ভিতরে

শরীয়তপুরে পিপি হত্যা মামলায় রায়ে ৬ জনের ফাঁসি ও ৪ জনের যাবজ্জীবন

দীর্ঘ ২০ বছর পর শরীয়তপুরে চাঞ্চল্যকর আওয়ামী লীগ নেতা ও শরীয়তপুর জজকোর্টের পিপি এড. হাবিবুর রহমান ও তার ছোট ভাই মনির হোসেন হত্যা মামলার রায় রোববার দুপুরে ঘোষণা করা হয়েছে। রায়ে ৬ জনের ফাঁসি, ৪ জনের যাবজ্জীবন ও ৩ জনকে ২ বছর করে সশ্রম কারাদন্ডাদেশ ও ৩৯ জন আসামীকে বেকসুর খালাসের আদেশ দেয়া হয়েছে।
রায় প্রদান করেন শরীয়তপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. শওকত হোসাইন।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী ২০০১ সালের ৫ অক্টোবর শরীয়তপুর জজকোর্টের সরকারি কৌশলী (পিপি) ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. হাবিবুর রহমান ও তার ভাই মনির হোসেনকে আওয়ামী লীগের সভা চলাকালে নিজ বাসায় প্রকাশ্য দিবালোকে গুলী করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত হাবিবুর রহমানের স্ত্রী জিন্নাত হাবিব বাদী হয়ে তৎকালীন শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রায়ত কে এম হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গকে প্রধান আসামী করে এবং আরো ৫৪ জনকে আসামী করে পালং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে ১নং আসামীসহ কয়েকজনের নাম বাদ দিয়ে ২০০৩ সালে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।মামলার বাদী নিহত পিপির স্ত্রী জিন্নাত হাবিব অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে নারাজি দেন। নিম্ম আদালত নারজি না-মঞ্জুর করে। পরে উচ্চ আদালতে নারাজি মঞ্জুর করে। পুলিশ তদন্ত করে পুনরায় ৫৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এরপর আসামী পক্ষ ওই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিভিশন করে মামলাটির কার্যক্রম বিলম্বিত করে। এরই মধ্যে আসামী কেএম হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গ ও শাহজাহান মাঝি মৃত্যুবরণ করেন। কিছুদিন পূর্বে এ মামলার বাদী জিন্নাত হাবীবও মৃত্যুবরণ করেন। দীর্ঘ ২০ বছর গত ১৭ সেপ্টেম্বর মামলার প্রত্যক্ষ সাক্ষী নিহত পিপি হাবিবুর রহমান ও বাদীনির বড় ছেলে প্রত্যক্ষ সাক্ষী এড. পারভেজ রহমান জন এর সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্যদিয়ে কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়। এ মামলায় ২৮জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তিতর্ক শেষ করে। ওইদিন ২৬ জন আসামীকে আদালত জেল হাজতে প্রেরণ করে। এ মামলায় ৬ জন আসামী শাহিন কোতোয়াল, শহীদ কোতোয়াল, শফিক কোতোয়াল, শহীদ তালুকদার, মজিবুর রহমান তালুকদার ও সলেমান সরদারকে মৃত্যুদন্ডাদেশের রায় দেয়া হয়। রায়ে মামলার আসামী সরোয়ার হোসেন বাবুল তালুকদার, বাবুল খান, ডাবলু তালুকদার ও রশিদকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডাদেশ প্রদান করে। এ মামলায় মন্টু তালুকদার, আসলাম সরদার ও জাকির হোসেন মজনু সরদারকে ২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। মামলায় ১জন আসামী মৃত্যুবরণ করায় বাকি ৩৯ জন আসামী নির্দোষ প্রমাণ হওয়ায় বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়। এ মামলায় মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী শহীদ তালুকদার, যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত বাবুল তালুকদার ও ২ বছর কারাদন্ড প্রাপ্ত মজনু সরদার পলাতক রয়েছে। রায়ের দিন সকাল থেকে কড়া পুলিশ প্রহরায় ছিল আদালত প্রাঙ্গন। এ মামলার আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন এড. মাসুদুর রহমান এবং সরকার পক্ষে ছিলেন সরকারি কৌশলী (পিপি) এড. মীর্জা হজরত আলী ।
সরকারি কৌশলী এড. মীর্জা হজরত আলী রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, মামলায় বাদীপক্ষ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আমরা ন্যায় বিচার পেতে উচ্চ আদালতে আপীল করবো।
আসামী পক্ষের আইনজীবী এড. মাসুদুর রহমান বলেন, মামলায় আসামীরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আসামীদের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

পাপিয়া দম্পতির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন আগামী ২৫ মে

সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় বেদখলে থাকা বনভূমি পুনরুদ্ধারে সফল হবে সরকার : পরিবেশ মন্ত্রী