ভিতরে

কুমিল্লায় সোনালি ফসলে হাসবে পাঁচ হাজার কৃষকের জমি

জেলার বুড়িচং উপজেলার পয়াতের জলার ১২ হাজার একর জমিতে এবার ফসলের চাষ হবে। এ জমি গুলো ২০ বছর ধরে জলাবদ্ধতার কারণে অনাবাদি ছিলো। সম্প্রতি ওই এলাকায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) উদ্যোগে খাল খনন করা হয়েছে। এতে এসব অনাবাদি জমিতে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ফসল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। উপকৃত হবে পাঁচ হাজার কৃষক পরিবার। পরিবার গুলোতে সুদিনের আশায় খুশির আমেজ বইছে।
সূত্রমতে,কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার সদর, বাকশীমুল, ষোলনল ও রাজাপুর ইউনিয়নের একটি বিশাল অংশ নিয়ে পয়াতের জলা। জলাবদ্ধতা সেই এলাকার কৃষি ও কৃষকের জন্য বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। অবৈধ দখল ও বিভিন্ন অংশে অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণের কারণে ঘুংঘুর ও পাগলী নদীর শাখা খালসমুহের অস্তিত্ব প্রায় বিলীন হওয়ার পথে। এ কারণে পয়াতের জলার ১২ হাজার একর আবাদি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। যার প্রত্যক্ষ ভুক্তভোগী ৫০০০ এর অধিক কৃষক পরিবার। পয়াতের জলার কৃষকগণ রোপা-আমন ধান লাগাতে পারেন না। আবার কিছু কৃষক বোরো ধান আবাদ করলেও আগাম বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের কারণে তা ঘরে তুলতে পারেন না। চলতি বছরের শুরুতে মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে জলার চারপাশের খালের ২৫ কি.মি. খাল পুনঃখনন কাজ করা হচ্ছে। ১৫ কি.মি. এর বেশি খাল পুনঃখননের কাজ শেষ হয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, যেখানে খাল কাটা হয়েছে সেখানের পাশের মাঠে সবুজ ফসল বাতাসে দোল খাচ্ছে। ফসলের মাঠে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও বকের ঝাঁক উড়ে বেড়াচ্ছে। মাঠের পাশে হাঁসের দল খেলা করছে। খালে স্থানীয়রা মাছ ধরছে। খাল কাটা হওয়ায় খুশি এলাকার কৃষকরা। অন্যদিকে যেখানে খাল কাটার বাকী সেখানে জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
স্থানীয় হরিপুর গ্রামের গিয়াস উদ্দিন মাস্টার বাসসকে বলেন, দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতার কারণে পয়াতের জলা সংশ্লিষ্ট জমিতে একদিকে জোঁকের উপদ্রব বেড়েছে। অপরদিকে আগাছা জন্মে তা চারণভূমিতে পরিণত হয়েছে। খাল খননে মানুষের মুখে হাসি ফুটবে।
খাড়াইতাইয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ উদ্দিন বাসসকে জানান, পয়াতের জলার আশেপাশের ছোট বড় আরও প্রায় ১০ কি.মি. খাল পুনঃখনন করতে হবে। এছাড়া কৃষকের উৎপাদিত ফসল পরিবহনের জন্য খননকৃত খালের পাড়ে ছোট ও মাঝারি আকারের ব্রিজ নির্মাণের দাবি করছি।
ক্ষুদ্র সেচ বুড়িচং ইউনিটের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মানিক মিয়া বাসসকে বলেন, এ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করি। মানুষের দুর্ভোগ নিজ চোখে দেখেছি। এখন খাল খনন হওয়ায় মানুষ উপকৃত হয়েছে। মানুষের খুশি দেখে ভালো লাগছে।
বিএডিসি‘র কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী আলাল উদ্দিন বলেন, এখানের মাঠে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ফসল উৎপাদন হবে। কিছু জমিতে তিন ফসলও উৎপাদন হবে।
প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বাসসকে বলেন, কৃষি বান্ধব সরকারের প্রধানমন্ত্রী দেশের কৃষি ও কৃষকের স্বার্থে বিভিন্ন যুগান্তকারী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। বৈশ্বিক মহামারী করোনার মধ্যেও দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে সারাবিশ্বে প্রশংসা কুড়াচ্ছেন। তার অংশ হিসেবে মুজিব শতবর্ষে কুমিল্লার বুড়িচংয়ে ১২ হাজার একর জমি চাষের উপযোগী করা হচ্ছে।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

হাইডেলবার্গ বঙ্গবন্ধু চেয়ার এ মনোনীত হলেন ড. হারুন-অর-রশিদ

বোলসোনারোর নতুন টালমাটাল পরিস্থিতিতে ব্রাজিলের সামরিক প্রধানদের প্রস্থান