ভিতরে

ট্রান্সজেন্ডার ফুডম্যান নিলো পাঠাও

স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপনের ঐতিহাসিক মুহূর্তে ৫০ ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিকে ডেলিভারিম্যান হিসেবে নিয়োগ দিলো পাঠাও ফুড। নিয়োগ দেওয়ার আগে পাঠাও কর্তৃপক্ষ তাদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ ও ওয়ার্কশপেরও ব্যবস্থা করে। মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় পাঠাও। 

রাজধানীর গুলশানে বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ পার্কে পাঠাও ও এপেক্সের আয়োজনে  ‘স্বাধীনতা সবারই’ নামে বিশেষ অনুষ্ঠানে সৌজন্যে উপহার হিসেবে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় আইডি কার্ড, টিশার্ট, স্মার্ট ফোন, ফুড ব্যাগ ও বাইসাইকেল। আয়োজকদের বিশ্বাস, চাকরির এই সুযোগ স্বাধীনতার ৫০তম বর্ষে দেশকে কর্মঠ কিছু মানুষ উপহার দেবে যারা ফুডম্যান হিসেবে সম্মানজনক আয়ের মাধ্যমে নিজেদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবেন।

পাঠাও কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বাস করে এই ৫০ জন ফুডম্যান  তাদের যৌন দৃষ্টিভঙ্গি বা লিঙ্গ দ্বারা পরিচিত নন। তাদের পরিচয় প্রকাশ পাবে কাজে। দেশের নাগরিক ও মানুষ হিসেবে তাদের প্রতি সমাজেরও  দায়বদ্ধতা রয়েছে। পাঠাও এর স্লোগান ‘মুভিং বাংলাদেশ’  শুধু কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। স্বাধীনতার চেতনা ও সমতায় তাদের রয়েছে পূর্ণ আস্থা। শুধু ট্রান্সজেন্ডার নয়, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন যে কোনও মানুষ যদি যোগ্য হয় পাঠাও তাদের কর্মসংস্থানে পূর্ণ সহযোগিতা দেবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র  মো. আতিকুল ইসলাম, এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, পাঠাও এর প্রেসিডেন্ট ফাহিম আহমেদ, ডিরেক্টর মার্কেটিং ও পিআর সৈয়দা নাবিলা মাহবুব,  ‘ট্রান্সএন্ড’ এর সিইও লামিয়া তানজীন তানহা, ট্রান্সজেন্ডার অ্যাক্টিভিস্ট শোভা সরকার, মিতু প্রমুখ।

ডিএনসিসি’র মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ‘সবাই মিলে সবার ঢাকা, সুস্থ সচল আধুনিক ঢাকা’ এই স্লোগানের আদলে পাঠাও ও এপেক্স এর উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, উত্তর সিটি করপোরেশন ট্রান্সজেন্ডারদের পাশে ছিল, রয়েছে ও ভবিষ্যতে তাদের দক্ষতা উন্নয়ন ও কাজের সংস্থানে  পূর্ণ সহযোগিতা দেবে।

আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আমরা পাচ্ছি অভিনন্দন ও প্রশংসা। কিন্তু এই অগ্রগতির সঙ্গে প্রয়োজন মানসিকতার পরিবর্তন। আমি পাঠাওকে সাধুবাদ জানাই এমন একটি আয়োজন করার জন্য এবং ৫০ জন ট্রান্সজেন্ডার আয়ের সুব্যবস্থা করার জন্য। আপনাদের সঙ্গেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।’

পাঠাও প্রেসিডেন্ট ফাহিম আহমেদ, ‘আমি মনে করি দেশের ৫০তম স্বাধীনতা উদযাপনের সঠিক উপায় হলো, দেশের নাগরিকদের জন্য কিছু করা ও দেশকে এগিয়ে নিতে অবদান রাখতে সচেষ্ট হওয়া। এই ইতিবাচক পরিবর্তনের সঙ্গী হিসেবে আমাদের মতাদর্শের সঙ্গে যায় এমন কিছু করার সুযোগ পেয়ে আমরা আনন্দিত। আমরা এগিয়ে গেলেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।’

এপেক্স এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, ‘ক্ষমতায়ন হচ্ছে এগিয়ে যাওয়ার মূলমন্ত্র। একটি সমাজ তখনই সমৃদ্ধ হতে পারে যখন প্রত্যেক ব্যক্তি বর্ণ, লিঙ্গ, নির্বিশেষে স্বীকৃত ও ক্ষমতায়িত হতে পারে। চলুন দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাই এবং মানুষকে তার প্রাপ্য সম্মানটুকু দিতে শিখি। আমরা সবাই মানুষ, সবারই একটা গল্প আছে। আর প্রত্যেকের গল্পই গুরুত্বপূর্ণ। আত্মার কোনও লিঙ্গ হয় না । প্রকৃত সাহস হচ্ছে অন্যকে অনুকরণ না করে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস রাখা এবং তা কাজের মধ্যে ফুটিয়ে তোলা।’

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

উচ্চ আদালতের কার্যক্রম ৫-১১ এপ্রিল পর্যন্ত সীমিত পরিসরে চলবে

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ধর্মব্যবসায়ীদের মুখোশ খুলে গেছে : সেতুমন্ত্রী