ভিতরে

চট্টগ্রামে ৩৬৭ জন করোনায় আক্রান্ত

চট্টগ্রামে ১১ দিন পর করোনায় মৃত্যুশূন্য দিন কাটলো। এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৬৭ জন নতুন পজিটিভ শনাক্ত হলেও সংক্রমণ হার ২৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ। একই দিনে দ্রুততম সময়ে হাজার পূর্ণ হয়ে জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা ৪৬ হাজার পার হয়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদনে দেখা যায়, গতকাল বুধবার নগরীর ছয়টি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ১ হাজার ৪৪২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ৩৬৭ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৯৩ জন এবং নয় উপজেলার ৭৪ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারীতে ২১ জন, পটিয়ায় ১৭ জন, রাউজানে ১৩ জন করে, বোয়ালখালীতে ১০ জন, সীতাকুন্ডে ৫ জন, চন্দনাইশে ৪ জন, ফটিকছড়িতে ২ জন এবং সন্দ্বীপ ও সাতকানিয়ায় ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় মোট সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৪৬ হাজার ৭৫ জনে। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৩৬ হাজার ৯৪৪ জন ও গ্রামের ৯ হাজার ১৩১ জন।
গতকাল চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত কেউ মারা যাননি। ফলে মৃতের সংখ্যা ৪৩৭ জনই রয়েছে। এতে শহরের ৩২১ জন ও গ্রামের ১১৬ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন ৯১ জন। মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৩৫ হাজার ৪৩ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৪ হাজার ৭৭৩ জন এবং হোম আইসোলেশেনে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৩০ হাজার ২৭০ জন। হোম আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ২৫ জন ও ছাড়পত্র নেন ২০ জন। বর্তমানে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ১ হাজার ৩৬৪ জন।
উল্লেখ্য, গতকালসহ এ মাসে দু’দিন করোনায় আক্রান্ত কারো মৃত্যু হয়নি। অবশিষ্ট ১২ দিনে ৪৮ জন মৃত্যুবরণ করেন। করোনাভাইরাসে জেলায় এ পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ ৯ জন মারা যান ১০ এপ্রিল। এছাড়া, করোনাকালের সর্বোচ্চ ৫৪১ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয় ১১ এপ্রিল। এদিন ৭ রোগীরও মৃত্যু হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় কম নমুনা পরীক্ষায় কম রোগী শনাক্ত হলেও সংক্রমণ হার অনেক বেড়েছে, পরীক্ষিত নমুনার এক-চতুর্থাংশের বেশি। এছাড়া, এবার মাত্র দু’দিনে করোনা রোগী এক হাজার পূর্ণ হয়েছে। তিনদিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে ১২ এপ্রিল জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৫ হাজার ২৯১ জনে। এর আগে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪ হাজার অতিক্রম করেছিল ৯ এপ্রিল। এদিন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫২৩ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এ সময়ে মারা যান ৫ করোনা রোগী। সংক্রমণের হার ১৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এ নিয়ে পরপর পাঁচবার তিনদিনে করোনা রোগীর হাজারপূর্তি হলো। ৪৩ হাজার পার হয় ৭ এপ্রিল ও ৪২ হাজার অতিক্রম করে ৫ এপ্রিল। ২ এপ্রিল ৪০ থেকে ৪১ হাজারে যেতেও সময় লাগে ৩ দিন। ফলে সর্বশেষ পাঁচবার দ্রুততম সময়ে এক হাজার পূর্ণ হলো। অথচ, ৪০ হাজার পূর্ণ হয়েছিল ৩১ মার্চ, পাঁচ দিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে। ৩৯ হাজার ছাড়িয়েছিল ২৬ মার্চ, তাও পাঁচ দিনে। এর আগে ৩৮ হাজার পূর্ণ হয় ২২ মার্চ, ছয় দিনে। ৩৭ হাজার পূর্ণ হয় ১৭ মার্চ, ৭ দিনে। ৩৬ হাজার পূর্ণ হয় ১০ মার্চ, ১০ দিন সময় নিয়ে। এর আগে ১ মার্চ ৩৫ হাজার পূর্ণ হয়। সে সময় এক হাজার পূর্ণ হতে ১৪ দিন লেগেছিল। ১৬ ফেব্রুয়ারি ৩৪ হাজার অতিক্রম করার সময় ১ হাজার পূর্ণ হয় ১৫ দিনে। ৩১ জানুয়ারি ১৬ দিনে ১ হাজার পূর্ণ হয়ে ৩৩ হাজার অতিক্রম করে, যা গত কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ে হাজার পূর্ণ হওয়ার কাল।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে। এখানে ৬৮৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ৯ জনসহ ৮৩ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ২৫১ জনের নমুনায় গ্রামের ৮ জনসহ ৯৩ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস থাকার প্রমাণ মিলে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৭০ জনের মধ্যে শহরের ৪১ ও গ্রামের ৩৩ জন আক্রান্ত হন। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১০৫টি নমুনায় শহরের ১৯ ও গ্রামের ২১টিতে করোনার জীবাণুর অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
নগরীর বেসরকারি তিন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১৮৯টি নমুনা পরীক্ষা করে গ্রামের ৩টিসহ ৫৬টি এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ৩৮নমুনায় শহরের ২১টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। চট্টগ্রামের ৪টি নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠিয়ে পরীক্ষা করা হলে সবক’টিরই নেগেটিভ রেজাল্ট আসে।
এদিন জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিও বেসরকারি ল্যাবরেটরি শেভরনে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ১২ দশমিক ১১, চমেকে ৩৭ দশমিক ০৫ শতাংশ, চবি’তে ৪৩ দশমিক ৫৩, সিভাসু’তে ৩৮ দশমিক ০৯, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ২৯ দশমিক ৬৩ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৫৫ দশমিক ২৬ এবং কক্সবাজার মেডিকেলে ০ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

সুপ্রিমকোর্টে আবদুল মতিন খসরুর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত

আবদুল মতিন খসরুর প্রতি স্পিকারের শ্রদ্ধা নিবেদন