ভিতরে

চট্টগ্রামে করোনায় ৫ রোগীর মৃত্যু

চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয় নতুন ২৯৩ জনের দেহে। সংক্রমণের হার ২৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। একই দিনে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭ হাজার অতিক্রম করে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বশেষ রিপোর্টে বলা হয়, গতকাল রোববার সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে নগরীর সাতটি ল্যাবে ১ হাজার ১৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে নতুন ২৯৩ জন বাহকের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৪৯ জন এবং তেরো উপজেলার ৪৪ জন। ফলে এ পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৪৭ হাজার ২২৭ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৩৭ হাজার ৯২৫ জন ও গ্রামের ৯ হাজার ৩০২ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারীতে ১১ জন, রাউজান, সীতাকু- ও আনোয়ারায় ৫ জন করে, সাতকানিয়ায় ৩ জন, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি, মিরসরাই, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ, পটিয়া ও বোয়ালখালীতে ২ জন করে এবং সন্দ্বীপে ১ জন রয়েছেন।
গতকাল করোনায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ৫ জনই শহরের বাসিন্দা। জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা এখন ৪৬৪ জন। এর মধ্যে শহরের ৩৪৩ জন ও গ্রামের ১২১ জন। সুস্থতার সনদ দেয়া হয় ৭৮ জনকে। জেলায় মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৩৫ হাজার ৩৮৩ জনে। এদের মধ্যে ৪ হাজার ৮২৩ জন হাসপাতালে ও ৩০ হাজার ৫৬০ জন বাসায় চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন। কোয়ারেন্টাইনে গতকাল যুক্ত হন ২৫ জন, ছাড়পত্র নেন ২০ জন। বর্তমানে ১ হাজার ৩৬৪ জন কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে গতকালের ৫ জনসহ চলতি মাসের ১৮ দিনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৭৫ জনে। করোনাকালের সর্বোচ্চ ৯ রোগীর মৃত্যু হয় চলতি এপ্রিল মাসের ১০ তারিখে। তবে এদিন এ মাসের সর্বনি¤œ ২২৮ জনের নমুনায় ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ১২ দশমিক ২১ শতাংশ। জেলার সর্বোচ্চ ৫৪১ জন আক্রান্তও শনাক্ত হয় এ মাসে, ১১ এপ্রিল। এদিনও ৭ রোগীর মৃত্যু হয়। এ মাসে মৃত্যুশূন্য ছিল দুই দিন, ২ এপ্রিল ও ১৪ এপ্রিল।
এছাড়া, এবার চারদিনে করোনা রোগী এক হাজার পূর্ণ হয়েছে। পরীক্ষার জন্য কম নমুনা জমা হওয়ায় কম আক্রান্ত শনাক্তের কারণে এবার অপেক্ষাকৃত বেশি সময় নিয়ে এক হাজার পূর্ণ হলো। তবে সংক্রমণের হার না কমে বরং এ সময়ে বেড়েছে। এর আগে, দুই দিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে মোট আক্রান্ত ৪৬ হাজার ছাড়িয়ে যায় ১৪ এপ্রিল। তিনদিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে ১২ এপ্রিল জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৫ হাজার ২৯১ জনে। এর আগে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪ হাজার অতিক্রম করেছিল ৯ এপ্রিল। এদিন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫২৩ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এ সময়ে মারা যান ৫ করোনা রোগী। সংক্রমণের হার ১৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এ নিয়ে পরপর পাঁচবার তিনদিনে করোনা রোগীর হাজারপূর্ন হলো। ৪৩ হাজার পার হয় ৭ এপ্রিল ও ৪২ হাজার অতিক্রম করে ৫ এপ্রিল। ২ এপ্রিল ৪০ থেকে ৪১ হাজারে যেতেও সময় লাগে ৩ দিন। ফলে সর্বশেষ পাঁচবার দ্রুততম সময়ে এক হাজার পূর্ণ হলো। অথচ, ৪০ হাজার পূর্ণ হয়েছিল ৩১ মার্চ, পাঁচ দিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে। ৩৯ হাজার ছাড়িয়েছিল ২৬ মার্চ, তাও পাঁচ দিনে। এর আগে ৩৮ হাজার পূর্ণ হয় ২২ মার্চ, ছয় দিনে। ৩৭ হাজার পূর্ণ হয় ১৭ মার্চ, ৭ দিনে। ৩৬ হাজার পূর্ণ হয় ১০ মার্চ, ১০ দিন সময় নিয়ে। এর আগে ১ মার্চ ৩৫ হাজার পূর্ণ হয়। সে সময় এক হাজার পূর্ণ হতে ১৪ দিন লেগেছিল। ১৬ ফেব্রুয়ারি ৩৪ হাজার অতিক্রম করার সময় ১ হাজার পূর্ণ হয় ১৫ দিনে। ৩১ জানুয়ারি ১৬ দিনে ১ হাজার পূর্ণ হয়ে ৩৩ হাজার অতিক্রম করে, যা গত কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ে হাজার পূর্ণ হওয়ার কাল।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ২৩০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে শহরের ৪২ ও গ্রামের ১৮টি পজিটিভ পাওয়া যায়। ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে ২১৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে গ্রামের ৩ জনসহ ৪৫ জনের দেহে জীবাণু থাকার প্রমাণ মিলে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ১৬৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে গ্রামের ৮ জনসহ ৫২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে ৫৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে গ্রামের ১টিসহ ৩৯টিতে করোনার জীবাণু পাওয়া যায়।
নগরীর বেসরকারি তিন ল্যাবরেটরি মধ্যে শেভরনে ২২৬, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১৮৮ এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ৫০ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়। শেভরনে গ্রামের ৯ জনসহ ২৭ জন, ইম্পেরিয়ালে গ্রামের ৩ জনসহ ৫১ জন ও মা-শিশুতে গ্রামের ২ জনসহ ১৯ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার প্রমাণ মিলেছে।
তবে এদিন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়নি এবং কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের কোনো নমুনা পাঠানো হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে চবি’তে ২৬ দশমিক ০৮ শতাংশ, বিআইটিআইডি’তে ২১ দশমিক ১২, চমেকে ৩১ দশমিক ৯০, আরটিআরএলে ৫৭ দশমিক ৩৫, শেভরনে ১১ দশমিক ৯৪, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ২৭ দশমিক ১৩ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৩৮ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৪৯ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত।

ফ্রেঞ্চ ওপেনে খেলার ঘোষণা দিলেন ফেদেরার