ভিতরে

দিনাজপুরের গাছে-গাছে বাতাসে দোল খাচ্ছে আমের মুকুল : বাম্পার ফলন সম্ভাবনা

ধানের জেলা দিনাজপুরে লিচু চাষের পাশাপাশি আম চাষে ধুম পড়েছে। গাছে-গাছে বাতাসে দোল খাচ্ছে আমের মুকুল। আমের গাছগলো মুকুলে ভরে গেছে। আম গাছে মুকুলের পরিচর্যা করছে বাগান মালিক ও আম চাষীরা। উপচে পড়া মুকুলের সমারোহ দেখে এবার আমের বাম্পার ফলনের আশা করছে আম বাগান মালিক ও আম ব্যবসায়ীরা। তবে কৃষিবিদরা বলছেন,আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন সম্ভাবনা রয়েছে।
দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো তৌহিদুল ইসলাম জানান, চলতি বছর এই মৌসুমে আম বাগানগুলোতে গাছে থোকা থোকা মুকুল আগমনই বলে দিচ্ছে এ জেলায় এবার আমের ভালো ফলন হবে। তাই দিনাজপুরের আম চাষীরা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন আম গাছের পরিচর্যায়। বাগান মালিকরা ভালো আমের ফলন পাওয়ার আশায় অনেকে ছত্রাক নাশক ও কীটনাশক স্প্রে করছে আম গাছে। লাভ জনক ফল হওয়ায় অনেকে ধান ও অন্যান্য ফসলের জমিতে আম গাছ লাগিয়েছে।
কৃষি অধিদপ্তরের সুত্রটি জানায়, দিনাজপুর ১৩টি উপজেলায় এ বছর ৪ হাজার ৭৬২ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। জেলায় প্রায় ২০/২৫ প্রজাতির আম চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে গোপালভোগ, সূর্যাপূরী, আম্রপালী, ল্যাংড়া, ফজলি, বউভূলানী, আসিনিয়া, ছাতাপড়া, চিনি ফজলী, সুরমাই, মিশ্রী ভোগ কালাপাহাড়ী, গুটি, মধুচুষি, খিরশাপাতি উল্লেখযোগ্য।
প্রতি মৌসুমে এ জেলার আম বিক্রি থেকে অর্জিত হয় গড়ে ৪৫ থেকে ৫০ কোটি টাকা।
আমের মুকুলের মৌ মৌ ঘ্রাণে ভরে উঠেছে দিনাজপুর জেলঅল গ্রামাঞ্চলের সর্বত্র। আর কয়েকদিন পরেই এসব আমের মুকুল থেকে আসবে থোকায় থোকায় আম মুকুল। আমের মুকুল রক্ষা ও রোগ বালাই থেকে মুক্ত রাখতে নিয়মিত আম চাষীদের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জানান, প্রকৃতি এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবার দিনাজপুরে আমের ফলন হবে বাম্পার।
এবার জেলার সদর, বিরল, কাহারোল, চিরিরবন্দর বোচাগঞ্জ, বীরগঞ্জ, পার্বতীপুর এলাকার আম বাগানগুলোতে উপচে পড়া মুকুলের সমারোহ। আম বিক্রি করে আর্থিক ভাবে লাভবান হবার স্বপ্ন দেখছেন আম বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। আগাম বিক্রি হয়েছে কিছু আম বাগান। তবে অনেক বাগান মালিক ভালো দামের আশায় অপেক্ষা করছেন। আমের ভালো ফলন এবং রং ঠিক রাখার জন্য এখন থেকে গাছের গোড়ায় নিয়মিত সেচের মাধ্যমে পানি দিচ্ছেন। মুকুল থেকে গুটি শুরু হওয়ায় ভিটামিন রিপকট ¯েপ্র করা হচ্ছে বলে বাগান মালিকরা জানিয়েছেন। দিনাজপুর সদর উপজেলার উত্তর গোবিন্দপুর গ্রামের আম বাগান মালিক রহমত আলী জানান, তার সাড়ে একরে ২টি বাগান রয়েছে। একটি ২ একর অপরটি দেড় একর। ২ একর বাগানটি ৩ বছরের জন্য সাড়ে ৫ লাখ টাকায় আগাম পাইকারীদের নিকট আমের ফল বিক্রি করে দিয়েছেন। কিশোরগঞ্জ জেলার ব্যবসায়ী গোলাম হোসেন বাগানটির ফল কিনে নিয়ে পরিচর্যা করছেন। অন্য দেড় একরে বাগানটি তিনি নিজের হাতে রেখেছেন। নিজে বাগানের পরিচর্যা করছেন। একই কথা বললেন, বিরল উপজেলার ধুকুরঝাড়ী গ্রামের আম বাগানের মালিক হরেকৃষ্ণ বম্মন। তিনি বলেন, তার আড়াই একরের একটি বাগান রয়েছে, বাগানটি ২ বছরের জন্য ৫ লাখ টাকায় নরসিংদী জেলার আম ব্যবসায়ী রাম বাবু কিনে নিয়েছেন। এভাবে জেলার অনেক এলাকায় আগাম আমের বাগান আম ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন।
ধানের জেলা দিনাজপুরে এবার লিচুর পাশাপাশি আমের পর্যাপ্ত মুকুল এসেছে। আম গাছ পরিচর্যায় কৃষি বিভাগের সহযোগিতা এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার আমে বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষিবিদরা।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

কাওমীসহ সব মাদ্রাসা বন্ধের নির্দেশ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা ভাইরাস সংক্রমনের ঝুঁকি রোধে সড়ক প্রচার