ভিতরে

দুই বছরের মধ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে পুঁজিবাজারে : বিএসইসি চেয়ারম্যান

দেশের পুঁজিবাজারে দুই বছরের মধ্য বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে দৃঢ় আশা ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘ভালো অর্থনীতি বলতে বোঝায়, যেখানে অর্থনীতি সঠিক পারফর্ম করতে পারে, ক্যাপিটাল মার্কেট যেখানে সঠিক হতে পারে, যেখানে স্টক এক্সচেঞ্জে বন্ড ট্রেড করা যায়, কমোডিটি মার্কেট নিয়ে কাজ করা যায়। এসএমই মার্কেট নিয়ে কাজ করা যায়। সেই ইকোনমিকে আমরা হেলদি ইকোনোমি বা ম্যাচিউড বলতে পারি। আমরা সত্যিকার অর্থে ওই অবস্থানে এখনো যেতে পারিনি, তবে আমরা ওই পথেই এগুচ্ছি। আমরা আশা করি আগামী দুই বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে অনেক বড় পরিবর্তন দেখা যাবে।
শনিবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘ইআরএফ ডায়ালগ অন বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমি’ সংলাপে তিনি একথা বলেন। রাজধানীর পল্টন টাওয়ার ইআরএফ কার্যালয়ে সংলাপটি অনুষ্ঠিত হয়।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, শ্যালো ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমরা পৃথিবীতে যত বড় বড় ফাইন্যান্সিয়াল হাব বা বানিজ্যিক কেন্দ্র রয়েছে আমরা সেখানে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে আমরা দুবাইয়ে গিয়েছি। সেখান থেকে ভালো রেসপন্স পেয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি এখানে বড় ধরনের বিদেশি বিনিয়োগ আসবে। এই কোয়ার্টার এবং সামনের কোয়ার্টারে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো ভালো করছে। ফান্ডগুলো ডিভিডেন্ড দিতে শুরু করেছে। বিনিয়োগকারীরা ডিভিডেন্ড পেলে তাদের বিশ্বাস এবং আস্থা আসবে। এতে করে এই খাত ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি তখন মার্কেট সাইজ ছিল সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকা, এটা এখন ৫ লাখ কোটি টাকার আশেপাশে আছে। আশা করছি এটা আরো বাড়বে।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, প্রত্যেক রেগুলেটরের নিজস্ব কিছু দায়-দায়িত্ব আছে। সে দায়িত্ব অনুযায়ী তাদের কাজ করতে হয়। আমাদেরও কিছু দায়-দায়িত্ব আছে। যার মধ্যে থেকে আমাদের কাজ করতে হয়। যেমন কোন কোম্পানি তালিকাভূক্ত হবে, কিভাবে লভ্যাংশ দেবে, কিভাবে এজিএম করবে, এসব বিষয় দেখভাল করা আমাদের দায়িত্ব। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আগামী ১৫ মার্চ আমরা আলোচনা করব, যাতে সমন্বিতভাবে কাজ করতে পারি। আমরা চাই কোন রেগুলেটরি সিদ্ধান্ত কারো অসুবিধার কারণ না হয়ে দাঁড়ায়।
ইনসাইডার ট্রেডিং সম্পর্কে তিনি বলেন, কেউ ইনসাইডার ট্রেডিং করার চেষ্টা করলে, সঙ্গে সঙ্গে সফটওয়্যারে সেটি ধরা পড়ে যাচ্ছে। তাদের ডেকে সর্তক করা হচ্ছে,অনেক সময় বিও একাউন্ট বন্ধ করা হচ্ছে, একই সঙ্গে জরিমানাও করছি। তবে এগুলো ভেতরে ভেতরে করছি। যাতে করে কোনভাবেই প্যানিক সৃষ্টি না হয়। এটি একটি সংবেদনশীল মার্কেট। আমাদের জবাবদিহিতার কোন ঘাটতি নেই। তবে আমরা আশা করবো সংবাদমাধ্যম কোন কিছু যাচাই না করে প্রতিবেদন করবে না।
ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হচ্ছে না এমন প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক শিবলী বলেন, বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকা বর্হিভূত কোম্পানির করের ব্যবধান মাত্র সাড়ে সাত শতাংশ। এই ব্যবধান কমপক্ষে ১৫ শতাংশ হতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে আগামী বাজেটে এই দুই খাতে করের ব্যবধান ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাবনা করা হয়েছে। তা না হলে ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে আগ্রহী হবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, আমাদের বাজেটের আকার ৫ লাখ কোটি টাকা, আমাদের বার্ষিক অর্থনীতির আকার সাড়ে ৩০০ বিলিয়ন ডলার। অথচ প্রতিবছর আমাদের মাত্র এক থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা আইপিও’র মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। এটা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। দেশের শিল্পায়ন হতে হলে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। সেজন্য আমাদের বন্ড মার্কেটের দিকে বেশি নজর দিতে হবে। পাশাপাশি ভালো ভালো কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে হবে।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পুঁজিবাজার এখন অনেক বেশি আধুনিকায়ন হয়েছে। ফলে এখন আর আগের মতো কারসাজির সুযোগ নেই। ফলে ১৯৯৬ কিংবা ২০১০ সালের মতো বাজারে বড় পতন হবে বলে মনে করি না।
ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভীর সভাপতিত্বে সংলাপটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম।

আপনি কি মনে করেন?

0 টি পয়েন্ট
উপনোট ডাউনভোট

একটি মন্তব্য

মোংলা বন্দর ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখবে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

কাল শুরু স্বাধীনতা দিবস হ্যান্ডবল