে কেবলমাত্র (জলবায়ু) অভিযোজনই যথেষ্ট নয়, (জলবায়ু) প্রশমনও অনুসরণ করা উচিত।’
তিনি বলেন সিভিএসের সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে তাদের ক্ষয়-ক্ষতির ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্যও শিল্পোন্নত দেশগুলোকে অর্থ প্রদানের অনুরোধ করবে।
সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশন জলবায়ু সমস্যা সমাধানে বিনিয়োগ, অভিযোজন ও সহিষ্ণুতা, সর্ব স্তরে জলবায়ু পদক্ষেপ, জলবায়ু সুরক্ষা এবং প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানের মতো বিভিন্ন ইস্যুতেও আলোচনা করা হবে।
বিশ্ব জলবায়ু মোকাবেলা আন্দোলনে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নেতৃত্বকে গুরুত্ব দিচ্ছে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ৯ এপ্রিল বাংলাদেশ সফরকালে জন কেরি শীর্ষ সম্মেলনের এজেন্ডা নির্ধারণে ঢাকার পরামর্শ গ্রহণ করেছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘জলবায়ু সম্পর্কিত শীর্ষ সম্মেলন চলাকালীন আমেরিকা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের স্বীকৃতি দেবে।
কেরির এই সফরের পর মার্কিন দূতাবাসের এক বিবৃতি বলা হয়, জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ফোরাম (সিভিএফ) এবং ক্ষতিগ্রস্ত বিশ দেশের অর্থমন্ত্রীর গ্রুপের সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা এবং জলবায়ুর ঝুঁকির সাথে অভিযোজন এবং জলবায়ু বিপর্যয়ের মুখে সহিষ্ণুতা তৈরির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এই শীর্ষ সম্মেলনটি এই বছরের নভেম্বরে গ্লাাসগোতে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন (সিওপি২৬)-এর পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্যারিস চুক্তিতে ফিরে আসার পদক্ষেপ নেন।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

তামিমকে টপকে শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করলেন মুশফিক

টেস্টে বাংলাদেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম ইনিংস