ভিতরে

দেশজুড়ে বাড়ছে সূর্যমুখীর আবাদ : সূর্যমুখী চাষের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে সাতক্ষীরার চাষীরা

হলুদ রঙের নান্দনিক একটি ফুল সূর্যমুখী। দেখতে সূর্যের মত এবং সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে, তাই ফুলকে সূর্যমুখী বলে। সূর্যমুখী থেকে তৈরি তেলও পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ। বিশ্বেজুড়েই সূর্যমুখী তেলের চাহিদা এখন ব্যাপক। আমাদের দেশেও ক্রমশ চাহিদা বৃদ্ধির কারণে বিভিন্ন জেলায় বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখীর চাষ শুরু হয়েছে।
পুষ্টিবিদদের মতে, সূর্যমুখীর তেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা খুবই কম এবং হৃদরোগীদের জন্য বেশ কার্যকর। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ডি এবং ই। এই তেল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
বাসস জেলা প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে সূর্যমুখী চাষের চিত্রটুকু তুলে ধরার প্রয়াসে ‘দেশজুড়ে বাড়ছে সূর্যমুখীর আবাদ’ শীর্ষক ধারাবাহিক প্রতিবেদন তুলে ধরা হচ্ছে। আজ থাকছে সাতক্ষীরা জেলায় সূর্যমুখী চাষের চিত্র-
সাতক্ষীরায় সূর্যমুখী চাষ কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। মানুষ সচেতন হচ্ছে। বাড়ছে সূর্যমুখী তেলের চাহিদা।
সাতক্ষীরা কৃষি বিভাগের যুগ্ম পরিচালক নুরুল ইসলাম জানান, সূর্যমুখী চাষ কয়েক বছর আগে জেলার কৃষকদের কাছে অপরিচিত ছিল। কিন্তু কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের তৎপরতার কারণে চাষীরা সূর্যমুখী চাষের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে সাতক্ষীরায় শুধুমাত্র কালিগঞ্জ উপজেলায় ১ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ৪ হেক্টর জমিতে, কলারোয়া উপজেলায় ১ হেক্টর জমিতে, তালা উপজেলায় ১ হেক্টর জমিতে, দেবহাটা উপজেলায় ৩ হেক্টর জমিতে, কালিগঞ্জ উপজেলায় ৫ হেক্টর জমিতে, আশাশুনি উপজেলায় ১ হেক্টর জমিতে ও শ্যামনগর উপজেলায় ৫ হেক্টর জমিতে মোট ২০ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছিল। পক্ষান্তরে, ২০২০-২১ অর্থবছরে বিভিন্ন উপজেলায় সূর্যমুখী চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয় ২০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু অর্জিত সাফল্য ৬০ হেক্টর জমিতে। সদর উপজেলায় ৪ হেক্টর ভূমিতে লক্ষ্যমাত্রার স্থলে চূড়ান্ত (অর্জিত) হয় ১১ হেক্টর ভূমিতে। কলারোয়া উপজেলায় ১ হেক্টর ভূমিতে লক্ষ্যমাত্রার পরিবর্তে ২২ হেক্টর ভূমিতে চূড়ান্ত (অর্জিত) হয়। দেবহাটা উপজেলায় সূর্যমুখী চাষের জন্য শূন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত থাকে। কিন্তু অর্জিত (চূড়ান্ত) সাফল্য হয় ৩ হেক্টর জমিতে। আশাশুনি উপজেলায় শূন্য লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও অর্জিত (চূড়ান্ত) হয় ৫ হেক্টর জমিতে। শ্যামনগর উপজেলায় সূর্যমুখী চাষে শূন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়। কিন্তু ৫ হেক্টর ভূমিতে সাফল্য চূড়ান্ত হয়।
তিনি আরও জানান, সূর্যমুখী চাষে জমি প্রস্তুত, বীজ রোপন, কীটনাশক ওষুধ সরবরাহ, ফসল কর্তন ইত্যাদি বাবদ প্রতি বিঘায় ব্যয় হয় ১০-১২ হাজার টাকা। পক্ষান্তরে, প্রতি বিঘায় কৃষকরা উৎপাদিত ফসল ১৫-২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। সরকার চলতি অর্থবছরে সূর্যমুখী চাষে রাজস্ব ফলোআপ দিয়েছেন ৯০ বিঘা জমি বাবদ ৮৮ হাজার ২০০ টাকা। পুনর্বাসন কর্মসূচিতে ২০০ বিঘা জমিতে নেয়া হয়েছে ২ লাখ ৮০ হাজার ৮০০ টাকার পরিকল্পনা। আর সরকার চলতি অর্থবছরে ৫০০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ বাবদ ৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা চাষীদের মাঝে দিয়েছেন প্রণোদনা। অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত চলে সূর্যমুখী চাষের মৌসুম। জেলা ও উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সূর্যমুখী চাষের ব্যাপারে কয়েকটি প্রর্দশনী করেছেন, চালাচ্ছেন চাষীদের মাঝে মোটিভেশন। সূর্যমুখী চাষকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে তারা আন্তরিকভাবে কাজ করে চলেছেন।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

রাজাপাকসে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী

শাল্লার ঘটনা ষড়যন্ত্রের অংশ, বিএনপির উচিত অপরাজনীতি পরিহার করা : ড. হাছান মাহমুদ