ভিতরে

দেশজুড়ে বাড়ছে সূর্যমুখীর আবাদ : রাঙ্গামাটির পাহাড়ে সূর্যমুখী চাষে সাফল্য

হলুদ রঙের নান্দনিক একটি ফুল সূর্যমুখী। দেখতে সূর্যের মত এবং সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে, তাই ফুলকে সূর্যমুখী বলে। সূর্যমুখী থেকে তৈরি তেলও পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ। বিশ্বেজুড়েই সূর্যমুখী তেলের চাহিদা এখন ব্যাপক। আমাদের দেশেও ক্রমশ চাহিদা বৃদ্ধির কারণে বিভিন্ন জেলায় বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখীর চাষ শুরু হয়েছে। পুষ্টিবিদদের মতে, সূর্যমুখীর তেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা খুবই কম এবং হৃদরোগীদের জন্য বেশ কার্যকর। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ডি এবং ই। এই তেল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
বাসস জেলা প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে সূর্যমুখী চাষের চিত্রটুকু তুলে ধরার প্রয়াসে ‘দেশজুড়ে বাড়ছে সূর্যমুখীর আবাদ’ শীর্ষক ধারাবাহিক প্রতিবেদন তুলে ধরা হচ্ছে। আজ থাকছে রাঙ্গামাটি জেলায় সূর্যমুখী চাষের চিত্র-
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে পরীক্ষামূলক সূর্ষমুখী চাষ সফল হয়েছে উপজেলার মগবান এলাকার চাষী ¯েœহাংশু চাকমা। ¯েœহাংশু চাকমা জানান, সূর্ষমূখী চাষ সম্পর্কে তিনি প্রথমে গুগলসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদ নিয়ে বিভিন্ন ধারণা গ্রহণ করেন।
পরে সূর্যমুখী চাষ নিয়ে তিনি বাঘাইছড়ি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা কুন্তল রায়ের সহায়তা ও পরামর্শ নিয়ে ৩০ শতাংশ পতিত জমিকে চাষোপযোগী করে তৈরী করে সেখানে পরীক্ষামূলকভাবে সূর্যমুখী চাষ করেন। পরীক্ষামূলক সূর্যমুখী চাষে তিনি সফল হওয়াতে আগামীতে আরো ব্যাপকভাবে সূর্যমুখী চাষ করবেন বলে জানান স্নেহাংশু চাকমা।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভগের গবেষণা ও পরামর্শক্রমে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় সূর্যমুখী এ চাষ পরীক্ষামূলক ভাবে প্রথম বাঘাইছড়িতে শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ।
সূর্যমুখী চাষে সফল চাষী স্নেহাংশু চাকমা আরো জানান, আমরা আগে এখানে সরিষার চাষ করতাম। তবে সূর্যমুখী চাষের সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত জেনে আমি এর চাষ শুরু করেছি। সূর্যমূখী চাষের সফলতা ও সম্ভাবনার কথা কৃষক জানতে পারলে পাহাড়ে এর চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশা স্নেহাংশুর।
এ বিষয়ে বাঘাইছড়ি মগবান ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা কুন্তল রায় জানান, এখানকার কৃষক স্নেহাংশু চাকমা পরীক্ষামূলকভাবে সূর্যমুখী চাষের বিষয়ে আমাদের সহায়তা চাইলে বিষয়টি আমি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে অবহিত করি এবং তাকে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পক্ষ থেকে পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করা হয়।
তিনি জানান, স্নেহাংশু চাকমার পরীক্ষামূলক সূর্যমুখী চাষে বেশ ভালোই সূর্যমুখী চাষ হয়েছে এবং বাঘাইছড়ি উপজেলায় এই প্রথমবারের মত পরীক্ষামূলকভাবে সূর্ষমূখী চাষ হয়েছে। পাহাড়ের পতিত জমিতে সূর্যমুখী চাষের ব্যাপকতা বাড়াতে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানান তিনি। তিনি আরো জানান, সূর্যমুখী চাষের পর কৃষকের সুবিধার্থে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সূর্যমুখী ক্রয় করে নেয়া হবে। কৃষি কর্মকর্তা জানান, পাহাড়ে প্রতি হেক্টর জমিতে প্রায় দেড় টন সূর্যমুখী উৎপাদন করা সম্ভব।
বাঘাইছড়িতে পরীক্ষামূলকভাবে সূর্যমুখী চাষের সফলতা নিয়ে বাঘাইছড়ি রুপকারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শ্যামল চাকমা বলেন, সূর্ষমূখী চাষ এ উপজেলাতে এই প্রথম দেখতে পেলাম আমরা। সূর্যমূখী বাগানটি দেখতে এখন প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে কৃষকসহ অন্যান্য লোকজন ছুটে আসছে। তিনি জানান, সূর্যমুখী বাগানটি আমি ও দেখেছি এবং এর সম্ভবনাকে কাজে লাগাতে আমরা কৃষকদের সূর্যমুখী চাষে উৎসাহিত করছি।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার আয়োজনে হ্যান্ডবল টুর্নামেন্টে।

ঝিনাইদহে কৃষকদের মধ্যে ভতুর্কি মুল্যে রিপার ও কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন হস্তান্তর