ভিতরে

করোনায় হাত ধোয়া ও মাস্ক পরায় ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে

মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার একদম প্রাথমিক উপায় হচ্ছে বার বার হাত ধোয়া ও মাস্ক ব্যবহার। এতে যে করোনা হবেনা তার কোন নিশ্চয়তা নেই। তবে গবেষনায় দেখা গেছে, অন্তত ৬৫ শতাংশ সংক্রমণ কমানো সম্ভব। করোনাভাইরাস প্রথম ধরা পড়ে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান প্রদেশে। পর্যায়ক্রমে ভাইরাসটি বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। মূলত: এখন পর্যন্ত মরণঘাতি এ ভাইরাসটির কোন নিশ্চীত প্রতিষেধক আবিস্কার হয়নি। সেকারণে বিশ্ববাসী এটি থেকে বাঁচতে প্রতিরোধের ওপরই বেশি জোর দিচ্ছে। দেশে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রথম থেকেই এ ভাইরাস থেকে বাঁচতে হাত ধোয়া ও মাস্ক পরার ওপর বেশি জোর দিয়েছে সরকার। শুরু থেকেই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি বেশি বেশি হাত ধোয়া ও মাস্ক পরার বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে দেশের সকল গণমাধ্যমে ব্যপক প্রচার প্রচারনা চালিয়েছে সরকার। কেবল গণমাধ্যম নয়, সরকারের বিভিন্ন বিভাগের সাথে সামাজিক সংগঠনগুলোও এগিয়ে এসেছে জনসতেনতায়। এমনিভাবেই কেটে গেছে ২০২০ সাল। নতুন বছরে বিশ্বে করোনার বেশ কয়েকটি টিক্ াব্যবহার শুরু হয়েছে। বিশ্বের উন্নত অনেক দেশ না পারলেও বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যেই করোনার টিকা সংগ্রহ করেছে এবং প্রায় ৫০ লাখ মানুষকে টিকা দিয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি দেখা গেছে টিকা গ্রহনের পরও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন কেউ কেউ। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত ‘পারফেক্ট’ কোন ওষুধ কিংবা ভ্যাকসিন আবিস্কার হয়নি। বর্তমানে বিশ্বে বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিন বিভিন্ন দেশ জরুরী ভিত্তিতে অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু হাত ধোয়া ও মাস্ক পরার গুরুত্ব এতুটকু কমেনি। চিকিৎসকদের মতে নিয়মিত হাত ধোয়া ও মাস্ক পরলে ৬৫ শতাংশ করোনা রোধ করা যায়। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাস্ক পরা বাধ্যতামুলক করতে কঠোর অবস্থানের কথা বার বার ব্যক্ত করেছেন। যার প্রেক্ষিতে মাস্ক পরা ও হাত ধোয়া বলতে গেলে একটা সামাজিক আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। হাত ধোয়া ও মাস্ক পরায় এগিয়ে রয়েছে দেশের তরুণ সমাজ। দেশের অর্ধেকেরও বেশি কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণী কোভিড-১৯ থেকে নিজকে রক্ষায় যথেষ্ঠ জ্ঞান রাখেন এবং এ ক্ষেত্রে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা এগিয়ে। কোভিড-১৯ থেকে রক্ষা পেতে তারা সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড হাত ধোয়া, মাস্ক পরা এবং হাঁচি কাশি দেয়ার সময় নাক-মুখ ঢেকে রাখাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। দেশের ৮টি বিভাগের ১০ থেকে ২৫ বছর বয়সী ৬৭৫ জন কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীর ওপর পরিচালিত এক সমীক্ষায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের সহযোগিতায় প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ(পিআইবি) আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এ তথ্য জানানো হয়। ইউএসএআইডি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ‘ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন’ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন‘মিটিং দ্য আন্ডার নিউট্রেশন চ্যালেঞ্জ প্রকল্প’ গত বছরের মে মাসে‘বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর পরিপ্রেক্ষিতে তরুণদের পুষ্টি সচেতনতা, আচরণ এবং খাদ্য নিরাপত্তা’ বিষয়ে একটি র‌্যাপিড সমীক্ষা চালায়।
সমীক্ষার ফলাফল তুলে ধরে প্রকল্পের প্লানিং এন্ড কোর্ডিনেশন বিশেষজ্ঞ প্রজ্ঞায়ন বেহেরা এবং পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ভামি বোরা বলেন, কোভিড ১৯ এর কারণে ৭২ দশমিক ৭ শতাংশ পরিবারের আয় কমেছে এবং বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে যেসব পরিবারের আয় ১ লাখ টাকার কম। সমীক্ষায় অংশ নেয়া কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীদের ৬৫ দশমিক ২ শতাংশ জানিয়েছে স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে তারা গৃহে কিংবা গৃহের বাইরে শরীর চর্চা করেছে, যার মধ্যে রয়েছে দৌঁড়. স্ট্রেচিং ও ইয়োগা। উত্তরদাতাদের ৪৫ শতাংশ ৭ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুমিয়েছে। ৫৫ শতাংশ ঘুমিয়েছে ৭ ঘন্টার কম।
মাস্ক পরা ও হাত ধোয়ার ক্ষেত্রে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের এগিয়ে থাকার বিষয়ে ডা: নাসিমা সুলতানা বলেন,‘স্বাভাবিকভাবেই ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা একটু বেশি সচেতন। বেশি সময় বাসা বাড়িতে থাকার কারণে গণমাধ্যমে প্রচারিত বিভিন্ন সচেতনতা মুলক অনুষ্ঠান ও বিজ্ঞাপন দেখে তারা বেশি উদ্বুদ্ধ হয়। তাছাড়া শরীর চর্চার বিষয়েও মেয়েরা বেশি সচেতন।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু আর না

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস-২০২১ উপলক্ষে সেমিনার ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত।