ভিতরে

বঙ্গবন্ধু ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে সারা জীবন উৎসর্গ করেছেন : মোমেন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন আজ বলেছেন, অর্থনৈতিক বৈষম্য ও অবিচার বন্ধ এবং একটি সমতা ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধু তার সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন। ‘১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবুর রহমান ওরফে খোকার জন্ম… কেউ কল্পনাও করতে পারেনি যে এই ছেলেটি একজন কিংবদন্তী ব্যক্তিত্ব, ‘জনগণের নায়ক’ এবং বাঙালি জাতির রক্ষাকর্তা হয়ে উঠবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘বঙ্গবন্ধু: বাংলাদেশের আত্মা’ শীর্ষক চতুর্থ বঙ্গবন্ধু বক্তৃতা সিরিজে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছিলেন।
এই মার্চ মাসকে বিশেষ ও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ চিহ্নিত করে মোমেন বলেন, ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সারা দেশ দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিরল উৎসব পালন করবে।
মোমেন বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার ‘সবার প্রতি বন্ধুত্ব, কারো প্রতি বিদ্বেষ নয়’ বঙ্গবন্ধুর এই নীতি অব্যাহত রেখেছে।
তিনি আরও বলেন, এই নীতি এখনো বর্তমান বাংলাদেশের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, জাতীয় স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি শান্তি ও সম্প্রীত বজায় রাখার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়কে পথ দেখানোর জন্য।’ শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বে শোষিত ও নিপীড়িত মানুষের অধিকার সম্পর্কেও বঙ্গবন্ধুর প্রচেষ্টকে তুলে ধরেন মোমেন।
১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের প্রথম ভাষণ সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, ফিলিস্তিনের ন্যায্য আশা-আকাঙ্খাকে অস্বীকার করার বিরুদ্ধে এবং ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় হত্যা বন্ধে দ্ব্যর্থহীন বক্তব্য রেখেছেন।
জাতির পিতার স্বপ্নের কথা উল্লেখ করে মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন জাতিরাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেননি, বরং স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে বাঙালি জাতির শতাব্দী প্রাচীন স্বপ্নও পূরণ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর কারিশমা এবং আইকনিক নেতৃত্বের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আগে ও পরে আসা অনেক রাজনৈতিক নেতা বাঙালি জাতিকে অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করেছিলেন। তবে বঙ্গবন্ধুর মতো কেউ বাঙালিদের জাগিয়ে তুলতে বা সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারেনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের কথা স্মরণ করেন যেখানে শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামের কথা বলেন এবং জনগণকে একটি সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান, যা ছিল অহিংস ও শান্তিপূর্ণ। মোমেন উল্লেখ করেছেন যে, মহাত্মা গান্ধীর মত বঙ্গবন্ধু কখনও সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সহিংসতার আশ্রয় নেয়নি।
তিনি বলেন, সারা জীবন তিনি তার সকল রাজনৈতিক প্রচারণা ও তার সকল রাজনৈতিক আন্দোলনে শান্তিপূর্ণ আইনি প্রক্রিয়ার পথ বেছে নেন এবং ২৩ বছরের পাকিস্তানী শাসনকালে তার ব্যক্তিগত স্বাচ্ছন্দ্য উৎসর্গ করে ১৩ বছরেরও বেশি সময় কারাগারে কাটান।
মোমেন বলেন, পিতার (বঙ্গবন্ধু) আদর্শকে ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই দশকেরও বেশি সময় আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম মেয়াদ চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি চুক্তি সম্পন্ন করেন। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা মিয়ানমার থেকে ১১ লাখ অসহায় ও নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে ‘মানবতার মাতা’ হয়েছেন- যা মানবতা ও সহানুভূতির এক অনন্য উদাহরণ।
মোমেন বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তিতে অবদান রাখছে এবং গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে শীর্ষ সেনা- প্রেরণকারী দেশ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
বক্তৃতা অধিবেশনে জাতিসংঘের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বান কি মুন প্রধান বক্তা ছিলেন এবং তিনি জাতির পিতার সাথে তার অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুর দর্শন ও লক্ষ্য তুলে ধরেন।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নিউ ইয়র্কে মুক্তধারার কর্মসূচি

যারাই ইতিহাসকে বিকৃত করতে চেয়েছে, তারাই মুছে গেছে : তথ্যমন্ত্রী