ভিতরে

অবৈধভাবে বিদেশি কর্মী নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা ও কর সুবিধা বাতিলের প্রস্তাব

বিপুল সংখ্যক বিদেশি নাগরিক অবৈধভাবে বিভিন্ন শিল্প ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে উল্লেখ করে হিসাববিদদের সংগঠন দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) জানিয়েছে এ ধরনের কর্মীদের বেতন-ভাতা বাবদ বিপুল অর্থ পরিশোধ করা হলেও তাদের আয়ের উপর সরকার কর পায় না। বরং দেশ থেকে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অবৈধভাবে পাচার হচ্ছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া বিদেশি নাগরিকদের নিয়োগকৃত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমানসহ কর সংক্রান্ত সুবিধা ও বন্ড সুবিধা বাতিলের সুপারিশ করেছে সংগঠনটি।
রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবন সভাকক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রাকবাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এসব সুপারিশ করেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সভায় সভাপতিত্ব করেন।
আইসিএবি সভাপতি মাহমুদ উল হাসান খসরু বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই বিদেশী নাগরিক নিয়োগ করছে। তাদেরকে সুনির্দিষ্ট পরিমাণ জরিমানা আরোপ, কর সংক্রান্ত সুবিধাসমূহ হ্রাস ও বিদ্যমান বন্ড সুবিধা সম্পূর্ণরুপে বাতিলের সুপারিশ করেন তিনি। একইসাথে বিজনেস ভিসায় আগত বিদেশি নাগরিকদের এনবিআরকে কঠোর নজরদারিতে রাখার প্রস্তাব তুলে ধরেন।
পারমানেন্ট স্ট্যাবলিশমেন্ট (পিই) এর সংজ্ঞায় নতুন বিধান সংশোধনের প্রস্তাব দিয়ে মাহমুদ উল হাসান খসরু বলেন, দ্বৈত কর চুক্তি অনুযায়ী কোন প্রকল্প বাস্তবায়নকাল ১৮৩ দিনের বেশি চললে ওই বিদেশি প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশে অবস্থানের পিই হয়ে যায। দেখা গেছে, পিই বিষয়টি এড়ানোর জন্য বিদেশি প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের কর্মীদের স্বল্প সময়ের জন্য পালাক্রমে বাংলাদেশে প্রেরণ করে। যাতে কোন কর্মীর বাংলাদেশে এককভাবে অবস্থান কাল ১৮৩ দিনের বেশি না হয়। এভাবে বিদেশি কর্মী নিযোগকারী প্রতিষ্ঠান কর ফাঁকি দিচ্ছে।
তিনি কর ফাঁকি রোধে পিই এর সংজ্ঞায় বিদেশি কর্মীদের অবস্থানকালের বিষয়টিতে সংশোধনী আনার প্রস্তাব করেন।
আইসিএবি আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য আয়কর সংক্রান্ত ৪৪, ভ্যাট ২১ ও কাস্টমস সংক্রান্ত ৫টি প্রস্তাব করেছে।
আইসিএবি প্রেসিডেন্ট বলেন, বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ প্রদানে আগামী বাজেট এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যেন সহজে ব্যবসা করার সূচকের আরও উন্নতি হয়। তিনি ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ফোন কোম্পানি ও তামাক উৎপাদনকারী কোম্পানি ছাড়া পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত ও অতালিকাভূক্ত সকল কোম্পানির জন্য করপোরেট করহার ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করেন।
সংগঠনটির দাবি করপোরেট করহার হ্রাস করলে বাংলাদেশি কোম্পানিসমূহ অধিকতর প্রতিযোগিতা সক্ষম হবে। এতে করে দেশের অর্থনীতি বিকাশের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করা সহজ হবে।
বর্তমানে অতালিকাভূক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে করপোরেট করহার ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং তালিকাভূক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ।
আইসিএবির পক্ষ থেকে মূল্য সংযোজন করের (মূসক) ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নিবন্ধন গ্রহণ ও কর পরিশোধের বিদ্যমান ব্যবস্থা সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়।
রোববার আইসিএবি ছাড়াও, ইনস্টিটিউট অব কস্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট একাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি), সি এন্ড এফ, ফ্রেইট ফরওয়ার্ডিং, কর আইনজীবী সমিতি এবং ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যালস, কম্পিউটার, আইসিটি ও টেলিযোগাযোগখাতের উদ্যোক্তারা প্রাকবাজেট আলোচনায় অংশ নেয়।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

বইমেলায় আজ নতুন বই এসেছে ৮১টি

এভারটনকে হারিয়ে এফএ কাপের সেমিফাইনাল ম্যান সিটি