নিউজিল্যান্ডকে হারানোর সেরা সুযোগ বাংলাদেশের : ডোমিঙ্গো

আসন্ন তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডকে হারাতে দলের কাছ থেকে সেরা পারফরমেন্স প্রত্যাশী বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো বলেন, ‘এই দলের পক্ষে এমন কিছু করার সুযোগ রয়েছে যা আগে কোনও বাংলাদেশ দল করেনি।’
ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি অব ওটাগোতে আগামী ২০ মার্চ থেকে শুরু হবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।
অতীতের পরিসংখ্যান বলছে, নিউজিল্যান্ডের মাটি বাংলাদেশের জন্য আলোকিত নয়। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এ পর্যন্ত কোন জয়ই পায়নি টাইগাররা। ২৬টি ম্যাচ খেলে এখনো জয়হীন টাইগাররা। ১৩টি ওয়ানডে, ৯টি টেস্ট ও ৪টি টি-টুয়েন্টিতে হারে বাংলাদেশ। তারপরও এবারের সিরিজ নিয়ে আশাবাদি ডোমিঙ্গো।
আজ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রেরিত এেক ভিডিও বার্তায় ডোমিঙ্গো বলেন, ‘আমাদের পক্ষে এমন কিছু করার একটি দুর্দান্ত সুযোগ, যা এর আগে বাংলাদেশের কোন দল করেনি। এ বিষয়ে আমরা সকলেই উচ্ছ্বসিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ দলের সাথে এটিই আমার প্রথম নিউজিল্যান্ড সফর। আমি এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে এখানে এসেছিলাম। আমি জানি সফরের জন্য এটি খুবই কঠিন জায়গা। তবে কয়েকজন তরুণ খেলোয়াড়ের জন্য এটি দারুন সুযোগ। তিন বছর দূরে একটি বিশ্বকাপ রয়েছে এবং বিশ্বের সেরা একটি দল নিউজিল্যান্ড। আপনি যদি ভারতে কোনও ইভেন্টের সাফল্য পেতে চান, তবে এ ধরনের সিরিজে ভালো পারফরম্যান্স করতে হবে।’
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কোন জয় নেই বাংলাদেশের। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ হিসেবে ২০১৪ ও ২০১৭ সালে দু’টি সফরে জিতেছিলেন ডোমিঙ্গো। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদেরকে হারানোর অভিজ্ঞতা ও ধারনা রয়েছে তার।
এই মূর্হুতে বিশ্বের সেরা তিন খেলোয়াড়ের মধ্যে থাকা নিয়মিত অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ও রস টেইলর না থাকায় শক্তি কমেছে নিউজিল্যান্ডের।
উইলিয়ামসন-টেইলরের অনুপস্থিতি নিজ দলের জন্য ইতিবাচক বলে স্বীকার করেছেন ডোমিঙ্গো। তবে নিউজিল্যান্ডের তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে সতর্ক তিনি। যারা নিজেদের কন্ডিশনে জ্বলে উঠতে পারেন।
ডোমিঙ্গো বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য উৎসাহের, প্রথম ম্যাচে তারা দু’জনই থাকছেন না। কিন্তু আমরা জানি, নতুন খেলোয়াড়রা সব সময় নিজেদের সুযোগ কাজে লাগাতে চায়, তাই ভালো করতে তারা অনুপ্রাণিত হবে।’
ওয়ানডে ফরম্যাটে কয়েক বছর ধরেই শক্তিশালী দল বাংলাদেশ। যা নিউজিল্যান্ডকে হারাতে সাহস দিচ্ছে ডোমিঙ্গোকে। গেল জানুয়ারিতে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। অবশ্য টেস্টে সিরিজে হোয়াইটওয়াশও হয় তারা।
গেল বছরের মার্চ থেকে ওয়ানডে ম্যাচ খেলেনি নিউজিল্যান্ড। ডোমিঙ্গো জানান, ওয়ানডেতে শক্তিশালী দল বাংলাদেশ। ভালো একটি পেস বোলিং অ্যাটাক রয়েছে। যা নিউজিল্যান্ডকে চমকে দিতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এই মূর্হুতে ৫০ ওভারের ফরম্যাটে আমরা শক্তিশালী। গত বিশ্বকাপে এবং খেলোয়াড়দের পারফরমেন্স বিবেচনায় ওয়ানডে ক্রিকেটে আমরা বেশ ভালো অবস্থায় আছি।’
ডোমিঙ্গো বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমাদের বেশ কিছু ভাল মানের তরুণ পেস বোলার আছে, যাদের নিউজিল্যান্ড এর আগে দেখেনি। সম্ভবত তারা দেখার আশাও করছিলো না। আমরা কিছু সম্ভাবনাময়ী বোলার পেয়েছি, যেমন- হাসান মাহমুদ এবং তাসকিন আহমেদের মতো দুর্দান্ত বোলিং। আমাদের কিছু পেসার নিয়ে আমরা বেশ উচ্ছ্বসিত।’
নিউজিল্যান্ডে কোয়ারেন্টাইন চলাকালীন খেলোয়াড়দের সাথে কাজ করতে পেরে সন্তুষ্ট ডোমিঙ্গো। নিউজিল্যান্ডে আসার পরে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে ছিলো বাংলাদেশ। এরমধ্যে সাত দিন রুমে আইসোলেশন ছিলো।
তিনি বলেন, ‘এটি ভালো হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন বা লকডাউন আপনাকে বাইরে বের করার আগে প্রস্তুত করতে সহায়তা করে। আমি মনে করি, সূচি অনুযায়ী তিনদিন পরই আমাদের প্রথম ওয়ানডে, তার আগে ক্রাইস্টচার্চের লকডাউনের পুনঃনির্ধারণ হয়েছে, যা আমাদের জন্য খুব ভাল হয়েছিল। পরবর্তীতে আমরা ক্রাইস্টচার্চে বেশ কয়েকটি ব্যক্তিগত অনুশীলন সেশন করেছি। কুইন্সটাউনে আমরা ভালো একটি সপ্তাহ পার করেছি। প্রস্তুতি ভালো হয়েছে।’
ডোমিঙ্গো মনে করেন, ইউনিভার্সিটি ওভালে হাই-স্কোরিং ম্যাচ হবে এবং সকালে পিচের ময়েশ্চার সুবিধা কাজে লাগিয়ে বোলাররাও সুবিধা নিতে পারবে।
তিনি বলেন, ‘আমি ঘরোয়া ক্রিকেট দেখেছি। আমার মনে হয় এই ভেন্যুতে গড় ব্যাটিং ৩০৭ রান। আমি মনে করি, এখানে বাউন্ডারির পাশ কিছুটা ছোট, ৬৫ মিটার। আমরা কিছু ভালো রানের আশা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘১১ টায় শুরু হলে, বলাটা মুশকিল। সকালে কিছুটা ময়েশ্চার থাকবে, প্রথম ঘন্টায় কি হয়, তা দেখাটা দারুন হবে।’